দুটি শাবক নিয়ে দিনভর চা বাগানের ঝোপের আড়ালে লুকিয়ে থেকে গবাদি পশু মেরে খাচ্ছে একটি চিতা বাঘ। সুযোগ পেলে মানুষের উপরেও হামলা চালাচ্ছে। ফালাকাটার কাদম্বিনী চা বাগানের ঘটনা। ওই চিতাকে ধরতে বুধবার খাঁচা বসালেন বনকর্মীরা। চা বাগান সূত্রে জানা গিয়েছে, টানা তিন সপ্তাহ থেকে চিতা বাঘটি দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। ইতিমধ্যে তিনটি গরু মেরেছে। আতঙ্কে বাগানে পাতা তোলার কাজে যেতে পারছেন না শ্রমিকরা বাগানের সিনিয়র অ্যাসিস্ট্যান্ট ম্যানেজার প্রণব সাহা বলেন, “দু’বছর আগে পাতা তুলতে গিয়ে বাঘের আক্রমণে এক শ্রমিক মারা যায়। এ বার তিনটি গরু মেরেছে। ভয়ে বাগানের বড় পাতা তুলছে না শ্রমিকরা। কয়েকবার বলার পরে বন দফতর চিতা বাঘটিকে ধরতে উদ্যোগী হয়েছে।” কয়েক বছর বন্ধ থাকার পরে দুই বছর আগে কাদম্বিনী বাগান খুলেছে। বর্ষায় ১৬ হাজার কেজি পাতা মিললেও গত ৩ সপ্তাহ থেকে বাঘের ভয়ে উৎপাদন তলানিতে ঠেকেছে। বাগানের শ্রমিক অজিত গোপ বলেন, “দুটি বাচ্চা নিয়ে বড় দুটি চিতাবাঘ বাগানে ঘুরে বেড়াচ্ছে। বাগানের অনেকে সেটা দেখেছে। ভয়ে আছি। কাজে যেতে পারছি না।” বনকর্মীরা জানান, বাগান থেকে জলদাপাড়া বনের দূরত্ব ২ কিলোমিটার। প্রসবের জন্য সেখান থেকে চিতাবাঘটি চা বাগানে ঢুকেছে। চা শ্রমিকদের পটকা দেওয়া হয়েছে। সেটিকে ধরতে খাঁচা বসানো হয়েছে।
|
বাজারে ডালা টেনে আম খেল হাতি |
ফল-সব্জির বাজারে বেচাকেনা চলছিল। হঠাৎ সেখানে হাজির একটি হাতি। ডালা থেকে আম, আপেল শুঁড়ে তুলে সোজা পেটে চালান করতে শুরু করে। ফল-সব্জি ফেলে ক্রেতা-বিক্রেতার তখন ‘চাচা আপন প্রাণ বাঁচা অবস্থা’।
বুধবার সাত সকালে জঙ্গল ছেড়ে একটি হাতি বড়জোড়া সব্জিবাজারে ঢুকে রীতিমত তাণ্ডব চালায়। কয়েকজন নিরাপদ দূরত্ব থেকে ইট-পাটকেলও ছোড়েন। কিন্তু তাতেও ‘পেটুক’ হাতিটিকে নড়ানো যায়নি। শেষে বনকর্মীরা হুল জ্বালিয়ে তেড়ে আসায় সে জঙ্গলমুখো হয়। ফল বিক্রেতা রাম শঙ্কর বলেন, “আমার পুরো দোকান সাফ করে দিয়েছে।” অল্প হলেও পাশের বাবলু দাসের দোকানেও ঢুঁ মেরেছিল হাতিটি। তার দুলকি চালে শুঁড় ও পায়ের ‘ছোঁয়ায়’ কয়েকটি দোকান ভাঙে। খবর পেয়ে পুলিশ থেকে বাসিন্দারা ভিড় করেন। বড়জোড়া পঞ্চায়েত প্রধান অলোক মুখোপাধ্যায় বলেন, “মাঝে মধ্যেই আশপাশের কলকারখানাগুলোর কাছে হাতি চলে আসত। কিন্তু এ ভাবে বাজার এলাকায় ঢুকে পড়ায় এ বার আতঙ্ক বাড়ল।” তবে বেশ কয়েকবছর আগে এই বাজার এলাকায় যাত্রার আসরের মধ্যে একটি হাতি ঢুকে তাণ্ডব চালিয়েছিল। সেই স্মৃতি এ দিন বাসিন্দাদের কথায় ঘুরেফিরে এসেছে। বড়জোড়ার রেঞ্জ অফিসার সৌমেন মণ্ডল বলেন, “হাতিটি ‘রেসিডেন্ট’। ওর গতিবিধি নজরে রাখা হচ্ছে।”
|
গড়বেতার গ্রামে দাঁতালের তাণ্ডব |
একটি রেসিডেন্সিয়াল হাতিই বনকর্মীদের রাতের ঘুম কেড়ে নিয়েছে। দাঁতালটিকে বাগে আনতে হিমসিম খাচ্ছেন বনকর্মীরা। হাতিটি যখন-তখন লোকালয়ে ঢুকে পড়ছে। ঘরবাড়ি ভাঙচুর করছে। গত তিন দিন ধরে গড়বেতার আমলাগোড়া রেঞ্জ এলাকায় এই তাণ্ডব চলছে। সন্ত্রস্ত হয়ে পড়েছেন এলাকার মানুষ। ইতিমধ্যে হাতির হানায় ২০টি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বন-দফতরের রূপনারায়ণ বিভাগের ডিএফও রবীন্দ্রনাথ সাহা বলেন, “হাতিটির গতিবিধির উপর নজর রাখা হচ্ছে। এলাকা থেকে হাতি তাড়ানোর সব রকম চেষ্টা চলছে।” বন দফতরের অনুমান, হাতিটির উপরে আঘাত করা হয়েছে। সে জন্যই ক্ষিপ্ত হয়ে এ ভাবে সে তাণ্ডব চালাচ্ছে। স্থানীয় সূত্রে খবর, তিন দিন ধরে হাতিটি কাষ্ঠগড়া, কাদরা, জামডোবা, বাগডোবা, তাতিচুয়া, আমলাগোড়া ও তার আশপাশ এলাকায় দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। এক বনকর্মী বলেন ,“হাতিটি ক্রমাগত পথ পরিবর্তন করছে। দেখে মনে হচ্ছে, ক্ষিপ্ত হয়ে আছে। আমাদেরও কাজ করতেও সমস্যা হচ্ছে।”
|
হাতির হামলায় মারা গেলেন এক যুবক। মঙ্গলবার রাতে কালিম্পং ডিভিশনের নেওড়া রেঞ্জে লোয়ার ফাগু চা বাগানে কাওয়াড় লাইনে। মৃতের নাম সুমন কাওয়ার (২৫)। বন দফতরের গড়িমসির অভিযোগ তুলে বুধবার গরুবাথান সড়ক ৩ ঘণ্টা অবরোধ করেন বাসিন্দারা। |