চলে গেলেন ‘শোলে’র ইমাম চাচা। দর্শকদের কাছে বলিউডের প্রবীণ অভিনেতা অবতার বিনীত কিষণ হাঙ্গল এই নামেই প্রসিদ্ধ ছিলেন। ‘শোলে’ ছাড়াও ‘শওকিন’, ‘নমক হারাম’, ‘আইনা’, ‘আঁধি’, ‘কোরা কাগজ’, ‘বাওয়ার্চি’, ‘চিতচোর’, ‘গুড্ডি’, ‘অভিমান’, ‘অনামিকা’, ‘পরিচয়’-সহ দুশো’রও বেশি ছবিতে দেখা গিয়েছে এ কে হাঙ্গলকে। আজ সকাল ন’টায় মুম্বইয়ের এক হাসপাতালে ৯৮ বছর বয়সে মৃত্যু
হল তাঁর।
পাকিস্তানের শিয়ালকোটে ১৯১৫ সালে এক কাশ্মীরি পণ্ডিত পরিবারে জন্ম হাঙ্গলের। জালিয়ানওয়ালাবাগ হত্যাকাণ্ডের বিরুদ্ধে তৎকালীন উত্তর-পশ্চিম সীমান্ত প্রদেশে যে বিক্ষোভ আন্দোলন শুরু হয়, তখনই স্বাধীনতা সংগ্রামে প্রবেশ। দেশভাগের পরেও পাকিস্তানেই থাকার কথা ভেবেছিলেন। কিন্তু বামপন্থী মতাদর্শের জন্য গ্রেফতার করা হয় হাঙ্গলকে। দু’বছর কারাবাসের পরে ভারতে যেতে বলা হয় তাঁকে। ২১ বছর বয়সে হাঙ্গল চলে আসেন মুম্বই শহরে। পকেটে ছিল মাত্র ২০ টাকা।
মুম্বইয়ে প্রথম জীবনে দরজির কাজ করতেন হাঙ্গল। সেই অনটনের দিনেও বামপন্থীদের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন হয়নি। আমৃত্যু সিপিআইয়ের সদস্য হাঙ্গল যোগ দিয়েছিলেন আইপিটিএ-তে। সাধারণ মানুষের ভূমিকায় অভিনয়ে বেশি স্বচ্ছন্দ ছিলেন। বলরাজ সাহনি এবং চেতন আনন্দ তাঁকে মঞ্চে দেখে হিন্দি ছবিতে অভিনয়ের কথা বলেন। বাসু ভট্টাচার্যের ‘তিসরি কসম’ ছবিতে ৪০ বছর বয়সে অভিনয়। যদিও দৃশ্যটা শেষ পর্যন্ত বাদ যায়। কিন্তু তার পর থেকে দাদু-বাবা-কাকা-বন্ধুর ভূমিকায় ক্রমশ পরিচিত মুখ হয়ে ওঠেন হাঙ্গল। সম্প্রতি ‘মধুবালা’ নামে একটি সিরিয়ালে অতিথি-শিল্পীর ভূমিকায় অভিনয় করছিলেন।
হাঙ্গলের মৃত্যুর খবরে অমিতাভ বচ্চন থেকে শুরু করে বলিউডের বিভিন্ন অভিনেতা-অভিনেত্রী টুইটারে শোকবার্তা জানালেও অন্ত্যেষ্টির সময় ফিল্ম-দুনিয়া থেকে তেমন চোখে পড়ার মতো কেউই ছিলেন না। ‘শোলে’-তে হাঙ্গলের জনপ্রিয় সংলাপ ছিল, ‘ইতনি সন্নাটা কিঁউ হ্যায় ভাই’ (এত নৈঃশব্দ্য কেন ভাই) সে নৈঃশব্দ্যই তাঁকে ঘিরে রইল শেষ মুহূর্তেও। |