দূরে থাক রোদ্দুর
হু মানুষ আছেন যাঁরা রোদে বেরোতে পারেন না। রোদ্দুরে বেরোলেই তাঁদের অনেক অসুবিধা দেখা দেয়। আমরা তাঁদের কটাক্ষ করে থাকি গরমের দেশে জন্ম, আবার রোদ্দুরে বেরোতে পারে না! বহু বিশেষণ তাঁদের শুনতে হয়। কিন্তু রোদ্দুরে বেরোলে অনেকেরই বিশেষ কিছু অস্বস্তি হয়। কিছু ক্ষণের মধ্যেই লাল র‌্যাশ বেরিয়ে যায়। এগুলি অ্যালার্জি-ঘটিত। ঘামাচির সঙ্গে এটিকে গুলিয়ে ফেললে চলবে না। দু’টি দু’ধরনের। ঘামাচি হয় গরম থেকে এবং এই অ্যালার্জি হয় শুধুমাত্র রোদ্দুর থেকে।

দেখতে কেমন
লাল লালই হয়। তবে একটু উঁচু হবে। এ ছাড়া ফোসকার মতো দেখতেও হতে পারে। কিন্তু দু’টি ক্ষেত্রেই খুবই চুলকাবে। এই অ্যালার্জি মোটামুটি ভাবে দশ শতাংশ লোকের মধ্যে দেখা দেয়। বসন্ত কালে এবং গরমের প্রথম দিকে এটি বেশি দেখা যায়। রোদে ঘোরার এক দু’দিন পরে এই অ্যালার্জিটি বের হয়।

রোদে কেন হয়
কারণটি খুব একটা পরিষ্কার হয়নি। মোটামুটি ভাবে দায়ী করা হয় প্রতিরোধ ক্ষমতাকে। মনে করা হয় প্রতিরোধ ক্ষমতার কিছু ত্রুটির ফলে এটি হয়।
রোদের তেজ জোরালো হলে, সেই রোদে কুড়ি মিনিট ঘুরলে এই অ্যালার্জি হতে পারে।
সরাসরি রোদে না ঘুরলেও, যদি গাড়িতে বসে থাকেন, এবং তাপ কাচের মধ্য দিয়ে আসে, তা হলেও হতে পারে।
রোদ্দুর ছাড়া যে কোনও জোরালো আলো থেকে হতে পারে।
হালকা রঙের কাপড় জামা পরলে সেটি ভেদ করেও অ্যালার্জি হয়।
হাতে, গলায়, পিঠে যে কোনও খোলা অংশে বেশি হয়।
অনেক সময় দেখা যায় রোদে এক সপ্তাহ না বেরোলে বিনা ওষুধে এটি কমে যায়।

বিশেষ কিছু তথ্য
মেয়েদের বেশি হয়। মোটামুটি ভাবে ত্রিশের আগে থেকেই এই অ্যালার্জিটি হয়। যারা ফর্সা তাদের এটি বেশি হয়। এটি ছোঁয়াচে নয়।
এটি কি বংশগত?
সম্ভবত নয়। মাত্র পনেরো শতাংশের মধ্যে দেখা যায়, মা বাবার থাকলে সন্তানেরও হয়েছে।
এটি কী করে চিনব?
এটি হালকা র‌্যাশ হিসাবে দেখা দিতে পারে। মুখে এবং হাতে হলে সব থেকে বেশি হয়। খুবই চুলকায়। তখনই চিকিৎসার দরকার হয়। এটি শরীরের দু’টি দিকেই হতে পারে। যেমন বাঁ হাতে হলে ডান হাতে হবেই। আবার, র‌্যাশ বাঁ দিকের গালে দেখা দিলে, ডান দিকের গালে বেরোবেই।
প্রথমে এটি হালকা র‌্যাশ হিসেবে মুখে এবং হাতে দেখা যায়।
চুলকানির সঙ্গে জ্বালা ভাব থাকতে পারে।
যখন র‌্যাশ ঠিক হয়ে যায়, তখন কোনও ক্ষতচিহ্ন রেখে যায় না।

ডাক্তাররা কী ভাবে চিনতে পারবেন?
র‌্যাশটি দেখেই চেনা যায়।
অনেক সময় রোগীরা বলেন, রোদ্দুরে বেরোলেই হয়। এ থেকেই বোঝা যায়।
কখনও অন্য রোগের থেকে আলাদা ভাবে চিনতে কিছু পরীক্ষানিরীক্ষার প্রয়োজন হয়। যেমন
ফোটো টেস্ট খুব জোরালো আলো ফেলে দেখা হয়। যদি দেখা যায় ওই অংশটিতে অ্যালার্জি-জনিত র‌্যাশ বেরিয়েছে, তবে সন্দেহের অবসান হয়।
কোনও কোনও ক্ষেত্রে ত্বকের বায়পসি করা হয়, অন্যান্য রোগ বা শরীরের অভ্যন্তরীণ কোনও অসুখ থেকে পৃথক ভাবে চিনতে।
কিছু ক্ষেত্রে রক্ত পরীক্ষার প্রয়োজন হয়।

চিকিৎসা
রোদ এড়িয়ে চলতে হবে (দশটা থেকে তিনটের মধ্যে)।
ফুলহাতা জামা দিয়ে যতটা সম্ভব ঢেকে রাখতে হবে।
বড় টুপি বা ছাতা ব্যবহার করতে হবে।
যদি বার বার হয়, সে ক্ষেত্রে এক ধরনের বিশেষ মেক-আপ আছে, সেটি ব্যবহার করার পরামর্শ দেওয়া হয়।
আলট্রাভায়োলেট রে’র সাহায্যে চিকিৎসা করা হয়।
আলট্রাভায়োলেট রে প্রয়োগ করে ত্বকের প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানো হয়। তবে এটি গরম আসার আগে করতে হবে।
যাঁদের বেশি দেখা যায়, তাঁদের ক্লোরোকুইন জাতীয় ওষুধ দেওয়া হয়।
স্টেরয়েড জাতীয় ক্রিম দেওয়া হয়।

কিছু টিপ্স
ঠান্ডা জলের ছোঁয়া লাগাতে পারেন, ঘন ঘন ঠান্ডা জলে স্নান করতে পারেন।
অ্যান্টিবায়োটিক ক্রিম বা লোশন লাগান।
ফোসকার মতো হলে খুঁটবেন না।
কাজকর্মের সময়ের মধ্যে পরিবর্তন আনুন।
সানস্ক্রিন লাগানোর আধ ঘণ্টা পরে বাড়ি থেকে বেরোবেন।
যাঁদের এই ধরনের অ্যালার্জি আছে, তাঁদের জন্য একটি সুখবর আছে। কিছু দিনের মধ্যেই সান-ব্লকিং জামাকাপড় বাজারে আসছে, যেটি এই অ্যালার্জির হাত থেকে বাঁচাবে।

যোগাযোগ: ২৩৫৮-৮০১০, ৯৪৩৩০২৩৮৭৯
সাক্ষাৎকার: কস্তুরী মুখোপাধ্যায় ভারভাদা



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.