বেআইনি পার্কিংয়ে লোকসান পুরসভার
হরের অন্তত ৬৬টি রাস্তায় গাড়ি পার্কিংয়ের ব্যবসা চলছে, অথচ তা থেকে পুর-কোষাগারে একটা পয়সাও জমা পড়ছে না। এমনই তথ্য মিলেছে কলকাতা পুরসভার পার্কিং দফতর থেকে। পুর-কর্তৃপক্ষ সূত্রের খবর, ওই ৬৬টি রাস্তা থেকে বছরে প্রায় ৬৫ লক্ষ টাকা আয় হত। পার্কিং দফতরের এক আধিকারিকের কথায়, “কোথায় কোথায় বেআইনি পার্কিং রয়েছে, তার একটা তালিকাও তৈরি করেছে পুর-প্রশাসন। তা সত্ত্বেও ওই ব্যবসা বন্ধ করা যায়নি।”
কিন্তু কেন? ওই আধিকারিক বলেন, “পুরসভার পার্কিং দফতরে মাত্র পাঁচ জন কর্মী। এত কম লোকে বৈধ পার্কিংগুলোই সামাল দেওয়া যায় না। বেআইনি তো দূর অস্ৎ।” পাশাপাশি, এ ব্যাপারে পুলিশকে জানিয়েও কোনও কাজ হয় না বলে অভিযোগ করেন তিনি। ওই আধিকারিকের দেওয়া তথ্য যে ঠিক, তা স্বীকার করেছেন মেয়র পারিষদ (পার্কিং) রাজীব দেবও। তবে তিনি বলেন, “বেআইনি পাকিংয়ের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পুলিশি সহায়তা দরকার। এ ব্যাপারে পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। তাদের হাতে ওই সব পার্কিং সংস্থার তালিকাও দেওয়া হয়েছে।”
সম্প্রতি পুরসভায় পার্কিং পরিস্থিতি নিয়ে একটি বৈঠক হয়। সেখানে পুর-কমিশনার খলিল আহমেদ, কলকাতা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার (ট্রাফিক) সুপ্রতিম সরকার, ডেপুটি কমিশনার (ট্রাফিক) দিলীপ আদক ও পুরসভার পার্কিং দফতরের চিফ ম্যানেজার সৌমেন মল্লিক উপস্থিত ছিলেন। ডিসি (ট্রাফিক) দিলীপ আদক বলেন, “শহরে কোনও অবৈধ পার্কিং রাখতে দেওয়া হবে না। খুব শীঘ্রই পুলিশ ওই সব পার্কিংয়ে অভিযান চালাবে।” তিনি জানান, শরৎ বসু রোডে সৌন্দর্যায়নের কাজ হচ্ছে। ওই রাস্তায় কয়েকটি বৈধ ‘ফি’ পার্কিং জোন আছে। সেগুলিও সরানোর জন্য পুর-কর্তৃপক্ষকে বলা হয়েছে।
পার্কিং দফতরের এক আধিকারিক বলেন, “রাজভবনের কাছে পুলিশের সামনেই অবৈধ ভাবে গাড়ি পার্কিংয়ের ব্যবসা চালাচ্ছে একটি সংস্থা। এ ব্যাপারে কলকাতা পুলিশের পদস্থ কর্তাদেরও জানানো হয়েছে। কিন্তু কিছু হয়নি।” এ নিয়ে ডিসি (ট্রাফিক) দিলীপবাবু বলেন, “পুরসভা বলছে, ওই সংস্থার বৈধ লাইসেন্স নেই। কিন্তু ওই সংস্থার দাবি, তাদের কাছে বৈধ কাগজপত্র আছে। তবে রাজভবনের সামনে কোনও পার্কিং জোন করা যাবে না। ওই সংস্থাকে এ কথা জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।”
পুরসভা সূত্রের খবর, দিন-রাত মিলিয়ে শহরে প্রায় ৩৫৫টি রাস্তায় বৈধ পার্কিংয়ের ব্যবস্থা রয়েছে। দরপত্রের মাধ্যমে ২৮টি সমবায় সংস্থা ওই পার্কিং জোনগুলি চালায়। ২০১১-’১২ সালে পার্কিং ফি বাবদ প্রায় ৬ কোটি ৯৩ লক্ষ টাকা আয় হয়েছে পুরসভার। মেয়র পারিষদ রাজীব দেব জানান, শহরে পার্কিংয়ে ছোট গাড়ি রাখতে ঘণ্টায় ১০ টাকা করে ভাড়া লাগে। রাতে তা বেড়ে হয় ২৫ টাকা।
পুরসভা সূত্রের খবর, তাদের নির্ধারিত ফি-র থেকে বেশি টাকা নেওয়া হচ্ছে বলে গাড়িমালিকদের কাছ থেকে প্রায়ই অভিযোগ আসে। বড়বাজার ও পার্ক স্ট্রিট এলাকায় ঘণ্টায় ১০০-১৫০ টাকা করে আদায়ের অভিযোগও উঠেছে। বিষয়টি স্বীকার করে নিয়ে রাজীববাবু বলেন, “অভিযোগ পেলে সংশ্লিষ্ট পার্কিং সংস্থার বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হয়। যে সব কর্মী গাড়িমালিকদের কাছ থেকে বাড়তি টাকা আদায় করছেন, প্রয়োজনে তাঁদের ছাঁটাই করতে বলা হয়েছে সংস্থাগুলিকে।” তিনি জানান, গাড়ি পিছু ঘণ্টায় কত টাকা ফি এবং কতগুলি গাড়ি ওই জোনে রাখা যাবে সংস্থাগুলিকে তার তালিকা বোর্ডে লিখে রাখতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কেউ এই নির্দেশ না মানলে তার লাইসেন্স বাতিল করা হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন রাজীববাবু।
 
 
 


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.