মুখোমুখি...
কাজল জীবনে আসার পরে বাবা-মাকে নিয়ে আর ভাবতে হয় না

পত্রিকা: তারকা হয়েও দর্শকদের কাছে অজয় দেবগন মানেই দুরন্ত এক অভিনেতা।
অজয়: এ ব্যাপারে আমি ভাগ্যবান। দর্শকরা যদি মনে করেন, আপনি এক জন অভিনেতা, তা হলে আমি একে অবিশ্বাস্য সৌজন্য হিসাবেই দেখব।

পত্রিকা: জাতীয় পুরস্কার আপনার কাছে কতটা অর্থদায়ক?
অজয়: তার আগে কঠিন পরিশ্রম করে বাণিজ্যিক বাজারে টিকে থাকতে হয়েছে। সেই সঙ্গে ফিল্মে কাজ করে দশর্কদের কাছে তুলে ধরতে হয়েছে নিজের পারফরম্যান্স। মনে রাখবেন, বাণিজ্যিক ছবি আর দর্শকদের মনোরঞ্জনের মধ্যে বিশেষ কোনও তফাত নেই।

পত্রিকা: আপনি আগে অভিনেতা, পরে তারকা। তারকার জন্য আপনি নিজের অভিনেতা সত্তাকে কখনও বলি দেননি?
অজয়: আপনি অভিনয়কে কখনও বলি দিতে পারেন না।

পত্রিকা: যখন দেখেন এক জন ভাল অভিনেতা না-হয়েও তারকার মর্যাদা পেয়ে একই ছবিতে আপনার থেকে বেশি প্রচার পাচ্ছেন তখন কী ভাবে অবিচল থাকেন?
অজয়: যে যেটা করতে চায়, তার সেটা করার অধিকার আছে। কাল যদি আমি নিজের পারফরম্যান্সে মন না দিয়েই কাজ করি, এবং সেই ছবি ভাল চলে, তারও তো একটা পরিতৃপ্তি আছে।

পত্রিকা: সর্বদাই ‘ফোকাসড’ থাকার জন্য কি মানসিক দৃঢ়তার প্রয়োজন হয়?
অজয়: মানসিক দৃঢ়তা নয়, প্রয়োজন ঠিকঠাক ভাবে বেড়ে ওঠা। পারিবারিক শিক্ষাদীক্ষা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। বাবা বলেছিলেন, সৎভাবে কাজ করবে। খুব ছোটবেলা থেকেই ইন্ডাস্ট্রিকে দেখছি। এর কোনটা ভাল, কোনটা মন্দ, আমি জানি না। নিজেকে সর্বদাই এই ইন্ডাস্ট্রির অংশ হিসেবেই দেখেছি। প্রথম ছবি যখন করতে চেয়েছি, তখনই পেয়েছি। প্রথম ছবিই সুপারহিট। আমি মনে করি উত্থান-পতন জীবনেরই অঙ্গ। কিন্তু একটানা খারাপ সময়? না, মনে করতে পারছি না। ইন্ডাস্ট্রির ভালবাসা সর্বদাই পেয়েছি, জীবনে সব কিছু পেয়েছি এখান থেকেই। এক জন অভিনেতা হিসাবে ইন্ডাস্ট্রির কোনও খারাপ দিক আমার চোখে পড়েনি।

পত্রিকা: আপনি কিন্তু কখনও তারকা হিসেবে নিজেকে জাহির করেন না...
অজয়: নিজের কথা বলতে কখনও পছন্দ করি না। কখনও বলিনি, জানো কী, আমার আগের ছবিটি একশো কোটির বাণিজ্য করেছে। আমার মনে হয়, অভিনয় করাটাই আমার কাজ। বাকিটা বলবে অডিয়েন্স। ওঁরাই শেষ কথা। আমার কাজ যদি তেমন ভাবে প্রশংসিত না-হয়, তা হলেও মিডিয়ার বিরুদ্ধে আমার কিছু বলার নেই। কিন্তু ছাদে উঠে গলা ফাটিয়ে বলতে পারব না, দেখো আমি কী কাণ্ডই না করেছি। আমি এখানে কাজ করতে এসেছি। আমার লক্ষ্য, আগে যা করেছি, তার চেয়েও ভাল কাজ করা। কিন্তু কোনও প্রতিযোগিতায় আমি নেই।

পত্রিকা: ক্রিকেটের পরিভাষায় যাকে বলে ব্যাটকে কথা বলতে দাও।
অজয়: ঠিক। একেবারেই তা-ই।

