তাঁর টিম কার্যত নেহরু কাপের ফাইনালে চলে গিয়েছে, মানতে নারাজ উইম কোভারম্যান্স। বরং তাঁর সাফ কথা, “নেপালকে হারালে তবেই আমরা ফাইনালে যাব। যারা চ্যাম্পিয়ন হতে চায় তাদের সব ম্যাচ জিততে হয়। আমরা সব ম্যাচ জিততে চাই।”
বব হাউটনের সঙ্গে তাঁর স্ট্র্যাটেজি থেকে ট্যাকটিক্সপার্থক্য দেখা গেলেও একটা জায়গায় ব্রিটিশ আর ডাচ কোচের মধ্যে কোনও তফাত নেই। তা হল, কোনও মতেই সন্তুষ্ট না হওয়া। মলদ্বীপের বিরুদ্ধে জেতার পর স্টেডিয়াম থেকে বহু দূরে জেপি গ্রিন রিসর্টে সুনীল-নবিরা পৌঁছোন রাত এগারোটা নাগাদ। তার বারো ঘণ্টার মধ্যেই পুরো টিম নিয়ে মাঠে নেমে পড়েন ডাচ কোচ। হালকা অনুশীলনের পর সুইমিং পুলে পাঠিয়ে দেন পুরো টিমকে। ফুটবলারদের সতর্ক করেছেন, মিডিয়ার সঙ্গে কথা না-বলতে। কোনও সাংবাদিক ফোন করলে টিম ম্যানেজারের সঙ্গে কথা বলে নেওয়ার জন্য বলে দেন সবাইকে। কোভারম্যান্স নিজে চলে আসেন স্টেডিয়ামে। ক্যামেরুন-নেপাল ম্যাচ দেখতে। যে দুই দলের সঙ্গে রাউন্ড রবিন লিগে খেলা এখনও বাকি ভারতের। মিডিয়াকে এড়াতে সহকারী কোচ স্যাভিও মেদেইরাকে নিয়ে ভি ভি আই পি বক্সে না বসে চলে যান ওপরের গ্যালারিতে। টিম হোটেলের খবর, সুনীল-নবিদের তিনি বলেছেন, “আত্মতুষ্ট হওয়ার কারণ নেই। এখনও অনেক দূর যেতে হবে। ফাইনালে পৌঁছলে তবেই ট্রফি নিয়ে ভাবা যাবে।” রবিবার চোখ ধাঁধানো ফুটবল খেলে ক্যামেরুন ৫-০ নেপালকে বিধ্বস্ত করার পর ডাচ কোচের কপালে অবশ্য চিন্তার বলিরেখা দেখা গেল। পরিস্থিতি যে দিকে গড়াচ্ছে তাতে ভারত-ক্যামেরুন ফাইনাল হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি।
আলাদা ভাষায় নয়, সবাই একসঙ্গে হিন্দিতে কথা বলবে। সবাই একসঙ্গে ব্রেকফাস্ট থেকে ডিনার করবে। টেবিলে বসতে হবে জুনিয়রদের সঙ্গে ভাগ করে। মোবাইলের হেডফোন কানে গুজে ঘোরাঘুরি করা যাবে না। শিডিউল মেনে দেরিতে আসলে জরিমানা দিতে হবে--এ রকম অসংখ্য ফরমান জারি করলেও তিনি অবশ্য ফুটবলারদের প্রিয় হয়ে উঠেছেন। গত দু’টো নেহরু কাপে দলের সঙ্গে থাকা রহিম নবি বলছিলেন, “কোচ আমাদের সঙ্গে বন্ধুর মতো মিশছেন। একসঙ্গে খাচ্ছেন। কাউকে আলাদা গুরুত্ব দিচ্ছেন না। এতে সবার মনোবল বেড়েছে। এটা বহু দিন ছিল না আমাদের টিমে।”
নেপালের সঙ্গে ভারত শেষ মাচ খেলেছে তিন বছর আগে। মলদ্বীপে সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে। বব হাউটনের দল ৪-১ জিতেছিল ওই ম্যাচে। সেই দলের বেশির ভাগ ফুটবলার দিল্লিতে এসেছেন। বেঙ্গালুরুর হ্যালের হয়ে আই লিগ খেলা রোহিত চাঁদ খেলছেন এই টিমে। মঙ্গলবারের ম্যাচে উইনিং কম্বিনেশন ভাঙতে চাইছেন না কোভারম্যান্স। নির্মল ছেত্রীর হাঁটুতে চোট। এ দিন অনুশীলনে নামেননি। তাঁর জায়গায় ডেঞ্জিল ফ্রাঙ্কোকে তৈরি রাখলেও ডাচ কোচ বললেন, “অনেক সময় আছে। মনে হচ্ছে নির্মল সুস্থ হয়ে যাবে।”
প্রতি দিন নিয়ম করে দু’জন ফুটবলারকে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার অনুমতি দিচ্ছেন কোভারম্যান্স। এ দিন এসেছিলেন দু’টো নেহরু কাপ জেতা গৌরমাঙ্গি সিংহ এবং ফের জাতীয় দলে জায়গা করে নেওয়া মেহতাব হোসেন। গৌরমাঙ্গি বলছিলেন, “আগের দুটো নেহরু কাপে প্রথম ম্যাচ জিতিনি। এ বার জিতেছি। নতুন একটা দল তৈরি হচ্ছে সিনিয়র-জুনিয়র মিলিয়ে। কোচ যে ভাবে টিমটাকে তৈরি করার চেষ্টা করছেন তাতে কাজ হচ্ছে।” বহু বছরের সঙ্গী মহেশ গাউলি অবসর নিয়েছেন। রাজু গায়েকোয়াড়ের সঙ্গে জাতীয় দলে প্রথম বার খেলছেন। ব্যাপারটা বেশ উপভোগও করছেন গৌরমাঙ্গি, “রাজু যথেষ্ট ভাল ডিফেন্ডার। ওর সঙ্গে ক্রমশ মানিয়ে নিচ্ছি।” আর জাতীয় দলে আবার নিজের জায়গা পাকা করে নেওয়া মেহতাব হোসেন বললেন, “টিমটাকে একটা পরিবারের মতো দেখাচ্ছে। সবাই চেষ্টা করছে ট্রফি জিততে।” পাশাপাশি সুব্রত পালের প্রশংসা করলেন বারুইপুরের ছেলে। বললেন, “চোট সারিয়ে ফিরে এ রকম দুর্দান্ত খেলা! মিষ্টুর পক্ষেই সম্ভব।”
|
সোমবার কলকাতা প্রিমিয়ার লিগে |
মহমেডান : কালীঘাট (যুবভারতী, ২-৪৫)
|
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
নেহরু কাপের ফাইনালে দেখা যেতে পারে ক্যামেরুনের বিশ্বকাপার রজার মিল্লাকে। রবিবার নেপালকে ৫-০ গোলে হারানোর পরে ক্যামেরুনের কোচ ইমানুয়েল বোসোকে মেল করেন মিল্লা। ক্যামেরুন কোচ বললেন, “আমরা ফাইনালে উঠতে পারলে, মিল্লা মাঠে থাকবে বলে জানিয়েছেন।” মিল্লা এই মুহূর্তে ক্যামেরুন ফুটবলের অ্যাম্বাসাডরও। |