|
|
|
|
পঞ্চায়েতের অঙ্কে অস্বস্তি দু’পক্ষেই |
জটিল পরিস্থিতি মোকাবিলায় আহ্বান দীপকের |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
গত এক বছরে কৃষি, শিল্প, শিক্ষা, সংস্কৃতি সব ক্ষেত্রেই পিছিয়েছে রাজ্য। অর্জিত অধিকার আক্রান্ত-বিপন্ন। এমনই দাবি করে ‘জটিল পরিস্থিতি’ মোকাবিলায় জনগণকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানালেন সিপিএমের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সম্পাদক দীপক সরকার। রবিবার এক রক্তদান শিবিরের উদ্বোধন করতে গিয়ে তিনি বলেন, “আমরা জটিল পরিস্থিতির মধ্যে রয়েছি। আমাদের গাফিলতি, ত্রুটি-বিচ্যুতির বিরুদ্ধে জেহাদ ঘোষণা করে রাজ্যের মানুষ নতুন সরকারের পক্ষে রায় দিয়েছিলেন। ১৩ মাস পেরিয়েছে। তবে মানুষের সেই প্রত্যাশা পূরণ হয়নি।” এরপর তাঁর মন্তব্য, “আমাদের আবেদন এই ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি মোকাবিলায় জনগণ এগিয়ে আসুন। এই জটিল পরিস্থিতি মোকাবিলা করেই আমাদের এগিয়ে যেতে হবে।” |
|
শিবিরে দীপক সরকার। |
একদা ‘লালদুর্গ’ বলে পরিচিত এই জেলায় এখনও সে ভাবে ‘ঘুরে দাঁড়াতে’ পারেনি সিপিএম। ‘হারানো’ জমি পুনরুদ্ধারের কাজ এগিয়েছে নামমাত্র। এই পরিস্থিতিতে জেলা সম্পাদকের এই মন্তব্য তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। রবিবার সিপিএমের জেলা কার্যালয়ে এক রক্তদান শিবিরের আয়োজন করা হয়। শিবিরের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে দীপকবাবু বলেন, “গত ১৩ মাসে নতুন সরকারের কাজকর্মে সাধারণ মানুষের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। কৃষি-শিল্প-শিক্ষা-সংস্কৃতি সব ক্ষেত্রে এক নৈরাজ্য চলছে।” পাশাপাশি তাঁর অভিযোগ, “আমাদের ৫০০-৬০০ কর্মী এখনও ঘরছাড়া। এলাকায় ফিরতে পারছেন না। এলাকায় মিছিল হলে, যাঁরা নেতৃত্ব দিচ্ছেন, তাঁদের মারধর করা হচ্ছে। অর্জিত অধিকার আক্রান্ত-বিপন্ন। দলীয় কর্মী- সমর্থকদের নামে মিথ্যে মামলা হচ্ছে। এই পরিস্থিতি চলতে পারে না।” জটিল পরিস্থিতির কথা মানুষ ধীরে ধীরে বুঝতে পারছেন বলেও দাবি করেন জেলা সম্পাদক। তিনি বলেন, “মহিলা কমিশনের রিপোর্ট বলছে, রাজ্যে গত এক বছরে নারী নির্যাতন-ধর্ষণ দ্বিগুণ হয়েছে। কৃষক আত্মহত্যার ঘটনা ঘটছে। মানুষ ধীরে ধীরে পরিস্থিতি বুঝতে পারছেন।”
রাজ্যে পালাবদলের পর এক সময় জেলায় থমকে যেতে হয়েছে বলেও এ দিন স্বীকার করেন দীপকবাবু। তাঁর কথায়, “গণতান্ত্রিক অধিকার রক্ষার লড়াই চলে। কখনও সাফল্য আসে। কখনও থমকে যেতে হয়। এমন পরিস্থিতি এ জেলাতেও হয়েছে। তবে অর্জিত অধিকার রক্ষার আন্দোলন চলছেই।” সিপিএমের এক জেলা নেতার ব্যাখ্যা, “পরিস্থিতি এখনও প্রতিকূল। তাই সবটা জেনেবুঝে সচেতনতা ও সক্রিয়তার মাত্রা বাড়িয়ে আমরা দলীয় কর্মীদের এগোতে বলেছি। হতাশা নয়, আত্মসমর্পণ নয়, হঠকারিতাও নয়। এখন পরিস্থিতি জটিল। তাই এই জটিলতার মধ্যেই এগোতে হবে। গত এক বছরে এ ভাবে এগোনোর পথে কখনও থমকে দাঁড়াতে হয়েছে। জেলা সম্পাদক তাঁর বক্তব্যে এ কথাই বলতে চেয়েছেন।” অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য হরেকৃষ্ণ সামন্ত-সহ দলীয় নেতৃত্ব। শিবিরে ৩০৩ জন রক্তদান করেন। সিপিএমের জেলা সম্পাদক দীপক সরকার জানান, গ্রীষ্ণকালীন রক্তের চাহিদা মেটাতেই এই উদ্যোগ। প্রতি বছরই এমন শিবির হয়। এ দিকে, মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের এক চিকিৎসকের আত্মহত্যার ঘটনায় দীপকবাবুর নাম জড়িয়েছে। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। এ প্রসঙ্গে জেলা সম্পাদক তাঁর ঘনিষ্ঠ মহলে জানিয়েছেন, এটি মিথ্যে মামলা। তিনি মেদিনীপুর ছেড়ে যাবেন না। বিষয়টি নিয়ে দলীয়স্তরে আলোচনা করেই যা পদক্ষেপ করার করবেন।
|
|
|
|
|
|