বন্যা নিয়ন্ত্রণে উদ্যোগী ভারত-নেপাল |
ভারত নেপাল সীমান্তের মেচি নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণে অবশেষে বড় মাপের পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে দু’দেশের সরকার। ইতিমধ্যেই বিহার, পশ্চিমবঙ্গের উত্তরবঙ্গ বন্যা নিয়ন্ত্রণ কমিশন এবং নেপালের তরফে যৌথ ভাবে সমীক্ষার কাজ শেষ হয়েছে। চলছে ডিটেলস প্রজেক্ট রিপোর্ট (ডিপিআর) তৈরির কাজ। তার পরেই কাজ শুরু হবে। প্রাথমিক ভাবে ঠিক হয়েছে, দু’দেশের তরফেই নদীর পাড়ে বাঁধ তৈরি, বন্যা নিয়ন্ত্রণের ব্যাপারে অন্যান্য কাজ হবে। দার্জিলিং জেলায় মেচি নদীর পাড়ে সীমান্ত সুরক্ষা বলের জওয়ানদের নজরদারির সুবিধার জন্য বাঁধের উপরে রাস্তাও তৈরি করা হবে। শিলিগুড়িতে ওই সমীক্ষা এবং প্রজেক্ট রিপোর্ট তৈরির কাজে রয়েছেন সেচ দফতরের এগজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়র সমর সরকার। তিনি বলেন, “বিহার এবং নেপালের সেচ আধিকারিকদের সঙ্গে আলোচনা করেই ডিটেলস প্রজেক্ট রিপোর্ট তৈরি করা হচ্ছে। সেই রিপোর্ট তৈরি হলে কেন্দ্রীয় জলসম্পদ দফতরের জমা পড়বে। তার পরেই বরাদ্দ মিলবে।” প্রাথমিক ভাবে পুরো প্রক্রিয়া শেষ হতে আরও বছর খানেক গড়িয়ে যাবে বলে মনে করা হলেও মেচি লাগোয়া নকশালবাড়ি এলাকার বাসিন্দারা অবশ্য শেষ পর্যন্ত কাজ শুরু হওয়ায় খুশি। দার্জিলিং জেলায় মূলত নকশালবাড়ি এবং পানিঘাটা এলাকা দিয়ে মেচি বয়ে গিয়েছে। উত্তরবঙ্গের অন্যান্য নদীর মতোই পাহাড় থেকে বয়ে আনা বালি পাথরে প্রতিদিন মেচির নদী খাত উঁচু হয়ে যাচ্ছে। পরিস্থিতি এখন এমনই পাহাড়ে প্রবল বৃষ্টি হলেও নকশালবাড়ির মণিরাম, খড়িবাড়ির রানিগঞ্জ পানিশালি, বিন্যাবাড়ি এলাকার বিস্তীর্ণ অংশ প্লাবিত হয়ে পড়ছে। মেচির ভাঙনে প্রতিদিন নষ্ট হচ্ছে কৃষ্টি জমি। মণিরাম গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় ক্রমশ চওড়া হচ্ছে নদী। এই পরিস্থিতিতে দীর্ঘদিন ধরে মেচি নদীতে বাঁধ নির্মাণের দাবি জানাচ্ছিলেন এলাকার বাসিন্দারা। সেই কাজে সেচ দফতর নামায় খুশি নকশালবাড়ি পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষ সুনীল ঘোষ। তিনি বলেন, “যেভাবে বছরের পর বছর বাসিন্দাদের সমস্যায় পড়তে হচ্ছে তাতে এক বছর অপেক্ষা করতে আপত্তিনেই। তবে কাজটা যেন হয়।” মণিরাম গ্রাম পঞ্চায়েতের বাসিন্দারা সুনীল শৈব্যের বাড়ি মেচি নদীর পাড়েই। তিনি বলেন, “দু’বছর আগেও মেচি নদীতে জলোচ্ছ্বাস হলে পরিবার নিয়ে ঘরবন্দি হয়ে পড়ি। এ বার বাঁধ নির্মাণ হলে এলাকার বাসিন্দারা হাঁফ ছেড়ে বাঁচবেন।” |
পাচার রুখতে নয়া উদ্যোগ মার্কিন দূতাবাসের |
কলকাতার এক অনুষ্ঠানে নারী ও শিশু পাচার-বিরোধী যুদ্ধের একনিষ্ঠ সহযোগী হিসেবে নিজেকে তুলে ধরেছিলেন হিলারি ক্লিন্টন। মার্কিন বিদেশসচিবের কলকাতা-সফরের দু’মাস পরে পাচার-চক্র ভাঙার কাজে সরাসরি মাঠে নামল মার্কিন দূতাবাস। পাচার-বিরোধী আন্দোলনের ভরকেন্দ্র হিসেবে কলকাতাকেই বেছে নিল তারা।
মঙ্গলবার দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা-সংবাদমাধ্যম-প্রশাসনের প্রতিনিধিরা এবং নেপাল ও বাংলাদেশের প্রতিনিধিরা কলকাতার মার্কিন তথ্যকেন্দ্রে এসেছিলেন। হিলারির উৎসাহই যে এই উদ্যোগের প্রেরণা, তা স্পষ্টতই জানাচ্ছে দূতাবাস। নিষিদ্ধপল্লির ফাঁদ থেকে বেরিয়ে আসা আরারিয়ার ক্যারাটে-বিশারদ এক কিশোরীর সঙ্গে কলকাতাতেই দেখা হয়েছিল হিলারির। আমেরিকার ‘ট্র্যাফিকিং ইন পার্সনস’ রিপোর্টেও কলকাতায় হিলারির সঙ্গে দেখা হওয়া মেয়েদের কথা লেখা হয়েছে।
বিভিন্ন দেশেই পাচার-বিরোধী অভিযানকে কূটনীতির উপকরণ হিসেবে ব্যবহার করে আমেরিকা। কিন্তু পাচার-বিরোধী ‘আন্তর্জাতিক নেটওয়র্ক’ গড়ার চেষ্টা এই প্রথম। মার্কিন দূতাবাসের তরফে এ দিন বলা হয়েছে, নেপাল, বাংলাদেশ, ভুটান, মায়ানমার ও চিন-লাগোয়া পূর্ব ভারতে পাচারের সমস্যা আন্তর্জাতিক মাত্রা পেয়েছে। আর কলকাতা তথা পশ্চিমবঙ্গ হল পাচারের উৎস, গন্তব্য ও করিডর। এ দিন রাজ্যের প্রতিনিধি হিসেবে ছিলেন বিদ্যুৎমন্ত্রী মণীশ গুপ্ত। নারী ও শিশু পাচার রুখতে মুখ্যমন্ত্রীর দৃঢ় সংকল্পের কথা জানান তিনি। নেপাল সরকারের সমাজকল্যাণ মন্ত্রকের সচিব কিরণ রূপাখেতি জানান, পাচার-রোধে নেপালের বিভিন্ন জেলার সঙ্গে ভারতের কয়েকটি এলাকার প্রশাসনিক যোগাযোগ গড়ে তোলা হচ্ছে। মার্কিন রাষ্ট্রদূত ন্যান্সি জে পাওয়েল তাঁর বার্তায় বলেন, আলোচনা-চক্রের রিপোর্ট তিনি মার্কিন বিদেশ দফতরে পৌঁছে দেবেন।
|
সংখ্যালঘু সম্পত্তি নিয়ে পাক প্রধানমন্ত্রী |