অ্যাম্বুল্যান্স নেই, নিশ্চয় যান অনিশ্চিত
খাতায়-কলমে চালু রয়েছে ‘নিশ্চয় যান প্রকল্প’। কিন্তু হাসপাতালের কোনও অ্যাম্বুল্যান্সই নেই।
বেশির ভাগ সময়ে হাসপাতালের সামনেই দাঁড়িয়ে রয়েছে একাধিক বেসরকারি অ্যাম্বুল্যান্স। কিন্তু তারা এমন দর হাঁকছে, যা বহু রোগীর পরিবারেরই সাধ্যের বাইরে। কেতুগ্রাম-১ ব্লক হাসপাতালে যেতে-আসতে নাকাল হতে হচ্ছে মুমূর্ষু রোগীদের।
গত ১ জুন প্রসব যন্ত্রণা উঠেছিল স্থানীয় রাজুর গ্রামের মামনি দাসের। তাঁর বাড়ির লোকজন হাসপাতালের নির্দিষ্ট নম্বরে ফোন করে ‘নিশ্চয় যান’ প্রকল্পের আওতায় থাকা অ্যাম্বুল্যান্স চান। অথচ দীর্ঘক্ষণ কেটে গেলেও অ্যাম্বুল্যান্স আসে না! গ্রামের বাসিন্দা বিভু আচার্য বলেন, “অ্যাম্বুল্যান্স না আসায় শেষে লোকের থেকে টাকা ধার করে মামনিকে প্রথমে কান্দরা ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে, পরে বীরভূমের বোলপুর মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।”
একই অভিজ্ঞতা স্থানীয় শ্রীপুর গ্রামের সন্তোষী আচার্যেরও। ‘নিশ্চয় যান’ প্রকল্পের অ্যাম্বুল্যান্স না আসায় রাতে গ্রাম থেকে যন্ত্রচালিত ভ্যানে তাঁকে ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। তাঁর আক্ষেপ, “সুযোগ পেয়ে অন্য অ্যাম্বুল্যান্সগুলো বেশি টাকা চাইছিল। কিন্তু অত টাকা দেওয়ার আমাদের ক্ষমতা আমাদের নেই। তাই যন্ত্রচালিত ভ্যানেই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে গিয়েছিলাম।”
— নিজস্ব চিত্র।
এলাকাবাসীদের অভিযোগ, ফোন করলেও হাসপাতালের অ্যাম্বুল্যান্স আসে না। বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার অ্যাম্বুল্যান্স দিনভর ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের সামনে দাঁড়িয়ে থাকে। কিন্তু অবস্থার সুযোগ নিয়ে তারা এমনই দর হাঁকে, যা তাঁদের সামর্থ্যের বাইরে। ২৫-৩০ কিমি দূরের কাটোয়া কিংবা বোলপুর মহকুমা হাসপাতালে যেতে ৬০০-৭০০ টাকা দাবি করে বসে। বাধ্য হয়ে অনেকে তা মেনেও নেন।
সরকারি নিয়মে, ‘নিশ্চয় যান’ প্রকল্পে হাসপাতালের সঙ্গে সরাসরি চুক্তি থাকে অ্যাম্বুল্যান্স মালিকের। এলাকার দুঃস্থ প্রসূতি বা অন্য রোগী নির্দিষ্ট নম্বরে ফোন করে জানালে বাড়িতে অ্যাম্বুল্যান্স পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়। এর জন্য সরকারের কাছ থেকেই টাকা পান তারা। কিন্তু কেতুগ্রাম-১ ব্লকে আপাতত সেই ব্যবস্থা শিকেয় ব্লক স্বাস্থ্য দফতর জানায়, বর্ধমানের এক অ্যাম্বুল্যান্স মালিকের সঙ্গে তাদের চুক্তি হয়েছিল। গত এপ্রিলে চুক্তি শেষ হয়েছে। তার পর থেকেই বন্ধ রয়েছে প্রকল্প।
কেতুগ্রাম-১ ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক অঞ্জন দাস বলেন, “আমরা তিন জন গাড়ির মালিককে চুক্তি করার জন্য প্রয়োজনীয় নথি দিয়েছি। তবে তাঁরা চুক্তি করতে আগ্রহ না দেখানোয় আমরাও কিছু করতে পারছি না।” জেলায় প্রকল্পের দায়িত্বে আছেন উপ-মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক (১) অসীম দাস মালাকার। অথচ কেতুগ্রাম-১ ব্লকের সমস্যার কথা জানেনই না তিনি। তাঁর বক্তব্য, “ওই ব্লকে পাঁচ চিকিৎসক রয়েছেন। তাঁরা কেউ আমাকে সমস্যার কথা জানাননি। জানলে নিশ্চয় ব্যবস্থা করতাম। এ বার খোঁজ নিয়ে দেখব।”
বিভিন্ন বেসরকারি অ্যাম্বুল্যান্স যে যেমন খুশি দাম হাঁকছে, সে ব্যাপারেও কার্যত কারও কোনও ‘নিয়ন্ত্রণ’ নেই। বস্তুত হেলদোলও নেই। এ নিয়ে খোঁজখবরের শেষে জেলা আঞ্চলিক পরিবহণ দফতর ও স্বাস্থ্য দফতরের তরফে শুধু আশ্বাস মিলেছে, বিষয়টি তারা ‘খতিয়ে দেখছে’।
কবে, কী ভাবে, কে করবে সুরাহা? তার অবশ্য সদুত্তর মেলেনি।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.