দুই ম্যাচে চার পয়েন্ট নিয়ে দু’টো দলই সি গ্রুপের শীর্ষে। সোমবার জেতার জন্য দু’টো দলই মরিয়া। দু’টো দলই ইতালির ‘বিস্কুট’ থিওরিতে রাগে থর থর করছে।
আর সে জন্যই দানস্ক শহরের স্পেন বনাম ক্রোয়েশিয়া মনে রাখার মতো একটা লড়াই হয়ে থাকবে, ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন জাভি হার্নান্ডেজ। স্প্যানিশ মিডফিল্ডারের কথায়, “আসাধারণ ম্যাচ হতে চলেছে। যেটা ফ্যানরা তো মনে রাখবেই, প্লেয়াররাও মনে রাখবে।” জাভির কথায় স্পষ্ট, ‘বিস্কুট’ থিওরি তাঁদের জেতার জন্য বাড়তি তাতিয়ে দিয়েছে। “আমরা নিজেদের ক্ষমতার জোরেই কোয়ার্টার ফাইনালে যাব। জিতে গ্রুপে এক নম্বর হওয়া একমাত্র লক্ষ্য। ড্র করার জন্য খেলি না। ওটা আমাদের স্টাইল নয়।”
‘বিস্কুট’ গুঁড়ো গুঁড়ো করে দিচ্ছেন ক্রেয়েশিয়ার কোচ স্লাভেন বিলিচও। তীব্র ব্যঙ্গ মিশিয়ে বলেছেন, “আরে বাবা, হার বা জিতের মতো ২-২ টাও তো একটা রেজাল্ট! তার থেকে বেশি কিছু বলে ধরে নেওয়ার কোনও কারণ আছে কি?” তার পরেই যোগ করেছেন, “এ রকম অভিযোগ তোলা মানে আমাদের জাত্যভিমানে আঘাত দিয়ে গোটা দেশকে অপমান করা।” |
স্পেন অনুশীলনে জাভি। ছবি: রয়টার্স |
ক্রোয়েশিয়া যদি জাত্যভিমানের জন্য খেলে তা হলে স্পেন সোমবার মাঠে নামছে ইতিহাসের হাতছানি সামনে রেখে। “টানা দু’বার ইউরো জিতে ইতিহাস গড়ার সুযোগ আমাদের সামনে। আর সেটা হাতছাড়া করতে চাই না,” বলেছেন জাভি। স্প্যানিশ রূপকথা লেখায় যাঁর ভূমিকা সব থেকে বড়, সেই ভিনসেন্ট দেল বস্কির সঙ্গে এ দিনই আগামী বিশ্বকাপ পর্যন্ত চুক্তি করে নিল স্পেন। বিলিচ যেখানে নিজের ছেলেদের সোমবার ‘জীবনের সেরা ম্যাচ’ খেলতে বলেছেন, সেখানে অনেক খোলা মনে বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের কোচ। দেল বস্কিকে যেটা ভাবাতে পারে, সেটা হল জাবি আলন্সো, আলভারো আরবিলোয়া আর ফের্নান্দো তোরেসের হলুদ কার্ড।
ক্রোয়েশিয়ার বিরুদ্ধেও তোরেসকে সামনে রেখে আক্রমণ সাজানোর কথা ভাবছেন দেল বস্কি। স্প্যানিশ কোচের কথায়, “আইরিশদের বিরুদ্ধে তোরেস একেবারে আদর্শ ম্যাচ খেলেছিল। ওর গতি আর মুভমেন্টকে দারুণ ভাবে কাজে লাগানো গিয়েছে। তাই ফাব্রেগাসের উপর আমার আস্থা আগের মতো একই রকম থাকলেও তোরেস একটা বিকল্প।” প্রথম ম্যাচে কোনও ফরোয়ার্ড না খেলানোর ছকটা যে জমেনি, সেটা মেনে নিয়ে বলেছেন, “যাঁরা মনে করেন তোরেসের প্রথম ম্যাচটাও শুরু থেকে খেলা উচিত ছিল, তাঁরা পুরো ভুল ভাবছেন না।”
এ দিকে, কোচ বিলিচের একটা ভরসা মারিও মান্দজুকিচ। যিনি চারটে সুযোগ থেকে তিন গোল করে সর্বোচ্চ গোলদাতার লড়াইয়ে আছেন। অন্য জন, টটেনহামের প্লেমেকার লুকা মদরিচ। যাঁকে নিয়ে ইতিমধ্যেই টানাটানি পড়ে গিয়েছে ইউরোপের ক্লাবগুলোর মধ্যে। বিলিচের চিন্তা বলতে এভার্টনের স্ট্রাইকার নিকিচা জেলাভিচের জ্বর। শনিবার প্র্যাক্টিসেই নামতে পারেননি জেলাভিচ।
আজ পর্যন্ত কখনও কোনও প্রতিযোগিতামূলক টুর্নামেন্টে মুখোমুখি হয়নি স্পেন-ক্রোয়েশিয়া। দু’দলের মধ্যে প্রীতি ম্যাচের সংখ্যাও সাকুল্যে চার। ক্রোয়েশিয়া একমাত্র জয়টা ১৯৯৪-এ। পাল্লা স্প্যানিশদের দিকে ঝুঁকে ৩-১। সোমবার ‘বিস্কুট’ থিওরি বানচাল করতে মরিয়া দুই দলের পঞ্চম মোলাকাতে এই হিসাবটা কী ভাবে পাল্টায়, সেটাই দেখার। |