নিজস্ব সংবাদদাতা • দার্জিলিং ও শিলিগুড়ি |
শ্যামল সেন কমিটির সুপারিশের বিরোধিতায় তাদের পূর্বঘোষিত যে সব আন্দোলন-কর্মসূচি ছিল, সেগুলি প্রত্যাহার করা হবে কি নাআজ, সোমবার জানাবে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা। রবিবার পাহাড়ে ফিরে মোর্চার প্রচার সচিব তথা কালিম্পংয়ের বিধায়ক হরকা বাহাদুর ছেত্রী বলেন, “সোমবার দলের কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠক রয়েছে। তার পরেই সভাপতি বিমল গুরুঙ্গ পরবর্তী সিদ্ধান্ত জানাবেন।”
শ্যামল সেন কমিটির রিপোর্ট প্রকাশ হওয়ার পরে গত ১০ জুন বিমল গুরুঙ্গ টানা আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করেন। ২৭ জুন পাহাড়ের চার পুরসভায় (দার্জিলিং, কালিম্পং, কার্শিয়াং এবং মিরিক) দলীয় চেয়ারম্যান, কাউন্সিলরদের পদত্যাগ, ২, ৩ এবং ৪ জুলাই পাহাড়, তরাই ও ডুয়ার্সে বন্ধ, ১৭ জুলাই চার বিধায়কের পদত্যাগ এবং গোর্খাল্যান্ড টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (জিটিএ) চুক্তির প্রতিলিপি পোড়ানো হবে বলে জানানো হয় মোর্চার তরফে। পরবর্তী কালে চেয়ারম্যান ও কাউন্সিলরদের পদত্যাগের সিদ্ধান্ত থেকে পিছিয়ে আসে মোর্চা। যদিও শ্যামল সেন কমিটির সুপারিশের বিরোধিতায় যুব মোর্চার রিলে অনশন এ দিনও চলেছে। যুব মোর্চার দার্জিলিং টাউন কমিটর সভাপতি ত্রিলোক ছেত্রী বলেন, “দলের তরফে এখনও আমাদের অনশন কর্মসূচি প্রত্যাহার করতে বলা হয়নি।”
তবে পাহাড়ের রাজনীতির নিয়মিত পর্যবেক্ষকদের অনুমান, যে সমস্ত তথ্যের ভিত্তিতে শ্যামল সেন কমিটি সুপারিশ করেছে, তাতে তথ্যগত ত্রুটি রয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখতে রাজ্য সরকার নতুন কমিটি গড়ায় এবং আন্দোলন করে জনজীবন স্তব্ধ করে দেওয়ার রাজনীতিতে পাহাড়বাসীর একটা বড় অংশের আপত্তির কথা মাথায় রেখে আপাতত আন্দোলনের রাস্তা থেকে সরতে পারে মোর্চা। ঘটনা হল, পাহাড়ে এখনও প্রচুর পর্যটক রয়েছেন। কিন্তু বর্ষা শুরু হয়ে যাওয়ায় সেখানে ধসের আশঙ্কাও বাড়ছে। শনিবার রাতেই লেবংয়ে ধস নেমেছে। সে জন্য পাহাড়ের বাসিন্দাদের একটা বড় অংশ মনে করছেন, এই পরিস্থিতিতে বন্ধ বা নতুন আন্দোলন হলে মানুষ সমস্যায় পড়বেন। আন্দোলনের জন্য প্রাকৃতিক দুর্যোগের মোকাবিলায় প্রশাসনকে যাতে কোনও বাধার মুখে পড়তে না হয়জনতার এই বার্তাও পৌঁছেছে মোর্চা নেতাদের কানে। তা ছাড়া, মোর্চার অন্দর সূত্রের খবর, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে শনিবারের বৈঠকের পরে ‘সন্তুষ্ট’ দলের অনেক শীর্ষ নেতাই। তাঁরা মনে করছেন, সরকার নতুন কমিটি গড়ায় তাঁরা অনেকটাই ‘চাপমুক্ত’ হওয়ার সুযোগ পেয়েছেন।
মোর্চার কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য বিনয় তামাং বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী আমাদের দাবি মেনে কমিটি গঠন করেছেন, এটা ঠিক। আন্দোলন জারি রাখা হবে কি না, বা পরবর্তী কর্মসূচি কী হবে সোমবার কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকের পরেই তা বলা সম্ভব।” |