বাঙালির পাত থেকে ক্রমশ হারিয়ে মায়া, খলসে, পুঁটি, ল্যাটা, চাঁদা ফের ফিরিয়ে আনার পাশাপাশি মাছ চাষে পশ্চিমবঙ্গকে স্বয়ংসম্পূর্ণ করতে রাজ্য সরকারের উদ্যোগের কথা জানালেন রাজ্য মৎস্য দফতরের প্রতিমন্ত্রী সুব্রত সাহা। বুধবার উত্তর ২৪ পরগনার বাগদায় এ কথা জানিয়ে সুব্রতবাবু বলেন, “অবলুপ্তপ্রায় এই সব মাছ চাষের জন্য রাজ্যের সাতটি জেলাকে বেছে নেওয়া হয়েছে। জেলাগুলি হল উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, বর্ধমান, নদিয়া, বীরভূম, বাঁকুড়া ও পুরুলিয়া।” এ দিন উত্তর ২৪ পরগনার বাগদার কোলা বিলে দেশি মাছ ছেড়ে এই কর্মসূচীর উদ্বোধন করেন মন্ত্রী। |
কোলা বিলে মাছ ছাড়ছেন মন্ত্রী। নিজস্ব চিত্র। |
মৎস্য দফতর সূত্রে জানানো হয়েছে, রাজ্যে জনসংখ্যা বাড়ছে। অন্যদিকে কমছে জলাভূমি। তার উপর সংস্কার ও উপযুক্ত রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে অধিকাংশ জলাভূমি নষ্ট হতে বসেছে। পাশপাশি খাল-বিলগুলির অবস্থা খারাপ। সেগুলি মাছ চাষের অনুপযুক্ত হয়ে পড়ছে। এখন থেকে জলাভূমিগুলি সংস্কার ও উপযুক্ত রক্ষণাবেক্ষণ করে এবং খাল-বিলগুলিকে মাছ চাষের উপযোগী করে সেখানে দেশি মাছের চাষ করা হবে। সুব্রতবাবু বলেন, “আমাদের রাজ্যের চাহিদা মেটাতে বিহার, অন্ধ্রপ্রদেশ থেকে বড় মাছ আমদানি করা হয়। আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি আগামী দু’বছরে ওই আমদানির পরিমাণ ধীরে ধীরে কমিয়ে এনে মাছ চাষে রাজ্যকে স্বয়ম্ভর করার চেষ্টা হবে। পরবর্তী দু’বছরে রাজ্যে মাছ চাষে বিপ্লব আনব আমরা।” মৎস্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, কোলা বিলে বর্তমানে বছরে ১৫০০ কুইন্টাল মাছ উৎপাদন হয়। এটাকে আড়াই হাজার কুইন্টালে নিয়ে যাওয়া হবে। কোলা বিল মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির সম্পাদক গোবিন্দ বিশ্বাস বলেন, “এই বিলে এক সময় প্রচুর দেশি মাছের চাষ হত। কিন্তু আজ সে সব প্রায় হারিয়ে গিয়েছে। এই অবস্থায় রাজ্য সরকারের এই উদ্যোগ প্রশংসনীয়। এর ফলে মৎস্যপ্রেমীরাও উপকৃত হবেন।”
এ দিনের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বনগাঁর মহকুমাশাসক অভিজিৎ ভট্টাচার্য, বিডিও খোকনচন্দ্র বালা প্রমুখ। এদিন মৎস্যজীবীদের চারাগাছও বিলি করেন মন্ত্রী। |