ওয়াংখেড়ের নায়ক গম্ভীরের ব্যাটেই
যুব বিশ্বকাপে বাজিমাত উন্মুক্তের
মাত্র ৩ রানের জন্য ওয়াংখেড়ের ফাইনালে সেঞ্চুরি হারাতে হলেও গৌতম গম্ভীরই ২০১১ বিশ্বকাপ ভারতে আসার প্রকৃত রাস্তা গড়ে দিয়েছিলেন। বছর না ঘুরতেই অনূর্ধ্ব উনিশ বিশ্বকাপ ফাইনালেও গম্ভীরের ব্যাটই ভারতের জয়ের ঠিকানা। এবং কাপ ফাইনালে গম্ভীরের ব্যাটে এল সেঞ্চুরিও।
অত্যাশ্চর্য হলেও সত্যি!
যুব বিশ্বকাপের ঠিক আগে ভারত অধিনায়ক উন্মুক্ত চন্দের ব্যাটিং ফর্ম তেমন ভাল যাচ্ছিল না। ঠিকঠাক ব্যাটে-বলে হচ্ছিল না দিল্লির টিনএজারের। সেই সময় কোচ সঞ্জয় ভরদ্বাজ (যিনি গৌতম গম্ভীরেরও কোচ) কেকেআর ক্যাপ্টেনের একটা ব্যাট দেন উন্মুক্তকে। রবিবার অস্ট্রেলিয়ায় সেই ব্যাটেই ফাইনালে সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে উন্মুক্ত ছোটদের বিশ্বকাপে ভারতকে চ্যাম্পিয়ন করল।
ফাইনাল সেরার পুরস্কার হাতে উন্মুক্ত। ছবি: পিটিআই
নিজের বাড়িতে বসে সঞ্জয় এ দিন আনন্দবাজারকে বললেন “অস্ট্রেলিয়া যাওয়ার আগে উন্মুক্ত বলল, স্যর ব্যাটটা অসুবিধে করছে। আমাকে গৌতম গম্ভীরের একটা ব্যাট দেবেন? ওর ব্যাটগুলো আমার খুব পছন্দ। সে দিনই ওকে গৌতমের একটা ব্যাট এনে দিয়েছিলাম। যার ফল তো আজ দেখতেই পাচ্ছেন।” দিল্লির ময়ূরবিহারের মেধা আবাসনে উন্মুক্তদের ফ্ল্যাটের সামনে দিনভর লোকজন ভাংড়া নেচে চলেছে। ঢোল বাজছে। স্লোগান উঠছে ‘অস্ট্রেলিয়াকো মারা হ্যায় হামারা পুত্তর।’ বাজি-পটকার বিকট আওয়াজের মধ্যেই নিমেষে উড়ে যাচ্ছে বাক্স-বাক্স লাড্ডু।
দল: দিল্লি, দিল্লি ডেয়ারডেভিলস, অনূর্ধ্ব ১৯ ভারত।
আদর্শ: সচিন তেন্ডুলকর
প্রিয় শট: স্কোয়ার কাট
এই বিশ্বকাপে
ম্যাচ-, রান-২৪৬, সর্বোচ্চ-১১১ ন.আ.,
গড়-৪৯.২, শতরান-, অর্ধশতরান-
তার মধ্যেই উন্মুক্তের বাবা ভরত চন্দ ঠাকুর বলছিলেন, “ছোটবেলা থেকেই উন্মুক্ত প্রতিভাবান ও মেধাবি। মাত্র আট বছর বয়স থেকে ও ক্রিকেটার হয়ে ওঠা শুরু করেছে। আবার পড়াশোনাতেও বরাবর ৯০ শতাংশের ওপর মার্কস পাওয়া ছাত্র।” হবে নাই বা কেন? সেন্ট স্টিফেন্স কলেজের ছাত্র উন্মুক্তের বাবা-মা দু’জনেই শিক্ষকতা করেন।
গর্বিত বাবা আরও বললেন, “এই সাফল্যের জন্য আমি ঈশ্বরের কাছে চিরকৃতজ্ঞ থাকার পাশাপাশি বিসিসিআইকে ধন্যবাদ দেব। গত দু’বছর আমার ছেলেকে বেঙ্গালুরুতে জাতীয় ক্রিকেট অ্যাকাডেমিতে অনুশীলন করার বিশেষ অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। যুব বিশ্বকাপের আগে বিশাখাপত্তনমে কোয়াড্রাঙ্গুলার সিরিজ, তার পরে জুনিয়র এশিয়া কাপ আর অস্ট্রেলিয়াতেই একটা প্রস্তুতি টুর্নামেন্টে উন্মুক্ত যেমন ভাল খেলেছিল, তেমনই ওর টিমও পারফর্ম করেছিল।”
ছেলের সম্পর্কে বলতে গিয়ে ভরত চন্দের আজ যেন কথাই ফুরোচ্ছিল না। “ওকে যখন দিল্লি পাবলিক স্কুলে ভর্তি করতে যাই, প্রিন্সিপাল বলেছিলেন, এখানে আপনার ছেলে খাপ খাওয়াতে পারবে না। এখানে বড়লোকের ছেলেরা পড়ে, গাড়ি চেপে স্কুলে আসে। তখন উন্মুক্ত সেই প্রিন্সিপাল ম্যাডাম মাথুরকে ইন্টারভিউতে বলেছিল, ম্যাডাম ওদের কাছে গাড়ি আছে। আমার কাছে মেধা আছে। শুনে সঙ্গে সঙ্গে প্রিন্সিপাল আমার ছেলেকে স্কুলে নিয়ে নেন। উন্মুক্তও ক্লাসে ফার্স্ট হয়ে জবাব দিয়েছিল।”
উন্মুক্তের কোচ বললেন, “ওর অ্যাটিটিউডটা খুব ইতিবাচক। ওকে গত বছর বলেছিলাম, যে ভাবে খেলছিস, দু’বছরের মধ্যেই দিল্লির হয়ে রঞ্জি খেলবি। ও আমাকে বলল, কেন অত দিন পর স্যর? আমি এ বছরই খেলব। আর সত্যিই, গত মরসুমেই ও রঞ্জি খেলেছে। বড় রানও করেছে। তা ছাড়া ওর মধ্যে একটা সহজাত ‘লিডারশিপ’ গুণ আছে।” এ বারের আগে ভারতের অনূর্ধ্ব উনিশ বিশ্বকাপজয়ী দলের অধিনায়ক বিরাট কোহলির কোচ রাজ কুমার শর্মা আবার বলছিলেন, “উন্মুক্তের ব্যাটিংটা ঠিক ছোটবেলার বিরাটের মতই। এই ছেলেটাও ভবিষ্যতে সিনিয়র ভারতের হয়ে খেলবে।”

টাউন্সভিলে ফাইনালের সংক্ষিপ্ত স্কোর
অস্ট্রেলিয়া অনূর্ধ্ব ১৯: ২২৫-৮ (বোসিস্টো ৮৭ ন.আ., সন্দীপ ৪-৫৪)।
ভারত অনূর্ধ্ব ১৯: ৪৭.৪ ওভারে ২২৭-৪ (উন্মুক্ত ১১১ ন.আ., স্মিত ৬২ ন.আ.)।





First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.