নব্বই মিনিটে কত কিছু পাল্টে যায়!
শনিবার রাতে পোল্যান্ডের বিরুদ্ধে চেকরা ছিল তিনে। পরের পর্বে যাওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তা তখনও আছে ভাল রকম। কিন্তু এক গোলে জয়ের পরই আমূল বদলে গেল সব কিছু। তিন থেকে চেক প্রজাতন্ত্র এক ঝটকায় একে। গ্রুপ লিগের প্রায় তলানিতে থেকে একেবারে কোয়ার্টার ফাইনাল। পের চেক, মিলান বারোসদের বিশ্বাস করতে কষ্ট হচ্ছে যে, সত্যিই এ রকম কাণ্ড ঘটেছে। স্বপ্নের জয়ের দিনে কারও মনে পড়ে যাচ্ছে রাশিয়া ম্যাচের দুঃস্বপ্নের কথা। কেউ আবার উপযুক্ত শব্দ খুঁজে পাচ্ছেন না এই জয়কে ব্যাখ্যা করতে। শেষ আটে উঠে চেক তারকারা যে যা বললেন তুলে দেওয়া হল:
পের চেক: রাশিয়ার বিরুদ্ধে আমরা ভাল শুরু করেও জঘন্য ভাবে হেরেছিলাম। পোল্যান্ডের বিরুদ্ধে আবার উল্টো হল। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আমরাও ছন্দে ফিরলাম। সুযোগ তৈরি হয়েছে, গোল করেছি আমরা। আমরা ম্যাচটা জেতার যোগ্যও ছিলাম।
পোল্যান্ড ম্যাচ যখন চলছিল, তখনই আমরা অন্য ম্যাচের খবরটা পাই। টিমের সহকারী কোচ খবরটা দেন। কিন্তু আমরা অন্যদের উপর নির্ভর না করে নিজেদের নিয়ে বেশি ভেবেছি। অলৌকিক কিছুর উপর আমরা ভরসা করিনি। বরং নিজেদের বলেছি, গোল করে ম্যাচটা জেতার চেষ্টা করতে হবে। আমি প্রথম থেকে বলেছি, ইউরোর প্রথম ম্যাচ দেখে আমাদের বিচার করা ঠিক হবে না। দেখুন, সেটাই মিলে গেল। যোগ্য দল হিসেবেই আমরা পরের রাউন্ডে গেলাম। |
জিরাসেক ও বারেস। পোল্যান্ডকে ওড়ানোর উচ্ছ্বাস। ছবি: রয়টার্স |
মিলান বারোস: আমরা ভেবেছিলাম রাশিয়ার যা শক্তি, তাতে ওরা অন্তত ড্র করতে পারবে। তাই মনে হয়েছিল আমাদের ড্র করলেই চলবে। কিন্তু ম্যাচ খেলতে খেলতে দেখলাম জায়ান্ট স্ক্রিনে ভাসছে রাশিয়া এক গোলে হারছে। আমাদের তখন আক্রমণ বাড়ানো ছাড়া উপায় ছিল না। ভাগ্য ভাল আমরা তার কিছুক্ষণ পরেই গোল পেয়ে গেলাম। অনেকেই এখন জিজ্ঞেস করছেন, আমরা কী সেমিফাইনাল যেতে পারব? আমার উত্তর হচ্ছে, কেন নয়?
মাইকেল ক্যাডলেক: কী যে বলব ভেবে পাচ্ছি না। শব্দ খুঁজে পাওয়াই মুশকিল। রাশিয়া ম্যাচ বুঝিয়েছে ফুটবল কতটা নির্মম হতে পারে। আবার শনিবার বোঝাল, সে কতটা সুন্দরও হতে পারে। শেষ বাঁশি বাজার সময় সব কিছুকেই অবিশ্বাস্য বলে মনে হচ্ছিল। এই জন্যই তো ফুটবল খেলে লোকে। ম্যাচে নামার আগে ভেবেছিলাম, অন্তত দ্বিতীয় হয়ে শেষ করতে হবে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত আমরা কি না প্রথম হলাম! জানি না কী বলব।
এক শিবিরে উৎসবের রেশ এখনও কাটেনি। অন্য শিবিরে আবার বিষাদের ছোঁয়া। ইউরো থেকে ছিটকে গিয়ে পোল্যান্ড কোচ ফ্রান্সিজেক স্মুদা ঘোষণা করে দিলেন যে, দায়িত্ব ছাড়ছেন। “সব রাস্তা তো বন্ধ হয়ে গেল। ইউরো শেষ হওয়ার পর আমার চুক্তি এমনিই শেষ হত। যা করতে পারতাম আমরা, করেছি। একটা অ্যাডভেঞ্চার শেষ হয়ে গেল,” বলেছেন স্মুদা। সঙ্গে যোগ করেছেন, “আমরা দায়িত্ব ছাড়ার কোনও ব্যাপার ছিল না। আমার চুক্তি এমনিই এই ইউরোর পর শেষ হয়ে যেত। আর চাকরি ছাড়ার কোনও কারণও নেই।” |