|
|
|
|
মাথায় ভোট, ময়দানে সব দল |
অরিন্দম সাহা • কোচবিহার |
বিজ্ঞপ্তি জারি কবে হবে তা অনিশ্চিত। কোন মাসে নির্বাচন হবে সে ব্যাপারেও সরকারি ভাবে কোনও ঘোষণা এখনো হয়নি। কবে ওই ঘোষণা হবে তাও কেউ স্পষ্ট করে বলতে পারছেন না। কিন্তু চলতি বছরের শেষ দিকেই পঞ্চায়েত নির্বাচনের সম্ভবনার কথা মাথায় রেখে সংগঠন চাঙা করার পাশাপাশি ঘর গোছাতে তৎপর হয়ে উঠেছে কোচবিহারের রাজনৈতিক দলগুলি। ওই প্রস্তুতির লড়াইয়ে যুযুধান ডান-বাম দুই শিবিরের রাজনৈতিক দল সব মহলেরই তৎপরতা রীতিমতো তুঙ্গে উঠেছে। ফলে ক্রমশ সরগরম হয়ে উঠছে জেলার রাজনৈতিক বাতাবরণ। দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ডান শিবিরের তৃণমূল কংগ্রেস, “কংগ্রেস তো বটেই ঘর ঘোচাতে ময়দানে নেমে পড়েছেন জেলার বিজেপি নেতৃত্বও। অন্যদিকে বামেরাও পিছিয়ে নেই। জনসংযোগ বাড়াতে ইস্যু ভিত্তিক বাসিন্দাদের এলাকাগত সমস্যা নিয়ে আন্দোলনের কর্মসূচি নিয়েছেন তারাও।” তৃণমূল সূত্রের খবর, পঞ্চায়েত নির্বাচন কে পাখির চোখ করে এগোনোর পরিকল্পনা করেছেন তারা। জেলায় বুথ ভিত্তিক সম্মেলনও শুরু করেছে তৃণমূল। এপ্রিল মাসের মধ্যে ওই কর্মসূচি সম্পূর্ণ করার লক্ষ্যমাত্রা রেখেছেন তারা। সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে রাজ্য সরকারের জনমুখি সমস্ত কাজের জোরদার প্রচারাভিযানেরও। জোর দেওয়া হয়েছে দলের গোষ্ঠী কোন্দল মেটানোর ব্যাপারেও। তৃণমূল কংগ্রেসের কোচবিহার জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষ অবশ্য বলেন, “আমরা এখন থেকেই পঞ্চায়েত নির্বাচনের জন্য তৈরি হতে চাইছি। বাড়ি বাড়ি গিয়ে মানুষের সমস্যা জেনে নেওয়া, তাদের পাশে দাঁড়ানো, বাম জমানার দুর্নীতি, ব্যর্থতা সব কিছু তুলে ধরেই আমরা মানুষের কাছে সময় দেবার আবেদন জানাব। উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা পেরোলেই বুথে বুথে সভা করে এসব বলা হবে। পঞ্চায়েতের কথা মাথায় রেখে তৈরি হচ্ছে জেলা কংগ্রেসও।” কোচবিহার জেলা কংগ্রেস সভাপতি শ্যামল চৌধুরী বলেছেন, নভেম্বর-ডিসেম্বরে পঞ্চায়েত ভোট হবে বলে আমাদের ধারণা। তা ছাড়া এবার বেশ কিছু বুথের সংখ্যাও বাড়তে পারে। সে সব মাথায় রেখে আমরাও নিজেদের মতো করে প্রস্তুতি শুরু করেছি। প্রাথমিকভাবে বুথ কমিটি গুলি কে শক্তিশালী করার কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। মাথাভাঙা, কোচবিহার সদর, তুফানগঞ্জ ও