যথাবিহিত নিয়ম মেনে পরীক্ষার হলে বসে পরীক্ষা দেওয়া সত্ত্বেও কাছাড়ের সোনাইয়ে ৩৩০ জন মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীকে ‘অনুপস্থিত’ বলে দেখানো হয়েছে। যে পরীক্ষাকেন্দ্রে এই ছাত্রছাত্রীরা পরীক্ষা দিতে বসেছিল, সেটি হল সোনাইয়ের নিত্যগোপাল হায়ার সেকেন্ডারি স্কুল। ওই কেন্দ্রের সেন্টার ইন চার্জ জানিয়েছেন, যাদের ‘অনুপস্থিত’ বলে অসম রাজ্য মধ্যশিক্ষা পর্ষদ ঘোষণা করেছে, তারা ঠিকঠাকই পরীক্ষা দিয়েছিল। পরীক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকরাও জোর গলায় দাবি করেছেন, গোটাটাই পর্ষদের গাফিলতি। ঘটনা হল, পর্ষদের এমন ‘কাণ্ডে’ উদ্বেগে ভুগছে শুধু পরীক্ষার্থীরাই নয়, তাদের অভিভাবকরাও চিন্তান্বিত। বিমূঢ় ছাত্রছাত্রীরা ‘প্রতিকার’ চেয়ে রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মার দৃষ্টি আকর্ষণে স্মারকলিপি পাঠাতে উদ্যোগী হয়েছে।
কাল বিক্ষোভ-প্রতিবাদে মুখর হয়ে ওঠে কাছাড় জেলার সোনাই। দীর্ঘক্ষণ অবরুদ্ধ হয়ে থাকে শিলচর-আইজল জাতীয় সড়ক। সকালে অবরোধ করেছিল ‘অনুপস্থিত’ দেখানো পরীক্ষার্থীরা। পরে ক্লাস বয়কট করে মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের সঙ্গে যোগ দেয় বিভিন্ন শ্রেণির পড়ুয়ারাও। দোকানপাঠও বন্ধ হয়ে যায়। সার্কেল অফিসও ঘেরাও করা হয়। ক্ষুব্ধ ছাত্রছাত্রীরা সার্কেল অফিসার জে আর লালসিমের কাছে দাবি জানান, তাঁদের ফলাফল ঠিক করে দেওয়ার ব্যবস্থা করে দিতে হবে। লালসিমকে এ জন্য ২১ জুন পর্যন্ত সময় দেওয়া হয়। পরে সার্কেল অফিসার জানান, ফলাফল প্রকাশে যদি ভুলত্রুটি কিছু থাকে তার দায়িত্ব অসম রাজ্য মধ্য শিক্ষা পর্ষদের। সেটি একটি স্বশাসিত সংস্থা। এ ব্যাপারে তাঁর কিছু করার নেই। তবে এতগুলি ছাত্রছাত্রীর যে দুর্ভোগ হচ্ছে সে কথা চিন্তা করে ছাত্রছাত্রীদের ক্ষোভের কথা তিনি জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে পর্ষদের সচিবকে জানিয়ে দেবেন। বলা হবে এ ব্যপারে যথোপযুক্ত ব্যবস্থা নিতে।
গত শুক্রবার ফলাফল প্রকাশের পরই ধরা পড়ে, এলাকার বহু মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী এক বা একাধিক বিষয়ে ‘অনুপস্থিত’ বলে পাশ করতে পারেনি। কিন্তু সেন্টার ইনচার্জ-সহ ছাত্রছাত্রীদের দাবি, এত পরীক্ষার্থী ‘অনুপস্থিত’ থাকাতেই পারে না। সোনাইয়ের নিত্যগোপাল হায়ার সেকেন্ডারি স্কুলের ‘সেন্টার’-এ পরীক্ষায় বসেছিল দশটি স্কুলের ৪৯৪ জন ছাত্রছাত্রী। এদের মধ্যে ১৬০ জন উত্তীর্ণ হয়েছে। ৪ জন অনুত্তীর্ণ। বাকি ৩৩০ জনের সকলকে এক বা একাধিক বিষয়ে ‘অনুপস্থিত’ দেখানো হয়েছে। এমনকী ইংরেজি ও সাধারণ বিজ্ঞানে লেটার পাওয়া চৈতালি দাসকেও তিনটি পরীক্ষায় গরহাজির বলে দেখানো রয়েছে। পরীক্ষার্থীদের অভিযোগ, পর্ষদের গাফিলতিতেই তাঁদের ‘অনুপস্থিত’ তকমা জুটেছে।
এমন ফলাফলে বিস্মিত সব ক’টি স্কুলের পরীক্ষার্থী, শিক্ষক-শিক্ষিকা ও অভিভাবকরাও। এমনকী সেন্টারটির পরিচালন সমিতির সভাপতি তজমুল আলি মজুমদারও বলেন, “অনুপস্থিতির এই তথ্য মোটেও ঠিক নয়।” তজমুল নিজে পর্ষদের সচিবের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন। |