এক দিকে, কোয়ার্টার ফাইনালে উঠেই আট বছর আগের ইউরো জয়ের সুখস্মৃতি ফিরে আসা। অন্য দিকে, টুর্নামেন্টের গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে দলের এক নম্বর স্ট্রাইকারকে না পাওয়ার ধাক্কা।
হর্ষ ও বিষাদ। রশিয়াকে হারানোর পর দুটো ছবিই থাকছে গ্রিস শিবিরে।
দলকে জিতিয়ে গ্রিস অধিনায়ক কারাগৌনিস তুলে আনছেন ২০০৪ সালের ইউরো জেতার স্বপ্নের মুহূর্তকে। শনিবার রাশিয়াকে ১-০ হারানোর নায়ক জানিয়েছেন, ইউরো জেতার আনন্দকেও টেক্কা দেবে এ বার কোয়ার্টার ফাইনালে ওঠার উল্লাস। কিন্তু ঘটনা হচ্ছে, কোয়ার্টার ফাইনালে থাকছেন না স্বয়ং কারাগৌনিসই! পেনাল্টি আদায় করতে গিয়ে রাশিয়া বক্সে পড়ে যাওয়ার অভিনয় করার জন্য শনিবার হলুদ কার্ড দেখেন তিনি।
তবে আপাতত সে সব নিয়ে ভাবছেনই না কারাগৌনিস। বরং দেশের হয়ে রেকর্ড-ছোঁয়া ১২০তম ম্যাচ খেলে উঠে উচ্ছ্বাসে ভাসছেন তিনি। গ্রিসকে কোয়ার্টার ফাইনালে তুলে তাঁর কয়েকটা মন্তব্যেই সেটা পরিষ্কার।
“এ রকম মুহূর্ত উপভোগ করার সুযোগ দেওয়ার জন্য ঈশ্বরকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।”
“আমরা হাল ছাড়িনি। এই দিনটাকে পর্তুগালে ২০০৪-এর সেই অসাধারণ মুহূর্তটার সঙ্গে তুলনা করা যায়।”
“আমাদের বিশ্বাস ছিল, এই ম্যাচের পর এথেন্স ফিরব না। সবাইকে যে কথা দিয়েছিলাম, সেটা রাখতে পেরেছি। গ্রিসের সবাই এখন উৎসব করতে পারেন।” |
দেশকে শেষ আটে তুলে গ্রিস অধিনায়ক। ছবি: এএফপি |
“আমরা যখন একজোট হয়ে খেলি, তখন আমাদের কেউ থামাতে পারে না।”
অধিনায়কের মতো বাঁধভাঙা উচ্ছ্বাস না দেখালেও খুশি গ্রিস ম্যানেজার ফার্নান্দো স্যান্টোসও। শনিবারের জয় তিনি উৎসর্গ করেছেন দেশবাসীর পাশাপাশি আভ্রাম পাপাডোপৌলসকেও। চোটের জন্য যিনি এখন জাতীয় দলের বাইরে। “ফোকাস আর মনঃসংযোগএই দুটো ব্যাপারই ম্যাচের মোড় আমাদের দিকে ঘুরিয়ে দিয়েছিল। আমরা বিপক্ষকে ওদের শক্তি মতো খেলে গোল করতে দিইনি,” শনিবার ম্যাচের পর বলেছেন স্যান্টোস। তাঁর আরও ব্যাখ্যা, “চাপের মুখে আমার টিমের সত্যিকারের চরিত্র বেরিয়ে এল। সুযোগ তৈরি করার জন্য রাশিয়ার বেশ খানিকটা জায়গা দরকার ছিল। আমরা সেটা করতে দিইনি।” জয়ের পাশাপাশি পরের লক্ষ্য নিয়েও ভাবনাচিন্তা শুরু করে দিয়েছেন স্যান্টোস। “কাল থেকে নিজেদের মাথা থেকে এই ম্যাচের কথা সরিয়ে ফেলতে হবে। খেয়াল রাখতে হবে যাতে আমাদের পা মাটিতেই থাকে। পরের ম্যাচেও নিজেদের সেরাটা দেব।”
অন্য দিকে ইউরোর লড়াই থেকে ছিটকে গিয়েও একেবারে ভেঙে পড়েননি রাশিয়ার কোচ ডিক আডভোকাট। বরং তাঁর দল যে নিজেদের দোষেই হেরেছে, সেটা মেনে নিচ্ছেন তিনি। “একটা গোল খেলে আপনার কাছে তার পরের ৪৫ মিনিট থাকে সেই গোল শোধ দেওয়ার জন্য। আমরা সেটা করতে পারলাম না। কেন পারলাম না, বলা কঠিন। আমাদের আক্রমণে সেই তীক্ষ্নতা ছিল না।” রাশিয়া কোচ সঙ্গে আরও যোগ করেছেন, “আমরা ভাল খেলেছি। কিন্তু গোল না করতে পারলে কী হবে? বল পজেশন বেশি থেকেও আজ গোল করতে পারলাম না। আমাদের দল খুব ভাল। টানা ১৬ ম্যাচে অপরাজিত ছিলাম। তবে আজ ভাগ্য আমাদের সঙ্গে ছিল না। আমাদের জেতা উচিত ছিল, কিন্তু ফুটবল তো এ রকমই। গ্রিসকে আমার অভিনন্দন।” |