|
|
|
|
|
চিকমিকে চাঁদের হাত |
ফুলের মতো হাত শুধু কবিতায় হয় না। ম্যানিকিয়োর করালেও সম্ভব। পার্লারের
সময় না পেলে, পরিচর্যা করুন ঘরেই।
কস্তুরী মুখোপাধ্যায় ভারভাদা |
কলেজে পড়তে একটা গল্প শুনেছিলাম। কাকার অফিসে সদ্য চাকরি পাওয়া একটি ছেলে বাসে যাতায়াতের সময় একটি মেয়ের প্রেমে পড়ে। তারা দু’জনে সিনেমা দেখতে যায়। হল অন্ধকার হতেই মেয়েটির হাতের ওপর ছেলেটি হাত রাখতেই চমকে উঠে হাত সরিয়ে নেয়। কারণ হাতটা ছিল ভীষণ খড়খড়ে। অগত্যা সেখানেই প্রেমের ইতি। কিন্তু এখন এই সব কারণে কোনও মেয়েকেই বাতিল করা যাবে না। কারণ এটা ম্যানিকিয়োর-এর জমানা। এখন হাজার কাজ করেও আপনি পেলব হাতের অধিকারিণী হতে পারেন।
বলার অপেক্ষা রাখে না যে, গৃহবধূদের ম্যানিকিয়োর-এর প্রয়োজন বেশি। সারা দিনের কাজকর্মের সঙ্গে জলের কাজও থাকে অনেকটা। এ ক্ষেত্রে শুধু হাতের সৌন্দর্যহানিই নয়, হাতের বিভিন্ন ধরনের সংক্রমণও হতে পারে। তাই বর্ষাকালে হাতের একটু বিশেষ যত্ন নিতে হবে।
ঘরোয়া পদ্ধতি
কোনও অনুষ্ঠানে যাবার আগে পার্লার-এ যাবার সময় না পেলে, প্রথমে সুন্দর মাপ করে নখ কেটে নিন। নখের আকার যেন উঁচুনিচু না থাকে। এর পর হালকা গরম জলে অল্প শ্যাম্পু দিয়ে হাত দু’টি কিছু ক্ষণ ডুবিয়ে রাখুন। এই সময়ে, অর্থাৎ হাত দু’টি যখন শ্যাম্পু-জলে থাকছে, তখন নরম কোনও ছোবড়া বা ঘষার কিছু দিয়ে আলতো ভাবে হাত দু’টি ঘষে নিন। বেশি চাপ দিয়ে ঘষবেন না। কারণ, গরম জলে ভিজে থাকার ফলে হাত দু’টি স্বভাবতই নরম থাকে, বেশি চাপ দিয়ে ঘষলে লাল হয়ে দাগ বসে যাবে। হালকা আঁচড়ও পড়তে পারে। হাত দু’টি শুকনো করে মুছে ক্রিম মাসাজ করুন। এর পর আবার হাত দু’টি শুকনো করে মুছে পছন্দের নেলপলিশ লাগিয়ে নিন। মনে রাখবেন, কোনও অনুষ্ঠানে হাতের দেখনাইয়েরও বড় ভূমিকা থাকে। করমর্দন বা নমস্কার জানানোর সময় হাত দু’টি সবার আগে নজরে আসে। সুন্দর শাড়ি, গয়নার সঙ্গে যত্নবিহীন হাত খুব একটা ভাল দেখায় না। |
|
|
নিয়মমাফিক ম্যানিকিয়োর |
সমস্ত পৃথিবীতে ফ্রেঞ্চ ম্যানিকিয়োরই বিখ্যাত। ফ্রান্সে এই ম্যানিকিয়োর পদ্ধতির জন্ম। ধীরে ধীরে সেটি গোটা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়ে। ছড়িয়ে পড়ে ছোট-বড় সমস্ত পার্লারে। পদ্ধতি মোটামুটি ভাবে একই। ব্যক্তির পছন্দ অনুযায়ী প্রথমে লম্বাটে, গোলাকৃতি, চৌকো বা ওভাল শেপ-এ নখ কাটা হয়। কিউটিকল পরিষ্কার করা হয়। গরম জলে হাত দুটি ডুবিয়ে, মুছে ক্রিম ম্যাসাজ ও পরে নেলপলিশ লাগানো হয়। এ ছাড়া এখন বহু ধরনের ম্যানিকিয়োর পার্লারগুলিতে দেখা যাচ্ছে।
|
প্যারাফিন ম্যানিকিয়োর |
গরম মোম দিয়ে নখের ওপরে ঘষা হয়। এতে নখের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পায়। এ ছাড়া, গরম মোম দিয়ে হাত দু’টিকে মাসাজ করা হয়। ফলে হাত দু’টি শিশুর ত্বকের মতো নরম হয়ে ওঠে। যাঁরা একটু সহনশীল, তাঁরা যদি গরম মোমের মধ্যে হাত দু’টিকে কিছু ক্ষণ রাখতে পারেন, তবে ফল আরও ভাল হবে। যাঁরা বেশি ভারী কাজকর্ম করেন, তাঁদের ক্ষেত্রে এটি খুবই ফলদায়ক। |
|
মিন্ট ম্যানিকিয়োর |
যাঁদের হাত ভীষণ জ্বালা করে এবং খুব গরম থাকে, তাঁদের পক্ষে এটি খুব ভাল। পদ্ধতি একই। শুধু হাত দু’টি পুদিনা ফোটানো জলে ডুবিয়ে রেখে, তাতে পুদিনা মেশানো প্যাক ব্যবহার করবেন। |
চকলেট ম্যানিকিয়োর |
এই ম্যানিকিয়োরের ফলে আপনার হাত দু’টি অসম্ভব চকচক করবে। ক্রিম মাসাজের পর চকলেট মাস্ক লাগিয়ে আধ ঘণ্টা রেখে মুছে ফেলবেন। তফাত বুঝতে পারবেন। |
ট্যান রিমুভ ম্যানিকিয়োর |
যাঁরা অফিসে কাজ করেন, এবং রোদে বেশি ঘোরাঘুরি করেন, তাঁদের জন্য এটি খুবই প্রয়োজনীয়। ক্রিম মাসাজের পর হাতের ওপর ট্যান প্যাক লাগাবেন। কালো দাগ-ছোপ সমস্ত উঠে যাবে। যাঁরা বাড়িতে করবেন, তাঁরা মূলতানি মাটির সঙ্গে মধু অথবা দই, বেসন দিয়ে একটি প্যাক তৈরি করে লাগাতে পারেন। উপকার পাবেন। |
কিছু বিশেষ টিপ্স |
• বর্ষাকালে গ্লাভ্স পরে কাজ করার চেষ্টা করুন। কারণ, জল থেকে বিভিন্ন ধরনের সংক্রমণের আশঙ্কা থাকে।
• রান্নাঘরে একটি পরিষ্কার ছোট তোয়ালে রাখুন হাত শুকনো করে মোছার জন্য। প্রতিটি কাজের পর হাত বার বার মুছে নিন।
• কোনও ধরনের চুলকানি হলে ডাক্তারের কাছে যান।
• রাতে হাতে হ্যান্ড ক্রিম বা গ্লিসারিন লাগিয়ে শোবেন।
• নিয়মিত নখ কাটুন। না কাটলে পরিষ্কার রাখুন। |
|
|
|
|
|