রান্নার গ্যাসের সংযোগ নেওয়ার সময়, ওই গ্যাসের বণ্টনকারীর কাছ থেকেই আভেন কিনতে বাধ্য নন ক্রেতা। জানিয়ে দিল প্রতিযোগিতা সংক্রান্ত আপিল ট্রাইব্যুনাল। তাই তিন রাষ্ট্রায়ত্ত এলপিজি বিপণন সংস্থা, আইওসি, এইচপিসিএল ও বিপিসিএল-এর প্রতি ট্রাইব্যুনালের নির্দেশ, সংস্থাগুলির গ্যাস বণ্টনকারীরা নতুন সংযোগ দেওয়ার সময়ে যাতে কাউকে জোর করে আভেন (গ্যাস স্টোভ) কিনতে বাধ্য না-করতে পারে, তা নিশ্চিত করতে হবে।
এতদিন ধরে কার্যত একটা অলিখিত নিয়ম মুখ বুজেই মেনে আসছেন অধিকাংশ ভারতবাসী। তেল সংস্থা আইওসি-র ইনডেন গ্যাস বা এইচপিসিএল-এর এইচপি কিংবা বিপিসিএল-এর ভারত, রান্নার গ্যাস কিনতে যেটিকেই বেছে নেওয়া হোক না কেন, আভেনও কিনতে হবে ওই গ্যাসের বণ্টনকারীর কাছ থেকে। এই একাধিপত্যের অবসান ঘটাতেই ট্রাইব্যুনালের এই নির্দেশ। রাষ্ট্রায়ত্ত তেল সংস্থাগুলি ইতিমধ্যেই ওই নির্দেশ মানতে সম্মত হয়েছে।
আমজনতার স্বার্থে জারি করা ওই নির্দেশ শোনাতে অবশ্য লেগে গেল প্রায় পাঁচ বছর। মামলা দায়ের হয়েছিল যখন বর্তমান প্রতিযোগিতা কমিশন ও আপিল ট্রাইব্যুনালের বদলে বাজারে প্রতিযোগিতার পরিবেশ কায়েম রাখতে নজরদারি চালাত এমআরটিপিসি (মোনোপলিজ অ্যান্ড রেস্ট্রিকটিভ ট্রেড প্র্যাক্টিসেস কমিশন)। সে সময়ে ৭টি সাধারণ আভেন বিক্রেতা সংস্থা অভিযোগ করে, জ্বালানির বাজারে একচ্ছত্র রাজত্বের সুবিধা নিয়ে, তিন তেল সংস্থা তাদের সংশ্লিষ্ট সহযোগীদের আভেন বেচার সুযোগ করে দিচ্ছে গ্যাস বণ্টনকারীদের মাধ্যমে। সে ক্ষেত্রে প্রথম সংযোগ নিলেই ওই বণ্টনকারীদের থেকে আভেন কিনতে বাধ্য করা হচ্ছে ক্রেতাদের। তার পর গত ২০০৭ সালেই ডিরেক্টর জেনারেল অফ ইনভেস্টিগেশন অ্যান্ড রেজিস্ট্রেশন্স (ডিজিআইআর)-কে দিয়ে তদন্ত করায় এমআরটিপিসি। এবং পরে ২০০৯-এ এক অন্তবর্তী কালীন নির্দেশে তেল সংস্থাগুলিকে লিখিত বিবৃতি দিয়ে জানাতে বলে যে, ক্রেতাদের যে কোনও দোকান থেকে আভেন কেনার স্বাধীনতা আছে। রান্নার গ্যাস বন্টনকারীদের থেকে তা কেনার দরকার নেই তাঁদের। সে ক্ষেত্রে ডিলারদের বিষয়টি ভাল করে বুঝিয়ে দিতেও বলা হয় সংস্থাগুলিকে। এমআরটিপিসি-র নির্দেশে বলা হয়েছিল, ক্রেতা যে ওই গ্যাস আভেন কিনতে বাধ্য নন, তা লিখিত ভাবে দোকানে টানিয়ে রাখতে হবে। সংযোগ দেওয়ার সময়ে তা বলেও দিতে হবে ক্রেতাকে। জারি করতে হবে প্রকাশ্য বিবৃতি। কিন্তু পরবর্তী কালে এমআরটিপিসি-র জমানা না-থাকায় বিষয়টি কার্যকর হয়নি। এ বার এমআরটিপিসি-র সেই রায়ই বলবৎ রেখে আভেনের বাজারে একাধিপত্য শেষ করার নির্দেশ দিল ট্রাইব্যুনাল। বজায় রাখতে উদ্যোগী হল ক্রেতাদের অধিকার। |