বিপন্ন ক্ষুদ্র চা-চাষিরা
পাতা নেই। শুকনো ডালপালা নিয়ে গাছ দাঁড়িয়ে আছে। দেখে মনে হবে না কয়েকদিন আগেও সেখানে সবুজ চা বাগান ছিল। ওই বাগানগুলি থেকে চাষিরা রোজগার করতেন। গত এপ্রিল মাসে শিলাবৃষ্টির পরে উত্তর দিনাজপুরের চোপরা এলাকায় একরের পর একর জমিতে গড়ে ওঠা ছোট চা বাগানের ওই দশা হয়েছে। ক্ষুদ্র চা চাষি সংগঠনের কর্তাদের দাবি, প্রায় ১ হাজার একর বাগানের গাছ তুলে ফেলতে হবে। আরও ৪ হাজার একর বাগানের চা গাছে এখনও ভাল পাতা গজায়নি। ওই পরিস্থিতিতে কয়েক হাজার চা চাষি বিপাকে পড়েছেন। আর্থিক সাহায্যের জন্য সংগঠনের কর্তারা চা পর্ষদের দ্বারস্থ হয়েছেন। নর্থ বেঙ্গল স্মল টি প্ল্যান্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক নিতাই মজুমদার বলেন, “উদ্বেগজনক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। বাগানে পাতা নেই। গাছ শুকিয়ে যাচ্ছে। চাষিরা বেকার হয়েছে। আর্থিক সাহায্য না-পাওয়া গেলে পুরনো গাছ তুলে নতুন করে বাগান তৈরি করা সম্ভব হবে না। চা পর্ষদের কাছে আর্থিক সাহায্য চাওয়া হয়েছে।” ভারতীয় চা পর্ষদের ডেপুটি ডিরেক্টর কল্যাণকুমার ভট্টাচার্য বলেন, “ক্ষতিগ্রস্থ এলাকা ঘুরে দেখে একটি রিপোর্ট পাঠানো হয়েছে।” স্মল টি প্ল্যান্টার্স অ্যাসোসিয়েশন সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ৬ এপ্রিল শিলাবৃষ্টিতে উত্তর দিনাজপুর জেলা এবং বিধাননগর-১ গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার প্রায় আড়াই হাজার চা বাগান ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। প্রায় ৫ হাজার একর জমিতে ১৯৯৭ সাল থেকে ওই চা বাগানগুলি গড়ে উঠেছে। এতদিন সেখানে কাজ করে গ্রামের প্রচুর মানুষ রোজগার করতেন। কিন্তু শিলাবৃষ্টির পরে এলাকার ছবি পাল্টে যায়। গাছের গোড়ায় ঘন্টার পর ঘন্টা শিলের পুরু স্তর জমে থাকায় চা পাতা নষ্ট হয়। অনেক গাছ শুকিয়ে যায়। পরে চেষ্টা করেও ওই সমস্ত বাগান রক্ষা করা সম্ভব হয়নি। বিধ্বস্ত বাগানের মধ্যে ১ হাজার একরের পরিস্থিতি এতটা খারাপ যে পুরনো গাছ তুলে ফেলে নতুন করে চারা বুনতে হবে। কারণ সেখানে সবুজ দুটি পাতা ও একটি কুঁড়িপাতা মেলার সম্ভাবনা নেই বলে দাবি ক্ষুদ্র চা চাষিদের। কিন্তু ওই কাজ কেমন করে করবেন সেটাই বুঝতে পারছেন না তাঁরা। প্রাকৃতিক দুর্যোগের পরে এক রকম বেকার হয়ে বসে আছেন। রোজগার না-থাকায় সংসার অচল হয়েছে মজুরদের সংসারও। এ দিকে বাকি ৪ হাজার একর বাগানের পরিস্থিতিও উদ্বেগজনক। ক্ষুদ্র চা চাষি সংস্থার কর্তারা জানান, ওই সমস্ত বাগানে এখনও পাতা ও কুঁড়ির দেখা মেলেনি। আদৌ পাতা হবে কিনা বোঝা যাচ্ছে না। তবু চেষ্টা চলছে। কিন্তু এ ভাবে চাষিরা কতদিন অপেক্ষা করতে পারবে সেটাই প্রশ্ন। নর্থ বেঙ্গল স্মল টি প্ল্যান্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক বলেন, “চা পর্ষদ এখন একমাত্র ভরসা। অসহায় চাষিদের আর্থিক সাহায্যের আবেদন জানিয়ে পর্ষদের কর্তাদের কয়েকবার ডেপুটেশন দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এখনও সাড়া মেলেনি।” যদিও চা পর্ষদের কর্তারা জানান, ক্ষতিগ্রস্থ চাষিদের সাহায্যের জন্য চেষ্টা চলছে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.