চলতি ইউরোয় তাঁর পা পড়ার আগেই জমিয়ে দিলেন ওয়েন রুনি। ইংল্যান্ড টিমের পোস্টার-বয় ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেড স্ট্রাইকার তাঁর বর্তমান জাতীয় দলের ড্রেসিংরুমের হালকা মেজাজকে বর্ণনা করতে গিয়ে দু’বছর আগে বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের ইতালীয় কোচ ফাবিও কাপেলোকে নাম না করে একহাত নিয়েছেন। টেনে এনেছেন ‘লস্ট ইন ট্রানস্লেশন’ ইংরেজি সিনেমাকে। সেখানে যেমন ভাষা সমস্যায় বিমানবন্দরে আটকে গিয়েছিলেন ছবির নায়ক, কাপেলোর সময় রুনিদেরও মাঠে সে রকম দশা দাঁড়িয়েছিল বলে ঘুরিয়ে মন্তব্য করেছেন হাইপ্রোফাইল ইংরেজ ফুটবলার।
“ইউরোয় কি আমরা গত বিশ্বকাপের চেয়ে হালকা মেজাজে আছি?” নিজেই প্রশ্ন তুলে তার উত্তর দিয়েছেন রুনি। “হ্যা। আমি সে রকমই মনে করছি। এই টুর্নামেন্টে আমরা অনেক বেশি হালকা মনে আছি। ইউরোয় ইংল্যান্ডের কোচিং স্টাফ সবাই ইংরেজ হওয়ায় আমাদের ‘লস্ট ইন ট্রানস্লেশন’ হওয়ার ভয় নেই। ম্যানেজার আমাদের থেকে ঠিক কী চাইছেন সেটা আমরা সবাই বুঝতে পারছি। তিনিও বুঝতে পারছেন আমরা ওঁর থেকে ঠিক কী চাই।” রুনির মন্তব্যে ওয়াকিবহাল মহল মনে করছে, তিনি আগের ইংল্যান্ড ম্যানেজার কাপেলোর সময়ে টিমের মধ্যেকার গুমোট পরিস্থিতিরই সমালোচনা করেছেন। ইতালীয় কোচের নাম না করে। ভাষা সমস্যা ছিল কাপেলোর ইংল্যান্ড বস হিসেবে সাফল্য না পাওয়ার অন্যতম কারণ। এ বছর ফেব্রুয়ারিতে শেষমেশ যাঁকে সরিয়ে ব্রিটিশ রয় হজসনকে ইংল্যান্ড টিমের দায়িত্ব দেয় এফ এ। |
পুত্র সন্তানকে নিয়ে টিম হোটেল থেকে বেরোচ্ছেন সস্ত্রীক রুনি। ছবি: রয়টার্স |
রুনির দু’ম্যাচ সাসপেনশন মঙ্গলবার গ্রুপের শেষ ম্যাচে উঠছে। ইউরোর অন্যতম সংগঠক দেশ ইউক্রেনের বিরুদ্ধে ম্যাচে। তবে রুনি বনাম শেভচেঙ্কো গোলের লড়াই এই ম্যাচে নাও দেখা যেতে পারে। চোটের জন্য ইউক্রেনের বর্ষীয়ান ফরোয়ার্ড হয়তো খেলবেন না এই ম্যাচ। তবে রুনি দাবি করেছেন তিনি পুরো ফিট। এবং ইউরোয় যে অবশেষে ইংল্যান্ডকে সাহায্য করতে মাঠে নামবেন, সেই ভেবে যারপরনাই হালকবোধ করছেন।
পাশাপাশি উত্তেজিতবোধও করছেন যে, ওই দিন ডনেস্কের স্টেডিয়ামে আক্রমণাত্মক ইউক্রেনিয়ান সমর্থকদের মুখোমুখি হতে হবে তাঁকে। কোয়ার্টার ফাইনালে ওঠার জন্য শেষ ম্যাচ থেকে এক পয়েন্ট পেলেই চলবে রুনির ইংল্যান্ডকে। এবং রুনি একটুও না ঘাবড়ে বলছেন, “আমরা বিশ্বের অনেক বড়-বড় স্টেডিয়ামে অনেক বড়-বড় ম্যাচ খেলেছি। আমি মনে করি এ রকম পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার পক্ষে আমরা যথেষ্ট অভিজ্ঞ এবং বড় প্লেয়ার।”
মাঠে নামার আগেই নতুন কোচে মজে আছেন রুনি। “হজসনের স্টাইল ইংল্যান্ডের ফুটবলারদের কাছে অনেক সহজ লাগছে। আমরা অনেক বেশি বিশ্রাম পাচ্ছি। ঠান্ডা হওয়ার সময় পাচ্ছি। এর ফলে যখন দরকার তখন ফুটবল থেকে মনটাকে একেবারে সরিয়ে রাখা সম্ভব হচ্ছে, পরের ম্যাচের জন্য জ্বলে উঠতে।” পাশাপাশি ইংল্যান্ডের প্রথম দু’টো ম্যাচে তাঁর দর্শক হয়ে থাকার যন্ত্রণা বোঝাতে গিয়ে রুনি বলেছেন, “নিজের দলের খেলা বসে দেখাটা বেশি কঠিন, সেই ম্যাচটা খেলার তুলনায়। গ্যালারিতে যে বসে নিজের দলের জন্য কিছুই করা সম্ভব হয় না।” |