পত্রিকা: আপনার অগ্রাধিকারের তালিকায় কী কী আছে?
অজয়: সুখের সংজ্ঞা সবার কাছে এক নয়। আমার কাছে এর তাৎপর্য হল, সন্ধ্যা ছ’টা পর্যন্ত কাজ করো, তার পরে বাড়ি ফিরে যাও। পরিবারের সঙ্গে সময় কাটাও। শ্যুটিং সংক্রান্ত কোনও আলোচনা বাড়িতে একদম নয়। ওই নিয়ে একটা শব্দও খরচ কোরো না। ফোনে কথা বোলো না। ওই সময় অভিনয় করি না। বাচ্চাদের সঙ্গে খেলা করি। পরিবারের সঙ্গে সময় কাটাই।

পত্রিকা: তা হলে আপনি পুরোদস্তুর গৃহস্থ?
অজয়: হ্যাঁ। পারিবারিক মূল্যবোধে আমি বিশ্বাসী। যৌথ পরিবারে আমার অগাধ আস্থা। বিশ্বাস করি, সারা জীবন আমার বাবা-মা আমার দেখভাল করেছেন। এখনও বাবা-মায়ের সঙ্গে একই ছাদের তলায় বাস করি। এখনও কী করে বাবা-মায়ের সঙ্গে বাস করেন? আমাকে এমন প্রশ্নও শুনতে হয়। আমি বলি সারা জীবন তো আমার তাঁদের সঙ্গেই বাস করার কথা। এখন তাঁরা আর কাজ করতে পারেন না। কিন্তু আমিও তো এক জন বাবা। আমি জানি, সারা জীবন আমার বাবা আমার জন্য কী করেছেন।
এই তো সে দিন মেয়ের কী জ্বর। আমি সারা রাত জেগে। পারিবারিক ব্যাপারে আমি খুব গোঁড়া।


পত্রিকা: তা হলে অভিনয় করাটাকে অফিসে কাজ করার মতোই মনে করেন?
অজয়: একদম তা-ই। সেই কাজটা সন্ধ্যা ছ’টায় শেষ হয়ে যায়। অনেকেই প্রশ্ন করেন, বাড়িতে কি কাজলের সঙ্গে সিনেমা নিয়ে আলোচনা করেন। একদমই করি না। বাড়ি ফিরে এলে ‘নো অফিস, নো ওয়ার্ক’। ঠিক আপনাদেরই মতো।

পত্রিকা: আপনি নিজে একজন নিয়মনিষ্ঠ ব্যক্তি। কাজলও তাই....
অজয়: (প্রশ্ন শেষ করার আগেই) সেই জন্যই আমরা সুখী। আমরা দু’জনই সৎ চরিত্রের। বিয়ের পরে কাজল যদি দাবি করত যে, আমরা আলাদা থাকব, তা হলে আমি কী করতাম? কিন্তু কাজল একবারও এমন কথা বলেনি।
বিয়ের পরেও কাজ করেছে। কিন্তু যেটা বলার, তা হল কাজল আমার জীবনে আসার পরে বাবা-মাকে নিয়ে আমাকে আর ভাবতে হয় না। আমার বাবা-মায়ের দেখভাল ওই করে। এই দিক দিয়ে, টাচ উড, আমি খুব ভাগ্যবান।


পত্রিকা: অভিনয়ে নিজস্ব ছাপ রাখায় আপনি বিশ্বাসী?
অজয়: ছাপটাপে আমি বিশ্বাসী নই। হৃদয় যা চায়, আমি তা-ই করায় বিশ্বাসী। কেরিয়ারের পক্ষে যেটা ভাল হবে, আমি তা-ই করব, এমনও ভাবি না। আমি তা-ই করি, যা আমি বিশ্বাস করি। আর তা করে আমি গর্ব অনুভব করি। আমি কেবল আর্ট ফিল্ম করলে কি হলে আমাকে দেখতে দর্শকেরা আসতেন? তাঁরা তো বিনোদন চান। সেটা দেওয়াই আমার কাজ।

পত্রিকা: ‘বোল বচ্চন’-এর বিশেষত্ব কী?
অজয়: পুরোপুরি বিনোদনমূলক। কোনও ছবিরই কোনও বিশেষত্ব থাকে না। দর্শকেরা ছবি দেখে শিক্ষিত হতে হলে আসেন না। তাঁরা চান বিনোদন। যা পুরোমাত্রায় এই ছবিতে আছে।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.