বিহারে রাজ্যপালের কাছে দেড় কোটি ফেরত চাইল এজি
বিহারের রাজ্যপাল দেবানন্দ কোঁয়ারের ভ্রমণ বাবদ খরচ নিয়ে প্রশ্ন তুলল এজি-বিহার। শুধু প্রশ্ন তোলাই নয়, রাজ্যপালের সচিবালয়ে পাঠানো রিপোর্টে, রাজ্যপালকে প্রায় দেড় কোটি টাকা অবিলম্বে সরকারি কোষাগারে জমা করার কথাও বলা হয়েছে। ২০০৯ সালের জানুয়ারি মাস থেকে ২০১২ সালের মার্চ মাস পর্যন্ত রাজ্যপালের ‘ট্যুর বিল’-কে কার্যত বেআইনি আখ্যা দিয়েছে এজি। এই রিপোর্টে অস্বস্তিতে পড়েছে রাজভবন। বিহার রাজভবন সূত্রে জানা গিয়েছে, এজি-র পাঠানো রিপোর্টটি তাঁরা পেয়েছেন। সমস্ত রিপোর্ট খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তারপরেই তাঁরা এর উত্তর দেবেন।
এজি-র এই রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে, রাজ্যপাল দেবানন্দ কোঁয়ার সওয়া তিন বছরে রাষ্ট্রপতির অনুমতি ছাড়াই দেশের মধ্যে প্রচুর ভ্রমণ করেছেন। যা সম্পূর্ণ নিয়ম বহির্ভূত। প্রসঙ্গত, কোনও রাজ্যপাল রাজ্যের বাইরে কোথাও ভ্রমণে গেলে রাষ্ট্রপতির অনুমতি নিতে হয়। অনুমতি নেওয়ার নিয়ম হল, চিঠি দিয়ে অথবা টেলিগ্রাম করে আবেদন করতে হবে। সেই অনুমতি এলে তবেই তিনি ভ্রমণে যেতে পারেন। এজি-র রিপোর্টে বলা হয়েছে, রাজ্যপাল সপরিবার ব্যক্তিগত ভ্রমণে তাঁর নিজের রাজ্য অসম বা দেশের অন্য কোথাও বছরে দু’বার সরকারি খরচে যেতে পারেন। কিন্তু কোঁয়ার সে সব নিয়মের ধার ধারেননি। ২০০৯ সালের জানুয়ারি থেকে ২০১০ সালের মার্চ পর্যন্ত তিনি ৪ বার ব্যক্তিগত কারণে অসম সফর করেছেন। ২০১০-১১ আর্থিক বছরে তিনি ৯ বার অসমে গিয়েছেন। ২০১১-১২ আথির্ক বছরে তিনি ১২ বার অসমে গিয়েছেন। সবই সরকারি খরচে। সস্ত্রীক ও সপার্ষদ যাওয়া আসার বিমানভাড়া ছাড়াও অন্যান্য আনুষঙ্গিক সব খরচই সরকারি কোষাগার থেকে খরচ করা হয়েছে।
এ ছাড়াও, এজি-র রিপোর্ট অনুযায়ী, রাজ্যপাল ২০০৯-১০ আর্থিক বছরে মোট ৭৯ দিন রাজ্যের বাইরে ছিলেন। এর জন্য রাজ্য সরকার তাঁর বিমানের ভাড়া বাবদ দিয়েছে, ৪ লক্ষ ৬৬ হাজার ৮১১ টাকা। ২০১০-১১ আর্থিক বছরে রাজ্যপাল ৭৩ দিন রাজ্যের বাইরে ছিলেন। তার জন্য বিমান খরচ হয়েছে, ৩ লক্ষ ৩০ হাজার ১১ টাকা। ২০১১-১২য় রাজ্যপাল ১৫৪ দিন রাজ্যের বাইরে ছিলেন। এর জন্য তাঁর বিমান খরচ বাবদ রাজ্য সরকার ৭ লক্ষ ৮১ হাজার ৭০৮ টাকা খরচ করেছে। এর পাশাপাশি অন্যান্য খরচও প্রচুর। এজি রিপোর্ট বলছে, এর মধ্যে অধিকাংশ ভ্রমণের জন্যই রাষ্ট্রপতির অনুমতি ছিল না। আবার এমন কয়েকটি ক্ষেত্র এজি চিহ্নিত করেছে যেখানে রাষ্ট্রপতি যে ক’দিনের জন্য ভ্রমণের অনুমতি দিয়েছেন, তা শেষ হয়ে যাওয়ার পরেও রাজ্যপালের ভ্রমণ শেষ হয়নি। এই বাড়তি খরচও বেআইনি বলে মতামত দিয়েছে এজি-বিহার।
শুধু রাজ্যপাল নন, তাঁর স্ত্রীর খরচ নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে এজি। নিয়ম অনুযায়ী, রাজ্যপাল সঙ্গে থাকলে তাঁর স্ত্রী বা অন্য কারও ভ্রমণের খরচ সরকার দেবে। কিন্তু দেখা গিয়েছে, ২০১১ সালের ডিসেম্বরে রাজ্যপালের স্ত্রী নীভা কোঁয়ার দিল্লি থেকে গুয়াহাটি গিয়েছিলেন। সেই সময় রাজ্যপাল ছিলেন দিল্লিতে। এজি রিপোর্টে প্রশ্ন তুলেছে, রাজ্যপালের স্ত্রীর জন্য এই টাকা কী ভাবে সরকারি কোষাগার থেকে খরচ করা হল?
সমস্ত খতিয়ে দেখে এজি রিপোর্টে বলা হয়েছে, রাজ্যপালের ‘ট্যুর বিল’-এর এই বেআইনি খরচের জন্য রাজ্যপালের উচিত সরকারি কোষাগারে অবিলম্বে ১ কোটি ৪৮ লক্ষ টাকা জমা করা।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.