২১ মে মেদিনীপুর স্টেশনের ১ নং প্ল্যাটফর্মে দাঁড়িয়ে আছি সকালের শিরোমণি প্যাসেঞ্জার ধরব বলে। নাকে একটা বিদঘুটে গন্ধ এল। পাশ ফিরে দেখি, ক’জন বাটিতে করে হাঁড়িয়া-মদ খাচ্ছে। পাশে বিশাল হাঁড়ি নিয়ে বিক্রেতা বসে। অনেকে হাসাহাসি করতে লাগল রেল প্রশাসনের অবস্থা দেখে। কারণ, ওই প্ল্যাটফর্মেই জি আর পি, আর পি এফ এবং স্টেশন ম্যানেজারের অফিস। |
ছোট ছোট ছেলেমেয়েরাও সে সব দেখল এবং বোধহয় অভিজ্ঞ হল বিষয়টিতে। দৃশ্যটি অনেক যাত্রীকেই অস্বস্তিতে ফেলেছে। রেল প্রশাসনে শৃঙ্খলাবোধ ফেরাতে যে আমূল সংস্কার প্রয়োজন, এ সব ঘটনা দেখে তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
সুদর্শন নন্দী। রাঙামাটি, মেদিনীপুর
|
বাতানুকূল কামরায় সাড়ে বত্রিশ ভাজা |
২০০৩ সালের একেবারে শুরু থেকে বছরে বার দুই/তিন শান্তিনিকেতন এক্সপ্রেসে কলকাতা-শান্তিনিকেতন যাতায়াত করে আসছি। প্রথম দিকে এ সি কামরায় মহিলা কর্মীদের কামরা পরিষ্কার করতে দেখতাম। তার পর তারা ধীরে ধীরে অদৃশ্য হয়ে গেল। তাদের জায়গায় দেখা দিল নোংরা, ছেঁড়াখোঁড়া হাফপ্যান্ট শার্ট পরা কিংবা খালি-গা, তথাকথিত রেল-শিশুরা। এক দিক থেকে নোংরা ঝাঁট দিয়ে অন্য দিকে নিয়ে যাওয়া, সিটের পিছনে গোঁজা প্লাস্টিক বোতল ইত্যাদি তুলে নেওয়া, তার পর যাত্রীদের কাছে পয়সার জন্য হাত পাতা এই হল তাদের কাজ। এ সি কামরার এখন যা অবস্থা দেখি, যাত্রী ওঠার আগেই যাবতীয় হকারদের উঠে পড়া। ফলে, নম্বর খুঁজে সিটে যাওয়াই কঠিন হয়ে পড়ে। তার পর এই আড়াই ঘণ্টার যাত্রায় সব রকম হকার, ক্যনভাসার, ভিখিরি, গানের লোকের অবিশ্রান্ত স্রোত। এই এ সি কামরায় কিছু বিদেশি পর্যটক যাত্রীও দেখা যায়। যাঁরা আসেন এ দেশের, অন্তত এই অঞ্চলের নোংরা, আবর্জনা, কুশ্রীতা, ভিড়, হই-হট্টগোল স্বচক্ষে দেখতে। সে সব অবিশ্বাস্য দৃশ্যের ভিডিয়ো তুলে নিয়ে যান দেশে দেখানোর জন্য। দেশীয় যাত্রীদের আচার-আচরণে প্রাইভেট আর পাবলিক প্লেসের তফাত করার লক্ষ্মণ দেখা যায় না। এক জন উচ্চনাদে রেডিয়ো চালালেন। টিকিট চেকারকে গিয়ে অনুযোগ করায় তিনি আমায় গিয়ে তাঁকে থামাতে বললেন। সেটা আমার কাজ নয় বলায় নিতান্ত অনিচ্ছাসত্ত্বেও উঠে গিয়ে সেই যাত্রীকে বিরত করলেন।
তপন রায়। কলকাতা-৭৪ |