|
|
|
|
দ্রুত গড়া হবে কারখানা, স্বপ্ন দেখছে শালবনি |
সুমন ঘোষ • শালবনি |
জিন্দলদের সঙ্গে রাজ্য সরকারের জমি-লিজ চুক্তি চূড়ান্ত হয়ে যাওয়ায় স্বস্তির শ্বাস ফেলছে শালবনি। আশা, মূল প্রকল্পের কাজও দ্রুত শুরু হবে। কাজ পাবেন স্থানীয় বেকার যুবকেরা।
“জমি চলে গিয়েছে। কাজ না পেলে খাব কী?” প্রশ্ন বাঁশকোপনা গ্রামের কানন সিংহের। জিন্দলদের প্রস্তাবিত ইস্পাত কারখানার জন্য এক বিঘের কিছু বেশি জমি দিয়েছেন তিনি। ক্ষতিপূরণের টাকা পেয়েছেন। কিন্তু তা দিয়ে আর কত দিন চলবে? কারখানা হলে ছেলে অশোকের চাকরি হবে আপাতত এই আশায় রয়েছেন কাননবাবু। এলাকার বেকার যুবকদের প্রকল্পে কাজের উপযোগী করে তুলতে যে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেছে জিন্দলরা, অশোকের মতো অনেকেই তাতে যুক্ত হয়েছেন। বস্তুত, ২০০৭-০৮ থেকেই এই ইস্পাত কারখানা ঘিরে স্বপ্ন দেখছে শালবনি। জমি ঘিরে পাঁচিল দেওয়া, কর্মী আবাসন বা রাস্তা তৈরির সময়ে স্থানীয়েরা কাজ পেয়েছেন। এলাকার কেমন উন্নয়ন হবে তা বোঝাতে কিছু লোককে কর্নাটকের বল্লারিতে নিজেদের প্রকল্প এলাকা দেখিয়েও এনেছে জিন্দলেরা। বাগান তৈরি, অফিস ঝাড়পোঁছের জন্যও ইতিমধ্যে নিয়োগ করা হয়েছে স্থানীয় কয়েক জনকে। তাঁদেরই এক জন, রাজু চালকের কথায়, “আমি শুধু নামটা সই করতে পারি। ১৫ কাঠা জমি ছিল। ভাল চাষ হত না। কষ্টে সংসার চলত। সেই জমি দিয়ে মাসে ৪ হাজার টাকা বেতনের কাজ পেয়েছি। নিখরচায় চিকিৎসাও মেলে। কারখানা চালু হলে আরও অনেক কিছু হবে।” |
|
ইস্পাত কারখানা নির্মাণের কাজ চলছে শালবনিতে। নিজস্ব চিত্র। |
বেঁওচা গ্রামের ৭৫ বছরের বৃদ্ধা সুধীরা পাল বলেন, “আগে রোগ হলে শালবনি বা মেদিনীপুরে যেতে হত। এখন কারখানার লোকজনই গ্রামে শিবির করছে। কারখানা চত্বরেও ডাক্তারবাবু বসেন। পরীক্ষার দরকার হলে অ্যাম্বুল্যান্সে ওঁরাই মেদিনীপুরে নিয়ে গিয়ে সব ব্যবস্থা করেন।” গ্রামে স্বাস্থ্যশিবির বা প্রস্তাবিত কারখানা চত্বরে ক্লিনিক চালাতে এলাকার মেয়েদেরও প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। নবনীতা মাহাতো, বন্দনা সাঁতরা, দেবযানী মাহাতো, জয়শ্রী মাহাতোর কথায়, “ইঞ্জেকশন দেওয়া, ড্রেসিং, ওআরএস বানানো, রক্তচাপ মাপার মতো কাজ শিখেছি। কারখানার ভিতরে বড় হাসপাতাল হবে শুনছি। নিশ্চয়ই সুযোগ পাব।” ক্লিনিকের দায়িত্বে থাকা জয়মাল্য হালদার, সহেলি নস্কররা বলেন, “আপাতত ওদের ন্যূনতম পারিশ্রমিকে কাজ দেওয়া হচ্ছে। চেষ্টা চলছে, যাতে শংসাপত্রের ব্যবস্থা করা যায়। তা হলে ভবিষ্যতে কাজের সুযোগ বাড়বে।” সংস্থার তরফে জেএসডব্লিউ-এর ভাইস প্রেসিডেন্ট (প্রজেক্ট) গুলশনকুমার সাইনি বলেন, “বর্ষা গেলেই মূল কারখানার কাজ শুরু হবে। স্থানীয় মানুষই কাজ পাবেন।”
মাওবাদী তৎপরতার অতীত পার হয়ে জঙ্গলমহলের এই এলাকা এখন অনেকটাই শান্ত। এ বার সুদিন আর সুস্থিতির স্বপ্ন দেখছে শালবনি। |
|
|
|
|
|