|
|
|
|
স্মৃতির জোরে সফল সুপ্রিয়া |
নিজস্ব সংবাদদাতা • রানিবাঁধ ও বিষ্ণুপুর |
জন্ম থেকেই পৃথিবীর আলো দেখার সৌভাগ্য হয়নি। সেই সঙ্গে তাঁর সঙ্গী দারিদ্র। এ সব অবশ্য দমাতে পারেনি রানিবাঁধের হাসপাতাল মোড়ের বাসিন্দা সুপ্রিয়া গড়াইকে। অন্য দিকে, বাঁকুড়ার জয়পুরের কারকবেড়িয়া গ্রামের মণিমালা দে-ও দারিদ্রের প্রতিবন্ধকতা নিয়ে লড়াই চালাচ্ছেন।
বাসুদেব গড়াইয়ের দুই ছেলে-মেয়ের মধ্যে বড় সুপ্রিয়া। জন্ম থেকে সুপ্রিয়া চোখে দেখতে পান না। এই প্রতিবন্ধকতা সত্ত্বেও কলা বিভাগের এই কৃতী ছাত্রী পাঁচটি বিষয়েই লেটার পেয়েছেন। তাঁর প্রাপ্ত নম্বর ৪২৬। তাঁর
|
সুপ্রিয়া গড়াই। |
|
মণিমালা দে। |
ইচ্ছে ইংরেজি নিয়ে পড়াশোনা করে শিক্ষিকতা করা। তাঁর মা কল্পনাদেবী বলেন, “মেয়ের স্মৃতিশক্তি প্রখর। ক্লাসে মন দিয়ে পড়া শুনে বাড়িতে এসে সেটা টেপে রেকর্ডিং করে রাখত। উচ্চমাধ্যমিকে এক সহকারি লেখক নিয়ে পরীক্ষা দিয়েছে। পড়াশোনার পাশাপাশি মেয়ে গান, নাচ ও আবৃত্তিতে যথেষ্ট পারদর্শী।” ছোট গুমটি থেকে কোনও ভাবে সংসার চলে। এখন মেয়ের উচ্চশিক্ষার খরচ জোগাবেন কোথা থেকে তা নিয়ে চিন্তিত তাঁরা। সুপ্রিয়া অবশ্য আশাবাদী, “কষ্ট করে পড়াশোনা করে আমি বড় হতে চাই।” রানিবাঁধ হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক শম্ভুনাথ পাইন বলেন, “সুপ্রিয়ার সাফল্যে আমরা গর্বিত।” আর মণিমালা ৪৫৯ নম্বর পেয়ে উচ্চ-মাধ্যমিকে নিজের স্কুলে সেরার সম্মান পেয়েছেন। এ বার তিনি রাজগ্রাম শশিভূষণ রাহা ইনস্টিটিউশন থেকে উচ্চ মাধ্যমিক দিয়েছেন। তাঁর ইচ্ছে, রসায়ন নিয়ে গবেষণা করা। তবে তাঁর বাবা-মা দু’জনেই সামান্য জমিতে চাষ করে সংসার চালান। মণিমালার কথায়, “বই কেনার সামর্থ নেই। বইয়ের যোগান থেকে শুরু করে সব বিষয়ে বিনা পয়সায় টিউশন পড়ানো-- সবই করেছেন আমার স্কুলের শিক্ষকেরা।” বাবা জটাধারী দে বলেন, “মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকের সময় শিক্ষকেরা সাহায্য করায় মেয়ে পাশ করেছে। এ বার কী হবে জানি না।”
|
(তথ্য: দেবব্রত দাস ও স্বপন বন্দ্যোপাধ্যায়। নিজস্ব চিত্র।) |
|
|
|
|
|