চিকিৎসায় ‘গাফিলতি’তে এক প্রসূতির মৃত্যু হয়েছে এই অভিযোগকে কেন্দ্র করে রবিবার সকালে উত্তেজনা ছড়াল চন্দননগর মহকুমা হাসপাতালে। পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়। পুলিশ জানিয়েছে মৃতের নাম রাখী মালাকার (২৩)।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শনিবার রাত ৯টা নাগাদ চাঁপদানির বাসিন্দা রঞ্জিত মালাকারের স্ত্রী রাখীদেবীকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। রাত পৌনে ১২টা নাগাদ অস্ত্রোপচার করে তিনি একটি পুত্রসন্তান প্রসব করেন। ভোর ৩টে নাগাদ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বাড়ির লোকজনকে জানান, রাখীদেবী মারা গিয়েছেন। এর পরে চিকিৎসায় গাফিলতিতেই তাঁর মৃত্যু হয় বলে বাড়ির লোকেরা অভিযোগ তোলেন। রঞ্জিতবাবু জানান, প্রসবের পরে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তরফে তাঁদের জানানো হয় রাখীদেবীর অবস্থা ভাল নয়। রক্ত লাগবে। চন্দননগর ব্লাড ব্যাঙ্ক থেকে বলা হয়, রক্ত নেই। তখন রঞ্জিতবাবুরা চুঁচুড়া হাসপাতালের উদ্দেশ্যে রওনা হন রক্ত আনার জন্য। |
ঘটনার পরে হাসপাতালে পুলিশ। ছবি: তাপস ঘোষ। |
মাঝপথে হাসপাতাল থেকে মোবাইলে তাঁদের জানানো হয়, রক্ত লাগবে না। রঞ্জিতবাবু বলেন, “আমরা চন্দননগর হাসপাতালে ফিরে গিয়ে দেখি স্ত্রী-কে রক্ত দেওয়া হচ্ছে। আমাদের ওয়ার্ডের বাইরে বের করে দেওয়া হয়। কর্তব্যরত চিকিৎসকের কাছে স্ত্রী-র অবস্থা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এখন কিছু বলতে পারব না’। এরপর ওই চিকিৎসক হাসপাতাল ছেড়ে চলে যান। ভোর ৩টে নাগাদ হাসপাতালের পক্ষ থেকে আমাদের জানানো হয় ছেলে ভাল আছে, কিন্তু রাখীর মৃত্যু হয়েছে। ভুল চিকিৎসাতেই ও মারা গেল। কোথা থেকে রক্ত নিয়ে স্ত্রী-কে দেওয়া হচ্ছিল, তা বলতে পারব না।”
রাখীদেবীর মৃত্যুর খবর চাউর হতে ভোর থেকেই প্রতিবেশীরা হাসপাতালে জড়ো হতে থাকেন। উত্তেজনা ছড়ায়। বেগতিক বুঝে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ চন্দননগর থানায় খবর দেন। বিশাল পুলিশ বাহিনী ঘটনাস্থলে পৌছয়। হাসপাতালের গাফিলতিতে রাখীর মৃত্যু হয়েছে বলে রাতে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন তাঁর বাপের বাড়ির লোকেরা। হাসপাতালের সুপার অসীম প্রামাণিক বলেন, “চিকিৎসার গাফিলতিতে মৃত্যুর ব্যাপারে লিখিত কোনও অভিযোগ পেলে গুরুত্ব দিয়ে তা দেখা হবে।” |