ঝাড়খণ্ডের জোট সরকার
সরকারের দু’বছরে মুখ্যমন্ত্রী পদের দাবি জেএমএম-এর
গামী সেপ্টেম্বরে ঝাড়খণ্ডে বিজেপি-জেএমএম জোট সরকারের দু’বছর পূর্ণ হবে। আর তার মাস দুয়েক আগে থেকে মুখ্যমন্ত্রী বদলের দাবি তুলে বিজেপি-র উপর চাপ বাড়াতে শুরু করল শিবু সোরেনের দল ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চা।
জেএমএমের বক্তব্য, ২০১০ সালের সেপ্টেম্বর মাসে জোট সরকার যখন গড়া হয়, তখনই ঠিক হয়েছিল দু’বছর পর মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে বিজেপি ইস্তফা দেবে। জেএমএম-এর কেউ মুখ্যমন্ত্রী পদে বসবে। জেএমএম এই দাবি তুলতে শুরু করায় প্রবল চাপে পড়েছে বিজেপি নেতৃত্ব। তাঁদের তরফে এখন এমন কোনও শর্তের কথাই সম্পূর্ণ অস্বীকার করা হচ্ছে।
এই মুহূর্তে জোট সরকারের শরিকদের শক্তি বিন্যাস এই রকম: বিজেপি-১৮, জেএমএম-১৮, আজসু-৬, জেডিইউ—২। ৮২ সদস্যের বিধানসভায় জোট সরকারের মোট শক্তি ৪৪। কিন্তু গত ছ’মাসে জোট সরকারের রাজনীতি যে দ্রুত লয়ে পরিবর্তিত হয়েছে তাতে বিজেপি এখন জোটের মধ্যেই সংখ্যালঘু। রাজ্যসভার গত নির্বাচন থেকেই বিজেপি-র সঙ্গে জেএমএমের মতান্তর শুরু। জেএমএমের শত অনুরোধ সত্ত্বেও বিজেপি নেতৃত্ব রাজ্যসভা ভোটে প্রার্থী দাঁড় করিয়ে জেএমএমের সঙ্গে সরাসরি সংঘাতে নামে। শেষ পর্যন্ত জেএমএম-আজসু জোট বাঁধায় বিজেপি প্রার্থী পরাজিত হয়। তখনই জেএমএম নেতা তথা উপ-মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেন বিজেপি-র জাতীয় সভাপতি নিতিন গডকড়ীকে চিঠি লিখে জোট ধর্মের কথা স্মরণ করিয়ে দেন। তাতে প্রচ্ছন্ন হুমকিও ছিল, পরবর্তী ক্ষেত্রে জোট সরকারে যদি চিড় ধরে তবে তার দায় বিজেপি-রই।
হেমন্ত পরবর্তী ধাক্কাটা দিয়েছিল হাটিয়া বিধানসভা আসনের উপনির্বাচনে। গত বিধানসভা ভোটে বিজেপি প্রার্থীকে মাত্র ২৫ ভোটে হারিয়ে কংগ্রেস প্রার্থী এই আসনে জয়ী হয়। তাঁর মৃত্যুতে শূন্য আসনে জোট সরকারের প্রধান দাবিদার স্বাভাবিক ভাবেই ছিল বিজেপি। জেএমএম-আজসু উপজোট বিজেপি-র সেই দাবিকে নস্যাৎ করে দিয়ে হাটিয়ায় আজসু-র প্রার্থী দাঁড় করায়। বিজেপি ক্ষুণ্ণ হলেও ভেবেছিল হাটিয়া তাঁরা হেলায় জিতবেন। সব মহলকে তাজ্জব করে দিয়ে আজসু প্রার্থী হাটিয়া আসনটি ছিনিয়ে নেয় দ্বিতীয় স্থানে ছিল বাবুলাল মরান্ডির জেভিএম। বিজেপি তিন নম্বরে আর কংগ্রেস ছিল চারে।
বিজেপি-র সঙ্গে জেএমএম-আজসুর মতান্তরের শেষ উদাহরণ রাষ্ট্রপতি নির্বাচন। বিজেপি সমর্থিত প্রার্থী পূর্ণ সাংমাকে উপেক্ষা করে, জোটের বিরুদ্ধে গিয়েই হেমন্ত-সুদেশ, মুখ্যমন্ত্রী অর্জুন মুন্ডার দুই ‘ডেপুটি’ প্রণব মুখোপাধ্যায়কে সমর্থনের সিদ্ধান্ত নিল। এই চাপ এবার আরও বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে জেএমএম-আজসু উপজোট।
এ বার মুখ্যমন্ত্রী পদের দাবি নিয়ে ভিতরে ভিতরে চাপা প্রচার শুরু চলছিলই গত কয়েকদিন ধরে। আজ জেএমএম-এর কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য এবং দলের মুখপাত্র সুপ্রিয় ভটাচার্য তাকে প্রকাশ্যে টেনে আনলেন। তাঁর বক্তব্য, “অর্জুন মুন্ডার নেতৃত্বে সরকার গঠনের সময়েই আমাদের বলা হয়েছিল, দু’বছর পর মুখ্যমন্ত্রী বদল করা হবে। বদল করে মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব দেওয়া হবে জেএমএমের প্রতিনিধিকে।”
জেএমএমের এই দাবি খণ্ডন করতে ইতিমধ্যেই আসরে নেমে পড়েছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দীনেশানন্দ গোস্বামী। তিনি স্পষ্ট বলেন, ‘‘দু’বছর পর মুখ্যমন্ত্রী পরিবর্তন হবে-এমন কোনও শর্তে বিজেপি সরকার গঠন করেনি। রাষ্ট্রপতির শাসন ঠেকাতে বিনা শর্তে বিজেপির নেত্ত্বে সরকার গঠনে রাজি হয়েছিল শরিক দলগুলি।” রাজ্য বিজেপি নেত্ত্বের অভিযোগ, বিজেপি-র উপর চাপ তৈরির জন্য মিথ্যা প্রচার চলছে। তাঁদের আঙুল কংগ্রেসের দিকে: ক্ষমতায় আসার ছক কষে পিছন থেকে কলকাঠি নাড়ছে কংগ্রেস।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.