|
|
|
|
তৃণমূলের দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে, সভাত্যাগ কাউন্সিলরদের |
নিজস্ব সংবাদদাতা • তমলুক |
হলদিয়ার বিধায়ক শিউলি সাহাকে নিয়ে তৃণমূলের ‘দ্বন্দ্ব’ আবার প্রকাশ্যে এল। রবিবার তমলুকে ২১ শে জুলাইয়ের প্রস্তুতি সভায় শিউলদেবীর উপস্থিতির প্রতিবাদ জানিয়ে সভাস্থল ছাড়লেন হলদিয়া পুরসভার ১১ জন তৃণমূল কাউন্সিলর। দলের রাজ্য সভাপতি তথা সাংসদ সুব্রত বক্সীর সামনেই ঘটল এই ঘটনা।
সেই সময় সুব্রতবাবু বলেছিলেন, “ওঁরা (১১ জন) তো বললেন, কাজ আছে বলে সভায় থাকতে পারবেন না!” পরে অবশ্য তিনি দাবি করেন, “আমার সামনে এমন কোনও ঘটনা ঘটেনি। শিউলি অনেক আগেই সভায় এসেছিল। আমি পরে গিয়েছি। কিন্তু এমন কিছু ঘটেছে বলে জানি না।” যদিও যাঁর নেতৃত্বে ওই ১১ জন সভা ছেড়েছেন, হলদিয়া পুরসভার সেই বিরোধী দলনেতা দেবপ্রসাদ মণ্ডলের বক্তব্য, “রাজ্য সভাপতি যা ইচ্ছে বলতে পারেন। কিন্তু আমরা ওঁকে জানিয়েছি, শিউলি সাহার উপস্থিতির প্রতিবাদে সভায় থাকছি না।”
বস্তুত, হলদিয়া পুর-নির্বাচনের আগে থেকেই ‘অধিকারী পরিবারের’ সঙ্গে শিউলিদেবীর বিরোধ প্রকাশ্যে এসেছিল। পুরভোটে হারের পর দলীয় নেতৃত্বের একাংশ স্বীকার করেন, এই ‘বিরোধ’ পরাজয়ের অন্যতম কারণ। |
|
২১ শে জুলাইয়ের প্রস্তুতি সভায় শিশির অধিকারী, সুব্রত বক্সী।
পিছনে বসে শিউলি সাহা। ছবি: পার্থপ্রতিম দাস |
২১ জুলাই, শহিদ তৃণমূলের শহিদ স্মরণ। এ দিন দুপুরে তারই প্রস্তুতি সভা ছিল শালগেছিয়ায় তমলুক পুরসভার সুবর্ণজয়ন্তী ভবনে। প্রধান অতিথি ছিলেন সুব্রত বক্সী, তৃণমূলের পূর্ব মেদিনীপুর জেলা সভাপতি শিশির অধিকারী। তৃণমূল সূত্রের খবর, জেলার বিধায়ক, পঞ্চায়েত প্রধান, পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি এবং পুর-প্রতিনিধিদের সভায় ডাকা হয়েছিল।
শিউলিদেবীর দাবি, তাঁকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। রাজ্য সভাপতি আসছেন জেনে তিনি সভায় যান। সভাস্থলে এসে মঞ্চে উঠে পড়েন শিউলিদেবী। পটাশপুরের বিধায়ক জ্যোতির্ময় কর যখন বক্তৃতা দিচ্ছেন, তখন সভাকক্ষে ঢোকেন হলদিয়া পুরসভার ১১ জন কাউন্সিলর। মঞ্চে শিউলিদেবীকে বসে থাকতে দেখে তাঁরা ‘উষ্মা’ প্রকাশ করেন। দেবপ্রসাদ মণ্ডলের নেতৃত্বে ১১ জন মঞ্চে উঠে সুব্রতবাবুর সঙ্গে কথা বলেন। তার পর মঞ্চ থেকে নেমে একযোগে সভাকক্ষ ছাড়েন তাঁরা।
দেবপ্রসাদবাবু সভা থেকে বেরিয়ে বলেন, “শিউলি সাহার জন্যই পুরভোটে আমাদের হার হয়েছে। তার পরেও উনি সভামঞ্চে বসে। প্রতিবাদে আমরা সভা বয়কট করেছি। রাজ্য সভাপতিকে সব জানিয়েছি।” হলদিয়ার বিধায়কের প্রতিক্রিয়া, “দেবপ্রসাদবাবু বয়সে বড়। এই ঘটনা নিয়ে আমার কোনও প্রতিক্রিয়া নেই। যা বলার দলনেত্রীকে বলব।”
সভায় সুব্রতবাবু অবশ্য জানিয়ে দিয়েছেন যে, এই জেলায় ‘অধিকারীদের নিয়ন্ত্রণ’-ই থাকছে। তৃণমূল রাজ্য সভাপতির কথায়, “কোথায় কী হচ্ছে, সব দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নজরে আছে। তিনিই শিশির অধিকারীকে এই জেলার সভাপতি করেছেন। সেটা কারও পছন্দ না-ও হতে পারে! কিন্তু তাঁর বিরুদ্ধাচরণ করা যাবে না। তাঁর অধীনেই কাজ করতে হবে!” নির্দিষ্ট ভাবে না বললেও এই বার্তার অভিমুখ শিউলিদেবী বলেই তৃণমূল নেতৃত্বের একাংশ মনে করছেন।
সভায় শিউলিদেবীকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি বলে মানতে চাননি শিশিরবাবু। তাঁর বক্তব্য, “নিশ্চয়ই ওঁকে ডাকা হয়েছিল।” |
|
|
|
|
|