ছ’বছরের শিশু বাঁচিয়ে দিয়ে গেল অন্যদের। তাঁদের শরীরেই নতুন প্রাণ পেল তার শরীরের অংশগুলি।
টোকিও শহরে এক পথ দুর্ঘটনায় মাথার ভিতরে আঘাত লেগে প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়েছিল ছেলেটার। বাইরে থেকে বোঝাও যায়নি। মাত্র কয়েক দিন হাসপাতালে ভর্তি থাকার পর অবশেষে বৃহস্পতিবার চিকিৎসকরা জানালেন যন্ত্র দিয়ে তার শরীরের বিভিন্ন প্রত্যঙ্গকে সচল রাখা হলেও মস্তিষ্কের মৃত্যু হয়েছে। আর করার কিছু নেই।
বাবা-মা চাইলেন না আর পাঁচটা ছেলের মতো নিজের ছেলেরও শুধু শেষকৃত্য করতে। বরং ছেলের শরীরের কোনও অংশ যদি আর কারও জীবন বাঁচাতে কাজে লাগে তবে তাতেই শান্তি পাবেন তাঁরা।
ভেবে শান্তি পাবেন অন্যের শরীরে হলেও বেঁচে আছে তাঁদের আদরের সন্তান।
বিজ্ঞানকে হাতিয়ার করলে প্রায় সব ইচ্ছেই সম্ভব হতে পারে। এমনটারই সঙ্গে সঙ্গে প্রমাণ দিলেন জাপানের চিকিৎসক মহল। তাঁদের চেষ্টায় মাত্র এক দিনের মধ্যে ছেলেটির দেহ প্রাণ ফেরাল আরও তিনটি প্রাণের। প্রথমে ছেলেটির হৃৎপিণ্ড প্রতিস্থাপিত হল ১০ বছরেরও কম বয়সের অন্য একটি শিশুর শরীরে। সবচেয়ে কম বয়সে হৃৎপিণ্ড গ্রহণ করে এই শিশুটি আবার চিকিৎসা জগতে নজির তৈরি করল। তার পর কিডনি দু’টি দেওয়া হল এক ৬০ বছরের মহিলাকে। আর যকৃৎ দেওয়া হল ১০ বছরের একটি মরণাপন্ন মেয়েকে।
দু’বছর আগেও জাপানে এ কাজ করা যেত না। বাধা ছিল আইন। ২০১০ সালে নতুন নিয়ম চালু হয়। সেই নিয়মে জানানো হয়, মস্তিষ্কের মৃত্যুর পর ব্যক্তির বয়স ১৫ বছরের নীচে হলেও তার অঙ্গ অন্যের শরীরে প্রতিস্থাপন করা যাবে। পরিবর্তে ব্যক্তির মস্তিষ্কের মৃত্যু হয়েছে তার প্রমাণ সরকারি দফতরে জমা দিতে হবে। তার পরে এই প্রথম এত ছোট শিশুর অঙ্গ নিয়ে প্রতিস্থাপন করলেন চিকিৎসকরা এবং পেলেন সাফল্যও। |