গুড়াপের হোমে মানসিক প্রতিবন্ধী মহিলা গুড়িয়ার অস্বাভাবিক মৃত্যু ‘বিচলিত হওয়ার মতো’ ঘটনা বলে উল্লেখ করলেন কেন্দ্রীয় মুখ্য প্রতিবন্ধী কমিশনার প্রসন্নকুমার পিঞ্চা। প্রতিবন্ধীদের অধিকার রক্ষার বিষয়ে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের নজরদারি অনেক বাড়ানো উচিত বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি। রাজ্যে প্রতিবন্ধী-নিগ্রহের সাম্প্রতিক ঘটনাগুলি নিয়ে রাজ্য প্রতিবন্ধী কমিশনার মিতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছেও রিপোর্ট চেয়েছেন তিনি।
প্রতিবন্ধী কল্যাণে কাজকর্ম এখানে কী রকম হচ্ছে তা খতিয়ে দেখতে দু’দিনের সফরে কলকাতা এসেছিলেন পিঞ্চা। শনিবার ফিরে যাওয়ার আগে এক সাংবাদিক সম্মেলনে নজরদারি ও প্রচেষ্টার অভাবের কথা তুলে পক্ষান্তরে রাজ্য সরকারের সমালোচনা করেন তিনি। জানান, মুখ্যসচিবের সঙ্গে দেখা করে ভাল-মন্দ যা তথ্য পেয়েছেন, সব নিয়েই আলোচনা করেছেন।
গুড়িয়ার ঘটনা নিয়ে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের কাজের ত্রুটির দিকগুলি টেনে আনেন পিঞ্চা। জানান, প্রতিবন্ধীদের হিতার্থে চালু প্রকল্প ঠিক মতো কার্যকর হচ্ছে কি না, তা দেখতে ২০০১ সালে একটি স্টেট কো-অর্ডিনেশন কমিটি তৈরি হয়েছিল। সমাজকল্যাণ মন্ত্রী এর চেয়ারম্যান। প্রতি বছর এই কমিটির ৪ বার বৈঠক করার কথা। সেই হিসাবে ২০১২ সাল পর্যন্ত ৪৪টি বৈঠক হওয়ার কথা ছিল। হয়েছে মাত্র ৪-৫টি। একটি এগ্জিকিউটিভ কমিটিও হয়েছিল। যার কাজ, কো-অর্ডিনেশন কমিটির পরিকল্পনাগুলিকে বাস্তব রূপ দেওয়া। বছরে সেই কমিটির ৪ বার বৈঠক করার কথা। অথচ গত ১১ বছর তারা মোটে ৪-৫ বার বৈঠক করেছে। তাঁর প্রশ্ন, “তামিলনাড়ু-উত্তরপ্রদেশের মতো রাজ্যে প্রতিবন্ধী-সংক্রান্ত বিষয় দেখতে আলাদা দফতর রয়েছে। পশ্চিমবঙ্গে আলাদা ডিরেক্টরেট পর্যন্ত নেই।” প্রতিবন্ধীদের চিহ্নিত করে নথিভুক্ত করার কাজ রাজ্যে ঢিমে তালে চলছে বলে অভিযোগ করেছেন তিনি। বলেছেন, “অনেক সরকারি দফতরে প্রতিবন্ধীদের জন্য নির্দিষ্ট পদের সংখ্যা কত, তার হিসাব বা তালিকা নেই।”
রাজ্যের সমাজকল্যাণ মন্ত্রী সাবিত্রী মিত্র বলেন, “গত ৩৪ বছর কী হয়েছে তার দায় আমরা নেব না। তবে আমরা গত এক বছরে অনেক কিছু করেছি। কমিটির যে ক’টা মিটিং হয়েছে আমরাই করিয়েছি। ৫টি জেলায় প্রতিবন্ধী গণনার কাজ আলাদা ভাবে শুরু হয়েছে। আমরাই উদ্যোগী হয়ে প্রথম দফায় ১৫টি দফতরে ৩ শতাংশ পদে প্রতিবন্ধী কর্মী নিয়োগ শুরু করেছি।” |