ছিনতাইয়ের ‘মহামিছিল’
সল্টলেকে প্রশ্নের মুখে পুলিশের ‘সক্রিয়তা’
ড়ে প্রতিদিন একটি করে। তার মধ্যে শনিবার তিন ঘণ্টার তফাতে পরপর চারটি ছিনতাইয়ের পরে রবিবার সন্ধ্যাতেও ফের ছিনতাই সল্টলেকে। ছিনতাইয়ের এই পরিসংখ্যানে বিধাননগরে পুলিশের ভূমিকা ফের প্রশ্নের মুখে। এর একটি ক্ষেত্রেই ছিনতাইকারী ধরা পড়েছে, তা-ও আক্রান্ত মহিলার চেষ্টায়। উল্লেখ্য, আক্রান্তেরা সবাই মহিলা।
রবিবার সন্ধ্যায় বি জে মার্কেটের বাইরে দুই মোটরবাইক-আরোহী এক মহিলার গলার হার ছিনিয়ে পালায়। পুলিশ জানায়, দেবস্মিতা জেনা নামে ওই মহিলা এ এল ব্লকের বাসিন্দা। তিনি বিধাননগর (পূবর্র্) থানায় অভিযোগ দায়ের করেন।
এ দিকে শনিবারের ঘটনায় সন্ধ্যা সাতটা নাগাদ প্রথমে বিধাননগর পূর্ব থানা এলাকার একটি আবাসনের কাছে, পরে উত্তর থানা এলাকায় একটি ব্লকের মধ্যে থেকে এবং রাত সওয়া ৯টার পরে ফের পূর্ব থানা এলাকার বি কে ব্লকে এক মহিলার বাড়ির সামনে থেকে ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। প্রতি ক্ষেত্রেই হেলমেট পরা মোটরবাইক-আরোহী মহিলাদের হার ছিনিয়ে পালায়। ওই আড়াই ঘণ্টা সময়ের মধ্যেই আবার বিধাননগর (দক্ষিণ) থানা এলাকায় ছিনতাইয়ের চেষ্টা হয়। পুলিশ জানায়, শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা থেকে আটটার মধ্যে এক মহিলা আইনজীবীর মোবাইল ছিনতাইয়ের চেষ্টা হয়। ওই মহিলা জানান, তিনি যখন সান্ধ্যভ্রমণ সেরে ফিরছিলেন, সে সময়ে তিন নম্বর সেক্টরে জি সি আইল্যান্ডের কাছে আচমকা সাইকেলে আসা এক যুবক তাঁর মোবাইল ছিনতাইয়ের চেষ্টা করে। মহিলা ওই যুবকের হাত চেপে ধরেন। ওই যুবক মহিলার গায়ে হাত তোলে। মহিলার চিৎকারে লোকজন ছুটে আসেন। তখন মহিলাকে কার্যত ধাক্কা দিয়ে পালাতে যায় ছিনতাইকারী। ওই পথেই যাচ্ছিলেন এক মোটরবাইক আরোহী। তিনিও পিছু ধাওয়া করেন। ওই আইনজীবীও যুবকটির পিছনে ছুটতে থাকেন। অনিন্দিতা আইল্যান্ডের কাছে ওই যুবককে ধরে পুলিশে দেওয়া হয়। পুলিশ জানায়, ধৃতের নাম আব্দুল হাকিম। ভাঙরে বাড়ি হলেও সে দত্তাবাদে থাকত। ওই মহিলা আইনজীবী প্রাক্তন এক মন্ত্রীর আত্মীয়। যুবকের বিরুদ্ধে ছিনতাইয়ের চেষ্টা, মহিলাকে উত্ত্যক্ত করা ও শ্লীলতাহানির অভিযোগও দায়ের করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ১৮ অগস্ট থেকে ২৬ অগস্টের মধ্যে এই নিয়ে মোট ন’টি ঘটনা ঘটল। আটটি ক্ষেত্রেই মোটরবাইক-আরোহী ছিনতাই করেছে। স্বভাবতই প্রশ্ন উঠেছে, ঢাকঢোল পিটিয়ে কমিশনারেট গঠন করে নিরাপত্তার কী উন্নতি হল? বাসিন্দাদের অভিযোগ, গ্রিন পুলিশ নিয়োগ ও কর্মী-সংখ্যা বাড়িয়ে লাভ হয়নি। নজরদারিই যদি থাকে, বা পুলিশ যদি মোতায়েন থাকে, তবে পরপর এমন ঘটছে কী করে? বাসিন্দারা, বিশেষত মহিলারা আতঙ্কিত।
বাসিন্দাদের সংগঠন ‘বিধাননগর (সল্টলেক) ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন’-এর সম্পাদক কুমারশঙ্কর সাধু বলেন, ‘‘বাসিন্দারা পুলিশের কাজ করছেন। আর পুলিশ কাজ করছে না। এই ঘটনাই তার প্রমাণ। তাঁদের কর্মদক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। আমরা আর নিরাপদ নই।” পুলিশের একাংশের অবশ্য দাবি, পরিকাঠামো বাড়ার সঙ্গে নজরদারিও বেড়েছে। আলাদা করে ব্লকে ব্লকে গ্রিন পুলিশ নিয়োগ করা হয়েছে। তাঁদের সঙ্গে অফিসারেরাও নজরদারি চালান। অথচ, ন’টি ছিনতাইয়ের অধিকাংশই কেষ্টপুর খালপাড় এলাকা সংলগ্ন ব্লক ও ব্রড অ্যাভিনিউতে হয়েছে। কয়েকটি ঘটনা ঘটেছে সকাল থেকে দুপুরের মধ্যে। শনি ও রবিবার অবশ্য ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে রাতে।
গত ১৮ অগস্ট রাতে ছিনতাইয়ের পরে পুলিশ কি সতর্ক হয়েছিল? ওই মহিলা আইনজীবী-সহ অনেকে যখন ছিনতাইকারীর পিছু ধাওয়া করছিলেন, তখন কোথায় ছিল গ্রিন বা সাধারণ পুলিশ? এই সব প্রশ্নের সুনির্দিষ্ট জবাব মেলেনি। বিধাননগরের গোয়েন্দাপ্রধান নীলু শেরপা চক্রবর্তী শুধু বলেন, “আমরা দেখছি। এর পিছনে কোনও চক্র আছে কি না, দেখা হচ্ছে।”
 
 
 


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.