দিনহাটা কলেজে ছাত্র সংঘর্ষের ঘটনায় বাম ছাত্র সংগঠনের ৪ নেতা-কর্মীকে গ্রেফতার করল পুলিশ। বুধবার ওই বাম ছাত্র সংগঠনের নেতা-কর্মীদের গ্রেফতার করা হয়। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ধৃতদের মধ্যে এসএফআইয়ের দিনহাটা জোনাল সভাপতি সুমন গুহ ও সমর্থক কামাল হোসেন রয়েছেন। বাকি দুজন ফরওয়ার্ড ব্লকের ছাত্র ব্লকের সমর্থক। কোচবিহারের পুলিশ সুপার প্রণব দাস বলেন, “টিএমসিপি’র তরফে দায়ের করা অভিযোগের ভিত্তিতে ওই ৪ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।” বাম ছাত্র সংগঠনের তরফে রুজু পাল্টা অভিযোগের ভিত্তিতে অবশ্য এদিন কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। পুলিশের ওই ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে ক্ষুব্ধ এসএফআই নেতৃত্ব।
সংগঠনের জেলা সম্পাদক দেবজ্যোতি গোস্বামী বলেন, “কলেজে ঢুকে আমাদের ছেলেদের মারধর করা হল। অথচ আমাদের জোনাল সভাপতি-সহ বাম ছাত্র মোর্চার ৪ জনকে ধরা হল। টিএমসিপির বিরুদ্ধে আমরা যে অভিযোগ জানিয়েছিলাম তা নিয়ে পুলিশের কোনও হেলদোল নেই। পুলিশের ওই ভুমিকার প্রতিবাদে এ মাসেই দিনহাটায় প্রতিবাদ সভা করা হবে।” সোমবার দুপুরে ছাত্র ভর্তির ফর্ম বিলি নিয়ে দিনহাটা কলেজে এসএফআই-ছাত্র ব্লকের সমর্থকদের সঙ্গে টিএমসিপির সমর্থকদের সংঘর্ষ হয়। দুপক্ষের অন্তত ৩০ জন জখম হন। দিনহাটা থানায় টিএমসিপির তরফে উদয়ন গুহ, বেণুবাদল চক্রবর্তী-সহ ৩৬ জনের নামে অভিযোগ করা হয়। এসএফআইও পাল্টা অভিযোগ দায়ের করে।
টিএমসিপির অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ দিনহাটার ফরওয়ার্ড ব্লক বিধায়ক উদয়ন গুহ এবং সিপিএমের জেলা সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য বেণুবাদল চক্রবর্তীর বিরুদ্ধেও খুনের চেষ্টা-সহ বিভিন্ন ধারায় মামলা রুজু করেছে। বুধবার ওই ঘটনার প্রতিবাদে আন্দোলনে নামে ফরওয়ার্ড ব্লক। দলের জেলা সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য দীপক সরকারের নেতৃত্বে এক প্রতিনিধি দল জেলাশাসকের সঙ্গে দেখা করে স্মারকলিপি দেন। দীপকবাবু বলেন, “আমাদের জেলা সম্পাদক উদয়ন গুহ ঘটনার দিন শিলিগুড়িতে একটি টিভি চ্যানেলের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। উদ্দেশ্য প্রণোদিত ভাবে তাঁর নাম জড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। তাকে পুলিশ হয়রানি করলে বৃহত্তর আন্দোলনে নামব।” তাতে পরিস্থিতির অবনতি হলে তৃণমূলকেই দায় নিতে হবে হুমকি দিয়েছেন তিনি।
দিনহাটার ফরওয়ার্ড ব্লক বিধায়কও এই দিন জানিয়েছেন, তাঁর বিরুদ্ধে ভিত্তিহীন অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। সংঘর্ষের ঘটনার দিন শিলিগুড়িতে যাওয়ার সময় রাস্তায় তিনি ওই গোলমালের খবর পান। তৃণমূলের জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষ অবশ্য বলেছেন, “পুলিশ প্রশাসন পুরো ঘটনার তদন্ত করছে। তারাই যা ব্যবস্থা নেওয়ার নেবেন।” |