সদ্যোজাতের মৃত্যুতে চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ তুলে হাসপাতালে ভাঙচুর চালালেন পরিজনেরা। রবিবার সকালে দুর্গাপুর স্টিল প্ল্যান্ট (ডিএসপি) হাসপাতালের এই ঘটনায় পুলিশ দু’জনকে আটক করেছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ অবশ্য কোনও রকম গাফিলতির অভিযোগ মানেননি।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ২১ অগস্ট রাতে হাসপাতালে ভর্তি হন মেনগেট এলাকার বাসিন্দা লিলি শর্মা। ভোরে পুত্র সন্তানের জন্ম দেন। তার পর থেকেই শিশুটিকে নিও-নেটাল কেয়ার ইউনিটে রাখা হয়েছিল। শনিবার রাতে চিকিৎসকেরা শিশুটিকে মৃত ঘোষণা করেন। এর পরেই লিলিদেবী ও তাঁর স্বামী পবন শর্মা অভিযোগ তোলেন, প্রসবের পরেই চিকিৎসক ও নার্সের হাত গলে পড়ে গিয়ে জখম হয় সদ্যোজাত। তার জেরেই শিশুটির মৃত্যু হয়েছে। রবিবার সকালে তাঁদের পরিজনেরা হাসপাতালে পৌঁছন। তাঁদের মধ্যে কয়েক জন হাসপাতালের কাচের দরজা, জানালা ভাঙচুর করেন। উল্টে দেওয়া হয় ফুলের টব। চিকিৎসক, নার্সরাও প্রহৃত হন বলে অভিযোগ। সিআইএসএফ জওয়ানেরা ছুটে যান। পৌঁছয় পুলিশও। দু’জনকে আটক করা হয়। |
ভাঙচুরের পরে। —নিজস্ব চিত্র। |
লিলিদেবীর দাবি, “জন্মের সময় পড়ে গিয়ে বাচ্চা জখম হয়। সে জন্যই তাকে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ নিওনেটাল কেয়ার ইউনিটে নিয়ে গিয়ে রাখা হয়।” পবনবাবুরও অভিযোগ, “হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের গাফিলতিতে বাচ্চার মৃত্যু হয়েছে।” হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ অবশ্য তাঁদের এমন অভিযোগ মানতে চাননি। তাঁদের দাবি, জন্মের পরে দেখা যায়, শিশুটির দেহে ‘ডাউন সিনড্রোম’-এর লক্ষণ রয়েছে। এ ক্ষেত্রে সদ্যোজাত জন্মায় শারীরিক ত্রুটি নিয়ে। ২২ অগস্ট রাতেই শিশুটির শরীর নীল হতে শুরু করে। হার্টের সমস্যা রয়েছে অনুমান করে নিও-নেটাল কেয়ার ইউনিটে পাঠানো হয়। কিন্তু শিশুটির অবস্থার অবনতি হতে শুরু করে। শিশুটিকে স্পেশালিটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হলেও তার পরিবার রাজি হয়নি বলে দাবি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের। শনিবার রাতে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে শিশুটির মৃত্যু হয়।
ডিএসপি-র ‘মেডিক্যাল অ্যান্ড হেলথ সার্ভিসেস’-এর দায়িত্বপ্রাপ্ত ডিরেক্টর উমেশ খুরানার দাবি, জন্মের পরে শিশুটির শারীরিক ত্রুটির কথা প্রসূতি ও তাঁর পরিবারকে জানানো হয়েছিল। পরে অন্যত্র স্থানান্তরের পরামর্শও দেওয়া হয়। কিন্তু শিশুটির মৃত্যুর পরে যে ভাবে হাসপাতাল ভাঙচুর করা হয়েছে তা নিন্দনীয়। তিনি বলেন, “শিশুটির ময়না-তদন্তের রিপোর্ট এলেই মৃত্যুর কারণ স্পষ্ট হয়ে যাবে। তা ছাড়া তার রক্তের নমুনা পাঠানো হচ্ছে হায়দ্রাবাদে।” |