উধাও হয়েছে পিচের চাদর। সড়ক জুড়ে অসংখ্য খানা খন্দ। বাস-ট্রাক যেতে ধুলোয় মুখ ঢাকছে সড়ক সহ সংলগ্ন এলাকা। ঝমঝমিয়ে বৃষ্টি নামতে জল জমে ছোটখাটো জলাশয়ের চেহারা নিচ্ছে মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুর থেকে গাজোল পর্যন্ত ৮১ নম্বর জাতীয় সড়ক। বেহাল ওই রাস্তায় দুর্ঘটনা রুটিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। কিন্তু তার পরেও কর্তৃপক্ষ মেরামতে উদ্যোগী না হওয়ায় ক্ষুব্ধ মহকুমা এলাকার বাসিন্দারা।
সমস্যার কথা অস্বীকার করেননি জাতীয় সড়ক দফতরের মালদহের (এনএইচ-৭) নির্বাহী বাস্তুকার সুব্রত রায়। তিনি বলেন, “ওই সড়ক মেরামত করা জরুরি। টাকা চেয়ে কেন্দ্রে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। কিন্তু বরাদ্দ না মেলায় কাজ করা সম্ভব হচ্ছে না। তবে সম্প্রতি কিছু টাকা পাওয়া গিয়েছে। তা দিয়ে কাজ শুরু হবে।” চাঁচলের মহকুমাশাসক পলাশ সেনগুপ্ত বলেন, “রাস্তা মেরামতের জন্য জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষকে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে বলেছি।”
জাতীয় সড়ক দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, গাজোল থেকে হরিশ্চন্দ্রপুর পর্যন্ত ৮১ নম্বর জাতীয় সড়কের ৫০ কিলোমিটারের মধ্যে ৩২ কিলোমিটার রাস্তা গত বছর বেহাল হয়ে পড়ে। ওই ৩২ কিলোমিটার রাস্তা সংস্কারের জন্য টাকা চেয়ে প্রস্তাব পাঠানো হয়। কিন্তু বরাদ্দ না মেলায় মেরামতের কাজ শুরু করা সম্ভব হয়নি। এর পরে বাকি রাস্তাও ভেঙে চুরমার হয়েছে। চাঁচল, হরিশ্চন্দ্রপুর তো বটেই। সামসি সহ রতুয়ার বিস্তীর্ণ এলাকার বাসিন্দা ওই জাতীয় সড়ককে চলাচল করেন। স্থানীয় বাসিন্দা ও ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, গত বছর বর্ষার পর থেকে জাতীয় সড়ক পুরোপুরি বেহাল। মালদহে যাতায়াত অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে। শুধু সময় বেশি লাগছে তাই নয়। দুর্ঘটনাও বেড়েছে। সম্প্রতি শ্রীপুরে মাটিবোঝাই ট্রাক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে এক বাড়িতে ধাক্কা মেরে উল্টে গেলে এক দম্পতির মৃত্যু হয়। দু’সপ্তাহ আগে ভবানীপুরে ট্রাকের ধাক্কায় এক ব্যাক্তির মৃত্যু হলে ক্ষুব্ধ জনতা ট্রাকটিতে আগুন দেয়। গত বুধবার ভগবানপুরে একটি বাস নয়নজুলিতে উল্টে ৩০ জন যাত্রী জখম হন। সামসি ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক প্রবীর চৌধুরী বলেন, “এক বছর থেকে জাতীয় সড়ক বেহাল অবস্থায় আছে। দেখার কেউ নেই। কতদিন দুর্ভোগ পোহাতে হবে জানি না!” |