মেখলিগঞ্জের বেশ কিছু এলাকায় ইতিমধ্যে ওই কাজ অনেকটা এগিয়েছে। বিজেপির তরফে আবার পঞ্চায়েতের প্রস্তুতি মাথায় রেখে ২৫ মার্চ থেকে টানা একমাস অঞ্চল ভিত্তিক বৈঠক ডাকা হয়েছে। মে মাস জুড়ে নেওয়া হয়েছে জেলার সব বিডিও অফিসে স্থানীয় মানুষের সমস্যা মেটানোর দাবিতে বিক্ষোভ কর্মসূচি। দলের রাজ্য সভাপতি রাহুল সিংহ চলতি মাসেই কোচবিহারে কর্মিসভা করতে এসে পঞ্চায়েতের রণকৌশল ব্যাখ্যা করেন। দলীয় সূত্রের খবর, রাহুলবাবু সম্ভাব্য প্রার্থী তালিকা ঠিক করা থেকে সিপিএম ও তৃণমূল দুই দলকে আক্রমণের নির্দেশ দেন। বিজেপির জেলা সম্পাদক নিখিল দে বলেন, আমাদেরও ধারণা পঞ্চায়েত ভোট এবছরের শেষেই হবে। দলের রাজ্য নেতৃত্বের নির্দেশ মেনে ওই ব্যাপারে কোচবিহারে সবরকম প্রস্তুতি চলছে। পিছিয়ে নেই বামেরাও। ফরওয়ার্ড ব্লক নেতৃত্ব জানান, ইতিমধ্যে এলাকভিত্তিক সমস্যা নিয়ে আন্দোলনের জন্য সমস্ত অঞ্চল কমিটি কে নির্দেশ পাঠিয়েছেন জেলা নেতৃত্ব। শুরু হয়েছে বুথভিত্তিক কনভেনশনও। কোচবিহারের ফরওয়ার্ড ব্লক সম্পাদক উদয়ন গুহ বলেন, “পঞ্চায়েত ভোট ডিসেম্বরের মধ্যে হবে বলে আমাদের মনে হচ্ছে। তাই নানা কর্মসূচি নিয়ে ধারাবাহিকভাবে জনসংযোগ বাড়াতে অঞ্চল কমিটিগুলিকে জোর দিতে বলা হয়েছে। সম্ভাব্য প্রার্থী তালিকা তৈরির প্রস্তুতি চলছে।” সিপিএমের অভিযোগ, যতদিন যাচ্ছে তত জনসমর্থন কমে যাচ্ছে বুঝেই পঞ্চায়েত ভোট এগিয়ে আনার চেষ্টা করছে রাজ্য সরকার। সেটা ভেবেই জেলায় জোরদার লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন তারাও। দলের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য অনন্ত রায় বলেন, “হিসেব মতো ২০১৩ সালের মে নাগাদ পঞ্চায়েত ভোট হওয়ার কথা। কিন্তু মানুষের মোহভঙ্গের ঘটনা বুঝেই নয়া সরকার তা এগিয়ে আনবে। তা ভেবেই প্রস্তুতি নিতে হচ্ছে। নির্বাচন ঘোষণা হলে আমরা লড়ার জন্য তৈরি আছি।”
বিক্ষোভের মুখে বিধায়ক। নতুন ক্লাব ঘরের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে জনতার বিক্ষোভের মুখে পড়লেন কোচবিহারের ফরওয়ার্ড ব্লক বিধায়ক অক্ষয় ঠাকুর। রবিবার কোচবিহার কোতোয়ালি থানার চিলকিরহাট এলাকায় ঘটনা ঘটেছে। ফরওয়ার্ড ব্লক নেতৃত্ব দাবি করেছেন, বিক্ষোভকারীরা সকলেই তৃণমূল কংগ্রেস কর্মী-সমর্থক। অক্ষয়বাবু বলেন, “তৃণমূলের কিছু ছেলে পরিকল্পিতভাবে অনুষ্ঠান বানচাল করার ছক কষে ছিল। অনুষ্ঠানস্থল ঘেরাও করা হয়।” |
|
|
|
|
|