নিজস্ব সংবাদদাতা • কৃষ্ণনগর |
বছরখানেক আগে সে ছিল ‘ক্রীড়ামন্ত্রী’!
বাঁকুড়ার জেলাশাসককে টেলিফোন করে নিজের পরিচয় দিয়েছিল, ‘ক্রীড়ামন্ত্রী মদন মিত্র বলছি।’ দাবি ছিল মোটা অঙ্কের টাকা।
নির্দিষ্ট ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে দ্রুত ওই টাকা জমা দেওয়ার ‘নির্দেশ’ দিয়েছিল সে। দিন কয়েকের মধ্যেই, একই গলা, একই টেলিফোন নম্বর থেকে ফোন গিয়েছিল বীরভুমের এক জেলা কর্তার কাছে। এ বার পরিচয়, শিল্পমন্ত্রীর আপ্ত সহায়ক। দাবি একই। মোটা অঙ্কের টাকা। মোবাইলের সূত্র ধরে পুলিশের অবশ্য ওই প্রতারককে খুঁজে বের করতে সময় লাগেনি। বারাসতের একটি ঠিকানা থেকে পলাশ মণ্ডল নামে ওই যুবককে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। প্রতারণার দায়ে জেলহাজত হয়েছিল তার।
তবে জেল থেকে বেরিয়েও তার স্বভাব যে বদলায়নি, একই ঢঙে ফোন করে তারই জানান দিল পলাশ। এ বার তার পরিচয়, ‘অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র বলছি।’ একই দাবিতে এ বার ওই যুবক ফোন করে ছিল হুগলির ডিএমকে। চেনা পেশায়, চেনা গলায় এ বার সে ফোন করেছিল কৃষ্ণনগরের ডনবস্কো পাড়ার নিজের বাড়ি থেকেই। মোবাইলের সূত্র ধরে এ বারও পুলিশের খোঁজ পেতে দেরি হয়নি। শনিবার রাতে বাড়ি থেকেই তাকে গ্রেফতার করা হয়। তার সঙ্গে বেশ কয়েকটি জাল নোটও উদ্ধার করেছে পুলিশ। ধরা পড়ার পরে নির্বিকার গলায় পলাশ জানিয়ে দেয়, “হ্যাঁ, ফোনটা আমিই করেছিলাম।” কেন? স্পষ্ট কোনও উত্তর মেলেনি। তবে পুলিশের একাংশের অনুমান, পলাশ ‘মনোরোগী’।
নদিয়া জেলা পুলিশের এক কর্তা বলেন, “প্রতারক ঠিকই, তবে ছেলেটির মানসিক স্থিতি নিয়েও সন্দেহ রয়েছে। কারণ, ক্রীড়া ও শিল্প মন্ত্রী হওয়ার পরে সাড়া মেলেনি। গ্রেফতারও হয়েছিল। তবু স্বভাব বদলায়নি। একই ঢঙে কেউ এ ভাবে বার বার ফোন করে!” নদিয়ার পুলিশ সুপার সব্যসাচী রমন মিশ্র বলেন, ‘‘ওই যুবক নিজেকে রাজ্যের অর্থমন্ত্রী বলে পরিচয় দিয়ে হুগলির জেলাশাসককে ফোন করে টাকা দাবি করেছিলেন। মোবাইলের সূত্র ধরে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।” খোঁজ নিয়ে পুলিশ জানতে পেরেছে , তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন জেলার বেশ কয়েকটি থানায় প্রতারণা, জালিয়াতি ও চুরির অভিযোগ রয়েছে, অন্তত ২১টি। |