মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কোচবিহার সফরকে ঘিরে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তার বন্দোবস্ত করছে জেলা পুলিশ। ১০ জুলাই, মঙ্গলবার রাতে মুখ্যমন্ত্রী বাংলাদেশ ও অসম লাগোয়া কোচবিহারে আসছেন। পরদিন বুধবার জেলার পুলিশ, প্রশাসনের শীর্ষ কর্তাদের সঙ্গে বৈঠকের পরে রাজবাড়ি স্টেডিয়ামে আয়োজিত অনুষ্ঠানে মনীষী পঞ্চানন বর্মার নামে একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিলান্যাস-সহ বিভিন্ন প্রকল্পের উদ্বোধন ও ঘোষণা করবেন বলে ঠিক হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর ওই সফর ঘিরেই নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তার বন্দোবস্ত করা হচ্ছে। রাখা হচ্ছে অ্যান্টিমাইন চেকিংয়ের ব্যবস্থাও। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার রাতে জলপাইগুড়ি থেকে সড়কপথে মুখ্যমন্ত্রী কোচবিহারে আসবেন। ওই রাতে কোচবিহার সার্কিট হাউসে থাকবেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রীর যাতায়াতের রাস্তায় নজরদারির পাশাপাশি অ্যান্টিমাইন চেকিংয়ের বন্দোবস্ত করা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর রাত্রিবাসের জায়গা-সহ শহরে তাঁর যাতায়াতের রাস্তাগুলিতেও ওই তল্লাশির ব্যবস্থা হয়েছে। |
এ ছাড়াও থাকছে অ্যান্টি সাবোটেজ দলের নজরদারি। স্নিফার ডগ এনে মুখ্যমন্ত্রীর বৈঠক ও অনুষ্ঠান চত্বর তল্লাশির বিষয়টিও চূড়ান্ত হয়ে গিয়েছে। রাজবাড়ি স্টেডিয়ামে ১১ জুলাইয়ের অনুষ্ঠানের প্রবেশ গেটে মেটাল ডিটেক্টর বসানো হচ্ছে। অনুষ্ঠান শুরুর আগে বম্ব ডিটেকশন কাম ডিসপোজাল স্কোয়াড পুরো এলাকায় তল্লাশি চালাবে। নামানো হচ্ছে পুলিশ, কমব্যাট ফোর্সের জওয়ানদের। শহর ও লাগোয়া এলাকায় নামানো হচ্ছে প্রচুর সাদা পোশাকের পুলিশও। ইতিমধ্যে জেলার বিভিন্ন থানার আধিকারিকদের নিয়ে নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার ব্যাপারে বৈঠক করেছেন জেলা পুলিশের পদস্থ কর্তারা। জেলার পুলিশ সুপার প্রণব দাস বলেন, “মুখ্যমন্ত্রীর সফর ঘিরে অ্যান্টিমাইন চেকিং-সহ নিরাপত্তার সমস্ত ব্যবস্থা করা হচ্ছে। অসম রুটে যাতায়াতকারী যানবাহনে তল্লাশি চালানো হচ্ছে। বাংলাদেশ সীমান্তে নজরদারি বাড়ানোর ব্যাপারে বিএসএফের সঙ্গে কথা হয়েছে।” প্রশাসন সূত্রের খবর, ১০ জুলাই মুখ্যমন্ত্রী কোচবিহার সার্কিট হাউসে থাকবেন। সেটিও সাজিয়ে তোলার পরিকল্পনা হয়েছে। সার্কিট হাউস রঙ করার পাশাপাশি বাহারি গাছের টব দিয়ে সাজিয়ে তোলার কাজ ইতিমধ্যে অনেকটা এগিয়েছে। শহরের দিনহাটা রোড-সহ একাধিক রাস্তাও জরুরি ভিত্তিতে মেরামতের কাজ চলছে। পূর্ত দফতরের এগজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার আশিস সাহা অবশ্য দাবি করেছেন, সার্কিট হাউসে কিছু রুটিন কাজ হচ্ছে। এদিকে রাজবাড়ি স্টেডিয়ামেও মুখ্যমন্ত্রীর অনুষ্ঠান মঞ্চ তৈরির কাজ অনেকটা এগিয়েছে। বৃষ্টির কথা মাথায় রেখে ব্যবস্থা হচ্ছে। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, শহরের বিবেকানন্দ স্ট্রিট লাগোয়া কৃষি খামারের পরিত্যক্ত ২০ একর জমি প্রস্তাবিত বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য চিহ্নিত হয়েছে। রাজবাড়ি স্টেডিয়ামের অনুষ্ঠান মঞ্চ থেকেই ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিলান্যাস-সহ একাধিক প্রকল্পের উদ্বোধন ও ঘোষণা করা হবে। নাটাবাড়ির বিধায়ক তথা তৃণমূলের জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, “জেলার বাসিন্দাদের আবেগের কথা মাথায় রেখে মুখ্যমন্ত্রী বিশ্ববিদ্যালয়ের নামকরণ করেছেন পঞ্চানন বর্মার নামে। ওই দিন তিনি অনুষ্ঠান মঞ্চ থেকেই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিলান্যাসের পাশাপাশি শহরে একটি পঞ্চায়েত ট্রেনিং সেন্টারের ভবন, মাথাভাঙা সুটুঙ্গা সেতুর উদ্বোধন করবেন।” |