পুকুরে কিশোরীর দেহ, সন্দেহ ধর্ষণের পরে খুন
পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ হয়েছিল ১৮ অগস্ট। তাতে বলা হয়েছিল, বিয়ের টোপ দিয়ে সহবাসের পরে ষষ্ঠ শ্রেণির এক ছাত্রীকে লোপাট করেছে এলাকারই এক যুবক। কিন্তু, পুলিশ সেই অভিযোগকে গুরুত্ব দেয়নি বলে অভিযোগ।
শেষ পর্যন্ত স্থানীয় এক বিজেপি নেতা অনুগামীদের নিয়ে থানায় বিক্ষোভ দেখানোর পরে রবিবার সকালে জলপাইগুড়ি কোতোয়ালি থানার পুলিশ বাসুদেব পাল নামে অভিযুক্ত তরুণকে গ্রেফতার করে। ধৃতকে জেরার পরে মোহিতনগরের মধ্য কুমোরপাড়ার একটি পুকুর থেকে উদ্ধার হয় জিনস-টপ পরা হাসমণি মণ্ডলের (১৬) হাত-পা বাঁধা দেহ। বছর আঠারোর ধৃত বাসুদেব ওই এলাকারই বাসিন্দা।
প্রাথমিক ভাবে পুলিশের সন্দেহ, শ্বাসরোধ করে খুনের আগে কিশোরীকে ধর্ষণ করা হয়েছে। তবে, ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেলে সব স্পষ্ট হবে। ধৃতকে জেরা করে কিছু স্পষ্ট সূত্র মিলেছে বলেও পুলিশের দাবি। এ দিন বাসুদেবকে জলপাইগুড়ি জেলা আদালতে তোলা হলে বিচারক তাকে তিন দিন পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন। জলপাইগুড়ির ডিএসপি প্রভাত চক্রবর্তী বলেন, “পুলিশের কাছে বাসুদেব খুনের কথা কবুল করেছে। তবে, এই ঘটনায় আরও কয়েক জন জড়িত। তাদের খোঁজ চলছে।”
নিহত কিশোরীর শোকার্ত পরিবার। ছবি: সন্দীপ পাল
মোহিতনগরের রামকৃষ্ণপল্লির বাসিন্দা হাসমণির বাবা ক্ষিতীশ মণ্ডল রিকশা চালক। তাঁর এক ছেলে ও এক মেয়ে। ছেলে কর্মসূত্রে ভিন্ রাজ্যে থাকেন। ১৫ অগস্ট থেকে হাসমণি নিখোঁজ। তার ঘর থেকে একটি চিঠি মেলে। চিঠিতে এলাকারই এক তরুণের সঙ্গে সে সংসার পাততে বাড়ি ছেড়ে চলে যাওয়ার লিখেছিল। চিঠিটি পাওয়ার পরে ক্ষিতীশবাবু ডেকোরেটর সংস্থার কর্মী বাসুদেবের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। ক্ষিতীশবাবু বলেন, “তখন বাসুদেব বলে, হাসমণি ভাল আছে। দু-এক দিনের মধ্যেই ফিরবে। তিন দিন পরেও বাড়ি না ফেরায় পুলিশের কাছে অভিযোগ জানাই।” পর দিনই বাসুদেব এলাকা ছেড়ে পালায় বলে অভিযোগ।
প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের সন্দেহ, ১৫ অগস্ট রাতে হাসমণিকে সম্ভবত ধর্ষণের পরে ওড়নার ফাঁস দিয়ে খুন করা হয়। পরে তার হাত-পা বেঁধে পুকুরে পুঁতে কচুরিপানা চাপা দেওয়া হয়। এ কাজ কারও একার পক্ষে সম্ভব নয় বলেই পুলিশের অনুমান।
১৮ অগস্ট অভিযোগের পরেও পুলিশ কেন বাসুদেবকে জেরা করেনি, সে প্রশ্ন উঠেছে। এলাকার প্রাক্তন পঞ্চায়েত সদস্য বাপি গোস্বামী বলেন, “পুলিশকে বারবার জানানোর পরেও কোনও ফল হয়নি। আমাদের দাবি, ঘটনার সিআইডি তদন্ত করাতে হবে।”
এ দিন মধ্য কুমোরপাড়ায় বাসুদেবের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, তাদের টিনের বাড়ির দরজা তালা বন্ধ। পড়শিরা জানান, বাড়ির সবাই চলে গিয়েছেন। সেখান থেকে রামকৃষ্ণপল্লিতে হাসমণির বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, তাঁর মা জ্যোৎস্নাদেবী ঘনঘন জ্ঞান হারাচ্ছেন। ক্ষিতীশবাবু বলেন, “আমার মেয়েকে যারা মেরেছে, তাদের শাস্তি চাই।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.