নামের ‘উৎস’ রক্ষার্থে তোড়জোড় কামাখ্যা গ্রামে
গ্রামের নাম কামাখ্যা। গ্রামের এই নামের সঙ্গে আক্ষরিক অর্থে মিল রয়েছে কামাখ্যা দেবীর। বর্তমানে কামাখ্যা মাতা মন্দিরের ভগ্নপ্রায় অবস্থা। তাই গ্রামের মর্যাদা রক্ষায় নামের ‘উৎস’ ওই মন্দির সংস্কারে এগিয়ে এসেছেন গ্রামবাসী থেকে সেবাইত। শুরু হয়েছে গ্রামের অস্তিত্ব রক্ষার কর্মযজ্ঞ।
মন্দিরের এই সংস্কারকে ঘিরে কামাখ্যা গ্রামের বাসিন্দাদের মধ্যে উৎসাহের খামতি নেই। প্রায় চারশো পরিবারের বাস কামাখ্যা গ্রামে। গ্রামের মাঝখানে কামাখ্যা তলা। গ্রাম আগে না মন্দির আগে জানতে সেবাইত দেবপ্রসাদ বন্দ্যোপাধ্যায়, রবীন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় বললেন, “পূর্ব পুরুষদের মুখ থেকে শুনেছি, বর্তমানে কামাখ্যা তলা আগে জঙ্গলে পরিপূর্ণ ছিল। তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ের জমিদারি এলাকার মধ্যে কামাখ্যা মৌজা পড়ত। যেখানে মন্দির হয়েছে, আগে সেখানে বসতি ছিল না।” ময়ূরেশ্বর থানার ভেলিয়ান গ্রামের বাসিন্দা ভোলানাথ ভট্টাচার্য মন্দিরের সেবাইত ছিলেন। পরবর্তীতে তিনি কামাখ্যা গ্রামের বাসিন্দা যুগল কিশোর বন্দ্যোপাধ্যায়কে সেবাইত হিসেবে নিযুক্ত করেন। পরে উত্তরসূরী পঙ্কজ বন্দ্যোপাধ্যায় দীর্ঘদিন সেবাইত ছিলেন। তিনি মারা যাওয়ার পরে তাঁর দুই ছেলে দেবপ্রসাদবাবু ও রবীন্দ্রনাথবাবু সেবাইত হিসেবে নিযুক্ত হন।
ভগ্নপ্রায় কামাখ্যা মন্দির। —নিজস্ব চিত্র।
রবিবার গ্রামে গিয়ে দেখা গেল, মূল মন্দিরে দেবী কামাখ্যা বিশাল পাথরের পাটাতনে আসীন রয়েছেন। শিলামূর্তি এই দেবীর গলায় রেশন কীটের মালা পরানো রয়েছে। দেবী ত্রিনয়না। সংস্কারের জন্য তোড়জোড় চলছে। কামাখ্যা মাতার একচূড়া মন্দিরের পুরনো খিলানে ফাটল ধরেছে, ভেঙে পড়েছে মন্দিরের মূল অংশ। মন্দির গাত্রের চুনসুড়কি খসে পড়েছে এবং ইট দেখা যাচ্ছে সিঁড়ি ও চাতালে। গ্রামবাসী হরিসাধন লেট, বসন মণ্ডল, দিবাকর মণ্ডল, হৃদয় মণ্ডলের মুখে মুখে কামাখ্যা মাতার মাহাত্মের কথা শোনা গেল। রবীন্দ্রনাথবাবু বলেন, “১০ শ্রাবনের পরে যে মঙ্গলবার আসে সেই মঙ্গলবারে ১০৮ কলসি জলে দেবীকে স্নান করানো হয়। ১০৮ পদ্মফুলে ওই দিন দেবীর আরাধনা করা হয়। দেবীকে দূর্গা ধ্যানে পুজো করা হয়।” আর এক সেবাইত দেবপ্রসাদবাবু বলেন, “কামাখ্যা মাতার সঙ্কল্প করা হয় রেশম চাষের গুটি বা রেশম কীট বা তুঁত পোকা রক্ষার জন্য। এলাকার তুঁত চাষির, রেশম চাষিরা শনি ও মঙ্গলবার পুজো দিতে আসেন। শুধু এলাকার চাষিরা নন, মুর্শিদাবাদ জেলার বিভিন্ন প্রান্তের রেশম চাষিরাও পুজো দিতে আসেন।”
গ্রামবাসী পেশায় শিক্ষক নিতাই লেট, সরকারি কর্মী বাদল প্রামাণিকদের দাবি, “মায়ের নামে গ্রামের নাম।” তাঁরা বলেন, “মন্দিরের অবস্থা খুবই খারাপ। সেবাইতদের নামে জমি থাকায় তাঁদের দিক থেকে মন্দির সংস্কারের কাজ শুরু হয়েছে। দেখা যাক তাঁদের তরফ থেকে কতদূর সংস্কারের কাজ হচ্ছে। না হলে গ্রামবাসীরা সংস্কারের কাজে সাহায্যের জন্য প্রস্তুত। ঢোল বাজিয়ে সম্প্রতি একটা সভাও হয়েছে।” সেবাইত রবীন্দ্রনাথবাবু বলেন, “গ্রামের মর্যাদার সঙ্গে কামাখ্যা মাতার নাম জড়িত। সংস্কারের জন্য আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করব।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.