ভাঙড়ে সিপিএমের দলীয় কার্যালয়ে হামলার পিছনে ফের জনরোষকেই দায়ী করলেন প্রাক্তন তৃণমূল বিধায়ক আরাবুল ইসলাম। দাবি করলেন, “এখানে ওদের (সিপিএম) জায়গা নেই। ভাঙড়ে আমরাই শেষ কথা।”
গত মঙ্গলবার ভাঙড়ে সিপিএমের বিজয়গঞ্জ দলীয় কার্যালয়ে প্রাক্তন ভূমিমন্ত্রী, সিপিএম বিধায়ক রেজ্জাক মোল্লা-সহ অন্য নেতাদের উপরে হামলার অভিযোগ ওঠে আরাবুলের লোকজনের বিরুদ্ধে। ঘটনার প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার ভাঙড়ের কাঠালিয়া বাসস্ট্যান্ডে সভা করে আরাবুলকে ‘চ্যালেঞ্জ’ জানান রেজ্জাক। শনিবার একই জায়গায় পাল্টা সভায় ভাঙড়ের প্রাক্তন তৃণমূল বিধায়ক আরাবুল দাবি করেন, “আমি এখানকার ভূমিপুত্র। আমার বিরুদ্ধে রেজ্জাক মোল্লাকে আক্রমণের বদনাম দেওয়া হয়েছে। সিপিএম পচে গিয়েছে। ওদের গায়ে হাত দেব কেন? আসলে জনরোষের জেরেই সিপিএমের পার্টি অফিসে হামলা হয়েছে।”
শুধু অভিযোগ অস্বীকার করাই নয়, ভাঙড়ে নানা খুনের পিছনে সিপিএমই রয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছেন আরাবুল। তিনি বলেন, “সিপিএম ভাঙড়ে একাধিক খুন করেছে। এখন ওরা আমার নামে অপপ্রচার, কুৎসা রটাচ্ছে। কিন্তু এ ভাবে আমার বদনাম করা যাবে না।” তাঁর দাবি, “ভাঙড়ের মানুষ আমার সঙ্গেই রয়েছেন। বিপদে-আপদে তাঁরা আমাকেই ডাকছেন। রেজ্জাক মোল্লা, গৌতম দেবের কাছে তামাক খেয়ে চক্রান্ত করে আমাকে হারানো হয়েছে। রেজ্জাক মোল্লা গলায় গামছা ঝুলিয়ে চাষির ব্যাটা সাজছেন। এ ভাবে চাষির ব্যাটা হওয়া যায় না।”
ভাঙড় বিধানসভা আসনটি বর্তমানে সিপিএমের দখলে রয়েছে। সিপিএম বিধায়ক বাদল জমাদার সেখানে কোনও উন্নয়নমূলক কাজ করছেন না বলেও অভিযোগ তুলেছেন আরাবুল। এ অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন বাদলবাবু।
সভায় রেজ্জাকের সমালোচনায় সরব ছিলেন তৃণমূলের কেন্দ্রীয় মন্ত্রী চৌধুরীমোহন জাটুয়া এবং দলের জেলা সহ-সভাপতি শক্তি মণ্ডলও। জাটুয়া বলেন, “রেজ্জাক মোল্লা গলায় গামছা দিয়ে চাষির ব্যাটা সেজে কলকাতায় থাকেন। সেখানে গাড়ি-বাড়ি করেছেন। এখানে মাঝেমধ্যে আসেন।” শক্তিবাবু বলেন, “রেজ্জাক মোল্লা ক্যানিং পূর্ব কেন্দ্রের বিধায়ক। তিনি সেখানে কী ভাবে জিতেছেন তা আমরা জানি। রেজ্জাক মোল্লার ডান হাত সওকত মোল্লাকে আমরা কেড়ে নিয়েছি। সে এখন আমাদের দলের কর্মী।” রেজ্জাক মোল্লা আরাবুলদের বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় বলেন, “ভাঙড়ের মানুষ জানেন, আমার কী আছে। আমার পূর্ব পরিচয়ও তাঁরা জানেন। আমি কলকাতার তপসিয়ায় সরকারি ফ্ল্যাটে ভাড়া দিয়ে থাকি। কলকাতায় নিজের কোনও সম্পত্তি নেই। তা রয়েছে বলে যদি তৃণমূল নেতারা প্রমাণ করতে পারেন, তা হলে সেই সম্পত্তি তাঁদের দান করে দেব।” |