আবাসন ‘কেলেঙ্কারি’
কোন পথে চলবে তদন্ত, সিদ্ধান্ত নেবেন মুখ্যমন্ত্রী
বাম আমলে ‘জলের দরে’ সরকারি ফ্ল্যাট বিক্রি আর তাকে কেন্দ্র করে পদ্ধতিগত ত্রুটির অভিযোগ ওঠায় তদন্তের সিদ্ধান্ত নিল রাজ্য সরকার। মহাকরণ সূত্রের খবর, এই সংক্রান্ত যাবতীয় সরকারি ফাইল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে পেশ করা হয়েছে। কী ধরনের তদন্ত হবে, তা ঠিক করবেন মুখ্যমন্ত্রী স্বয়ং।
সরকারি ফ্ল্যাট বিক্রি করা নিয়ে আগের আমলে ব্যাপক অনিয়ম হয়েছে বলে অভিযোগ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের। তাদের মূল অভিযোগ হল, বাজারদরের থেকে অনেক কম দামে সরকারি আবাসন বিক্রি করা হয়েছে। তা ছাড়া বিক্রির ক্ষেত্রে সরকারি নিয়ম মানা হয়নি। সরকারের এই অভিযোগ কার্যত উড়িয়ে দিয়েছেন রাজ্যের প্রাক্তন আবাসনমন্ত্রী গৌতম দেব।
বর্তমান সরকারের অভিযোগ, বাম আমলে প্রায় ২০ হাজার সরকারি ফ্ল্যাটের মধ্যে ৪৯৩টি বাজারদরের থেকে অনেক কম দামে বিক্রি করা হয়েছে। এই ভাড়ার সরকারি ফ্ল্যাটগুলি প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য, বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্র, সিটু নেতা শ্যামল চক্রবর্তী, সিপিএমের মহিলা সংগঠনের নেত্রী শ্যামলী গুপ্ত, মৃদুল দে-সহ বহু সিপিএম নেতা কিনেছেন। এই তালিকায় নাম রয়েছে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি প্রদীপ ভট্টাচার্যেরও।
গত বৃহস্পতিবার বিধানসভা অধিবেশনে শাসক দলের একাধিক বিধায়ক এই নিয়ে সরব হন। পরে লিখিত বিবৃতি দিয়ে আবাসনমন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস বলেন, “স্বজনপোষণের উদ্দেশ্যে অসৎ ভাবে নথি তৈরির মাধ্যমে এখনও পর্যন্ত ৪৯৩টি ফ্ল্যাট ৯৯৯ বছরের জন্য লিজ-এর ভিত্তিতে বিক্রি করা হয়েছে। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই দেখা যাচ্ছে, রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব এবং তাঁদের আত্মীয়-পরিজনদের মধ্যে এই হস্তান্তর হয়েছে। কোনও রকম হিসেব নিকেশ ছাড়াই জলের দরে এই ফ্ল্যাটগুলিকে বিক্রি করা হয়েছে।” অরূপবাবু এটিকে বাম-জমানার ‘আবাসন কেলেঙ্কারি’ হিসেবে আখ্যা দিয়ে বলেন, “উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে কিছু রাজনৈতিক নেতা-নেত্রীকে পাইয়ে দিতে বাজার দর থেকে ২০-২৫ ভাগ কম দামে ফ্ল্যাটগুলি বিক্রি করা হয়েছে। এই দুর্নীতির গুরুত্ব বিবেচনা করে এবং সদস্যদের মতামতকে গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করা হবে।” অরুপের আরও দাবি, ফ্ল্যাট বিক্রির ক্ষেত্রে সরকারি নিয়মও মানা হয়নি। আবাসন সচিবের স্বাক্ষর ছাড়াই এই সংক্রান্ত সরকারি বিজ্ঞপ্তি জারি হয়ে গিয়েছে।
বর্তমান আবাসনমন্ত্রীর এই অভিযোগ অবশ্য উড়িয়ে দিয়েছেন প্রাক্তন আবাসনমন্ত্রী গৌতম দেব। তিনি বলেন, “এই অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। এর মধ্যে পদ্ধতিগত কোনও ত্রুটি ছিল না।’’ গৌতমবাবুর দাবি, “সিদ্ধার্থশঙ্কর রায়ের আমলের আগে থেকেই এই ফ্ল্যাটগুলি বিক্রির কথা ভাবা হয়েছিল। কারণ, পাঁচ ও ছয়ের দশকে নির্মিত ওই ফ্ল্যাটগুলি পুরনো হয়ে যাওয়ার কারণে রক্ষণাবেক্ষণে সরকারের প্রচুর অর্থ খরচ হচ্ছিল।” জলের দরে ফ্ল্যাট বিক্রির যে অভিযোগ উঠেছে, তা-ও খারিজ করে দিয়ে গৌতমবাবু বলেন, “দাম নির্ধারণের ক্ষেত্রে জমির বর্তমান বাজারদরই শুধুমাত্র বিচার্য হয়নি। তার সঙ্গে অত্যন্ত পুরনো ওই ফ্ল্যাটগুলির ব্যবহারজনিত ক্ষয়মূল্যে (ডেপ্রিসিয়েশন ভ্যালু)-র হিসেব কষা হয়েছে। তার পরেই দাম চূড়ান্ত করা হয়েছে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.