‘গোর্খাল্যান্ড টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন’ (জিটিএ)-এর ভোটে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ১২টি আসন জিততে চলেছে (প্রশাসনিক স্ক্রুটিনিতে কোনও ত্রুটি না মিললে) গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা।
সোমবার মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময়সীমা পেরনোর পরে দেখা গিয়েছে, দার্জিলিঙের ৯টি ও কালিম্পঙের ৩টি আসনে মোর্চা-প্রার্থীদের বিরুদ্ধে কেউ দাঁড়াননি। পাশাপাশি, সিপিএমের তরফেও ‘সন্ত্রাস’-এর অভিযোগে দলের প্রার্থীদের (মোট ১৩ জন) মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করানো হতে পারে, এমন ইঙ্গিত এ দিন পর্যন্ত দেওয়া হয়েছে। নতুন করে এ দিন সিপিএমের কেউ মনোনয়ন জমা দেননি। এই হিসেব মাথায় রেখে মোর্চার একটি সূত্রে দাবি করা হয়েছে, সব ‘ঠিকঠাক’ চললে জিটিএ-র ৪৫টি আসনের মধ্যে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়া কঠিন হবে না তাদের পক্ষে। |
তৃণমূলের তরফে ১৮ জন ও ৪২ জন নির্দল এ দিন মনোনয়ন পত্র দাখিল করেছেন। সব মিলিয়ে মোর্চার ৪৫, সিপিএমের ১৩, তৃণমূলের ১৮ এবং ৪৬ জন নির্দলের মনোনয়নপত্র জমা পড়েছে। ৩ জন নির্দলকে সমর্থনের কথা ঘোষণা করেছে তৃণমূল। দার্জিলিঙের জেলাশাসক তথা জিটিএ-র নির্বাচন অফিসার সৌমিত্র মোহন বলেন, “মনোনয়নপত্র জমা করার শেষ দিনে কোথাও কোনও গোলমাল হয়নি। ভোট-প্রক্রিয়া নিরপেক্ষ ভাবে ও নির্বিঘ্নে সম্পন্ন করতে আমরা দায়বদ্ধ।”
দার্জিলিং জেলা সিপিএমের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক জীবেশ সরকার অবশ্য বলেন, “জিটিএ ভোটের নামে কী হতে চলেছে, সেটা পাহাড়ের মানুষ তো বটেই, গোটা রাজ্যও উপলব্ধি করছে। সন্ত্রাসমুক্ত পরিবেশ না হলে পাহাড়ে অবাধ ভোট সম্ভব নয়। আমাদের প্রার্থীদের হুমকি দেওয়া অব্যাহত। ভোটের নামে এই প্রহসনের অংশীদার আমরা হতে চাই না। সে জন্যই দলের মধ্যে প্রার্থী প্রত্যাহারের ভাবনা জোরদার হচ্ছে।”
তবে সিপিএম নেতাদের ‘প্রকৃত উদ্দেশ্য’ নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন তৃণমূলের দার্জিলিং জেলা সভাপতি তথা উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী গৌতম দেব। তাঁর বক্তব্য, “কার্শিয়াঙে প্রাক্তন সিপিএম সাংসদকে (সমন পাঠক) হেনস্থার অভিযোগ ওঠায় পুলিশ এক জনকে ধরেছে। তা ছাড়া, পুলিশ-প্রশাসন নজিরবিহীন নিরাপত্তার ব্যবস্থাও করেছে। কিন্তু তার পরেও এ দিন সিপিএমের কেউ মনোনয়ন জমা দিতে যাননি। যা দেখে মনে হচ্ছে, জিটিএ ভোটে লড়ার মতো শক্তি সিপিএমের নেই। তাই ওরা জিটিএ ভোট এড়ানোর বাহানা খুঁজছে।”
মোর্চার প্রচার সচিব হরকাবাহাদুর ছেত্রী বলেন, “তৃণমূল জিটিএ ভোটে যোগ দেওয়ায় আমরা খুশি। পাহাড়ে যে অবাধ ভোটের পরিস্থিতি রয়েছে, সেটা আরও স্পষ্ট হল। এখানে এমন অনেক দল রয়েছে যারা প্রার্থী খুঁজে পাচ্ছে না। আবার এমনও দল আছে, যাদের লোকেরা মনোনয়ন জমার পরেও তা প্রত্যাহার করার কথা দলকে জানিয়েছেন। সেই দলের ভোট থেকে সরে দাঁড়ানো ছাড়া উপায় নেই।” |