বাঁধ বাঁধার টাকা নেই, জানিয়েছে সেচ দফতর
প্লাবনের আশঙ্কা নিয়ে রাত জাগছেন গ্রামের মানুষ
০০৯ সালের মে মাসে ভয়ঙ্কর আয়লায় দক্ষিণ ২৪ পরগনার নামখানায় বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে ভেঙে গিয়েছিল মুড়িগঙ্গা নদীর বাঁধ। প্লাবিত হয়েছিল প্রচুর গ্রাম। তার পরে কেটে গিয়েছে কয়েকটা বছর। কিন্তু ক্ষতিগ্রস্ত সেই নদীবাঁধ পাকাপাকি ভাবে মেরামত আর হয়নি। অন্তত এমনই অভিযোগ ওই সমস্ত এলাকার মানুষের। ফলে ফি বছর কি বর্ষায়, কি ভরা কোটালে বাঁধ ভেঙে জল ঢুকে পড়ছে এলাকায়। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, বাঁধ পাকাপোক্ত ভাবে মেরামতির জন্য তাঁরা বার বার পঞ্চায়েত থেকে প্রশাসনের সর্বত্র দরবার করেছেন। কিন্তু বাঁধের পাকাপাকি সংস্কার নিয়ে কেউই কেমন মাথা ঘামায়নি।
নামখানার উত্তর নারায়ণগঞ্জ গ্রামের কাছে মুড়িগঙ্গার ভাঙন। ছবি: দিলীপ নস্কর।
নামখানা ব্লকের নামখানা গ্রাম পঞ্চায়েতের উত্তর নারায়ণগঞ্জ গ্রামের কাছে আয়লার সময় বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে মুড়িগঙ্গা নদীর বাঁধ ভেঙে যাওয়ায় প্লাবিত হয় বেশ কিছু এলাকা। আয়লার পরে কোনওমতে তাপ্পি দিয়ে বাঁধের ভাঙা অংশ মেরামত করে দেওয়া হয়। কিন্তু প্রতিবছর বর্ষা আর ভরা কোটালে জলেক চাপে সেই বাঁধ ফের ভেঙে প্লাবিত হচ্ছে গ্রাম। লক্ষ লক্ষ বাঁধ মেরামিততে খরচ করা হলেও তা যে কোনও কাজেই আসেনি তা নিয়েই ক্ষুব্ধ এলাকার মানুষ। গত বছর বর্ষায় ভরা কোটালে নদীবাঁধ ভেঙে এলাকা প্লাবিত হওয়ার কারণে প্রায় ৩০টি পরিবারকে অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। বেশ কিছু বাড়ি তলিয়ে যায়। ক্ষতি হয় চাষের। এত সব সত্ত্বেও এই এলাকায় বাঁধ রক্ষার ব্যাপারে সেচ দফতরের কোনও হেলদোল নেই বলে অভিযোগ গ্রামবাসীদের। স্থানীয় উত্তর নারায়ণপুর গ্রামের কাছে কয়েক কিলোমিটার নদীবাঁধের মধ্যে বিপজ্জনক অবস্থায় রয়েছে প্রায় দেড় কিলোমিটার অংশ। দিন কয়েক আগে ভরা কোটালে জোয়ারে জল ঢুকে পড়ে গ্রামে। বর্ষার আর দেরি নেই। এই অবস্থায় অবিলম্বে বোল্ডার ফেলে পাকাপোক্ত ভাবে বাঁধ না সারালে তাঁদের যে ফের ভাসতে হবে তা নিশ্চিত জানেন এলাকার মানুষ।
গত বছর এই ভাবেই মুড়িগঙ্গায় তলিয়ে গিয়েছিল ধনঞ্জয় বরের ভিটে। আশ্রয় জুটেছিল ত্রাণশিবিরে। পরে আবার বাঁধের পাশে কুঁড়েঘর তৈরি করে বসা করতে শুরু করেছেন। গলায় একই সঙ্গে ক্ষোভ আর হতাশা নিয়ে জানালেন, “সেচ দফতর ঠিকমতো বাঁধ সারালে আজ আমাকে ভিটে হারাতে হত না। এখনও যদিও ওরা পাকাপাকি ভাবে বাঁধ না সারায় তাহলে আমার মতো অনেকেই ভিটে হারাবে।”
স্থানীয় বাসিন্দা কানাই বেরা বলেন, “বার বার বাঁধ ভাঙছে। বাঁধের এখন যা অবস্থা তাতে এ বার বর্ষাতেও আমাদের ভাসতে হবে। অথচ সেচ দফতর কিছু করছে না।”
নামখানা পঞ্চায়েত সমিতির সহ সভাপতি কুমারেশ পণ্ডা বলেন, “দীর্ঘদিন ধরেই বাঁধের খারাপ অবস্থা। এই এলাকায় কংক্রিটের বাঁধ তৈরির জন্য সেচমন্ত্রীকে অনুরোধ করা হয়েছে। তাঁকে বর্তমান পরিস্থিতিও জানানো হয়েছে। কিন্তু এখনও সে ভাবে কিছুই কাজ হয়নি।”
যাঁদের বিরুদ্ধে বাঁধ মেরামতি নিয়ে অভিযোগের আঙুল তুলেছেন স্থানীয় মানুষ সেই সেচ দফতরের মৌসুনি সাব-ডিভিশনের সহকরী বাস্তুকার বিশ্বজিৎ চক্রবর্তী বলেন, “আমরা সমস্যার কথা জানি। কিন্তু আর্থিক কারণেই পাকাপাকিভাবে বাঁধ মেরামতির কাজ করা যাচ্ছে না। তবে সামনে ভরা কোটালের আগে যতটা সম্ভব মাটি ফেলে বাঁধ মেরামতির ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.