পরপর দু’টি বাড়িতে ডাকাতির পরে বাসিন্দারা এক জনকে ধরে পুলিশের হাতে তুলে দিলেও জিপ থেকে তাকে ছিনিয়ে নিয়ে গেল দুষ্কৃতীরা। শনিবার রাতে অন্ডালের সিদুলি এলাকার ঘটনা। দুর্গাপুরের এডিসিপি শুভঙ্কর সিংহ সরকার জানান, তদন্ত শুরু হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই রাতে সিদুলির ফুচিপাড়ায় পরপর দু’টি বাড়িতে ডাকাতি হয়। এক দুষ্কৃতীকে ধরে পুলিশের হাতে তুলে দেন স্থানীয়রা। গ্রেফতারের পরে এক এএসআই ও দুই পুলিশকর্মী তাকে জিপে চড়িয়ে বনবহাল ফাঁড়িতে নিয়ে যাচ্ছিলেন। ফাঁড়ি থেকে এক কিলোমিটার দূরে ওই দুষ্কৃতীর সঙ্গীরা পুলিশের জিপের সামনে বোমা ফাটায় এবং তাদের সঙ্গীকে ছিনিয়ে নিয়ে পালায়। পরে ওই এএসআই ঘটনাস্থলে ফিরে গিয়ে বাসিন্দাদের খবর দিতেই তাঁরা ক্ষুব্ধ হয়ে পুলিশকর্মীদের রবিবার সকাল পর্যন্ত ঘেরাও করে রাখেন। এ ছাড়া সকাল ১০টা নাগাদ এআইএফআই এবং ডিওয়াইএফআই নিরাপত্তার দাবিতে যৌথ ভাবে ফাঁড়ি ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখায়।
সিদুলি ফুচিপাড়ার বাসিন্দা অবসরপ্রাপ্ত খনিকর্মী মদন চৌধুরী জানান, শনিবার রাত ১টা নাগাদ বাড়ির দরজা ভাঙার আওয়াজ পান। তাঁর স্ত্রী অঞ্জনাদেবী দরজা খুলতেই জনা দশেক দুষ্কৃতী ঘরে ঢুকে পড়ে। আলমারি খুলে নগদ টাকা ও সোনার গয়না লুঠ করে তারা। তার পরে মদনবাবুদের প্রতিবেশী নারায়ণ রায়ের বাড়িতে যায় দুষ্কৃতীরা। |
নারায়ণবাবু জানান, জানালার পাশে তাঁর দুই নাতি শুয়েছিল। দুষ্কৃতীরা পিস্তল দেখিয়ে তাঁদের দরজা খুলে দিতে বলে। দরজা খুলতেই তাঁরা বাড়িতে ঢুকে নগদ টাকাপয়সা এবং পুত্রবধূর গলা থেকে সোনার হার খুলে নিয়ে পালায়। পালানোর আগে দুষ্কৃতীদের ছোড়া বোমায় নারায়ণবাবুর ছেলে দীপেনবাবু আহত হন বলে অভিযোগ।
নারায়ণবাবুর আর এক ছেলে রোহিতবাবু বলেন, “এরই মধ্যে সুযোগ বুঝে এক দুষ্কৃতীকে জাপটে ধরে ফেলি। খবর পেয়ে কিছু ক্ষণের মধ্যে বনবহাল ফাঁড়ির এএসআই-সহ তিন পুলিশকর্মী আসেন। তাঁদের হাতে তুলে দিই ওই দুষ্কৃতীকে।” বাসিন্দারা জানান, ওই তিন পুলিশকর্মী ধৃত দুষ্কৃতীকে নিয়ে ফাঁড়ির দিকে রওনা হলেও কিছু ক্ষণ পরে ফিরে এসে জানান, দুষ্কৃতীর সঙ্গীরা জিপ ঘিরে ফেলে বোমা ছোড়ায় তাঁরা হতচকিত হয়ে পড়েন। সেই সুযোগে সঙ্গীরা নিয়ে পালায় তাকে। এই ঘটনার পরেই গ্রামবাসীরা আটকে রাখেন ওই পুলিশকর্মীদের।
এআইওয়াইএফ এবং ডিওয়াইএফআই-এর দুই নেতা রাজু রায় ও পাপ্পু সরকারের দাবি, সিদুলি এলাকা সম্প্রতি দুষ্কৃতীদের ‘স্বর্গ’ হয়ে উঠেছে। মাংস, খৈনির দোকানেও চলছে অবাধে মদ বিক্রি। বহিরাগতেরা দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। এক সপ্তাহ আগেই এক ব্যক্তিকে মারধর করে টাকা কেড়ে নেয় দুষ্কৃতীরা। চুরি, ছিনতাই লেগেই রয়েছে। অথচ পুলিশ নিষ্ক্রিয়। এডিসিপি শুভঙ্করবাবু জানান, দু’টি ডাকাতির মামলা দায়ের হয়েছে। ওই দুষ্কৃতীকে ছিনিয়ে নিয়ে যাওয়ার ঘটনারও তদন্ত শুরু হয়েছে। |