বেতন বৃদ্ধি সহ বিভিন্ন সরকারি সুযোগ সুবিধার দাবিতে আন্দোলনে নেমেছে রায়গঞ্জ জেলা হাসপাতালের চতুর্থ শ্রেণির ২০ জন অস্থায়ী কর্মী। বুধবার থেকে তাঁরা অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতির ডাক দিয়ে হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সামনে অবস্থানে বসেছেন। স্বাস্থ্যকর্তারা সমস্যা সমাধানের আশ্বাস না দেওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে বলে অস্থায়ী কর্মীরা হাসপাতাল সুপারকে জানিয়ে দিয়েছেন। যদিও আন্দোলনের জেরে হাসপাতালের জরুরি বিভাগ, অপারেশন থিয়েটার সহ বিভিন্ন ওয়ার্ডে পরিষেবার সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। হাসপাতালের সুপার অরবিন্দ তান্ত্রি বলেন, “অস্থায়ী কর্মীদের বেতন রোগী কল্যাণ সমিতির তহবিল থেকে দেওয়া হয়। সমিতির টাকার অভাব রয়েছে। সমস্যার কথা রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরকে জানানো হয়েছে। হাসপাতালের পরিষেবা ঠিক রাখতে অস্থায়ী কর্মীদের কাজে যোগ দিতে অনুরোধ করেছি।” রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান রাজ্যের জনশিক্ষা ও গ্রন্থাগার মন্ত্রী আবদুল করিম চৌধুরী বলেন, “অস্থায়ী কর্মীদের বেতন বৃদ্ধি সহ সরকারি নানা সুযোগ সুবিধা দেওয়ার বিষয়টি রাজ্য সরকার খতিয়ে দেখে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেবে।” |
রায়গঞ্জ হাসপাতালে কর্মবিরতির ডাক। — নিজস্ব চিত্র। |
হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই অস্থায়ী কর্মীরা দু’দশকের বেশি সময় ধরে কাজ করছেন। হাসপাতালে ৬১ জন স্থায়ী চতুর্থ শ্রেণির কর্মী থাকলেও তাঁদের মধ্যে অনেকে ছুটিতে থাকেন। অনেকে অসুস্থ থাকায় নিয়মিত কাজে আসেন না। ওই পরিস্থিতিতে অস্থায়ী কর্মীদের জরুরি বিভাগ থেকে ওয়ার্ডে রোগী পৌঁছে দেওয়া, অপারেশন থিয়েটারে চিকিৎসকদের সহযোগিতা করা, ওয়ার্ডে রোগীদের অক্সিজেন, স্যালাইন, ওষুধ ও খাবার পৌঁছে দেওয়ার মতো বিভিন্ন কাজ করতে হয়। দেড় বছর আগে তাঁরা ‘ফিক্সড পে ক্যাজুয়াল ওয়ার্কার অ্যাসোসিয়েশন’ নামে একটি সমিতি গঠন করেন। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ রোগী কল্যাণ সমিতির তহবিল থেকে প্রতি মাসে অ্যাসোসিয়েশনকে বেতন বাবদ ৩৬ হাজার টাকা করে দেয়। ওই টাকা কর্মীরা নিজেদের মধ্যে ভাগ করে নেন। গত সোমবার বৈঠকের পরে রোগী কল্যাণ সমিতির তরফে অস্থায়ী কর্মীদের জানিয়ে দেওয়া হয় আর্থিক সমস্যার জন্য আগামী দুই মাসের বেশি তাঁদের পক্ষে বেতনের টাকা দেওয়া সম্ভব নয়। এর পরেই তাঁরা কর্মবিরতি আন্দোলনের সিদ্ধান্ত। আন্দোলনকারীদের পক্ষে পার্থসারথি ভট্টাচার্য বলেন, “হাসপাতালে গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন কাজ অস্থায়ী কর্মীদের দিয়ে করানো হচ্ছে। অথচ তাঁদের সরকারি পরিচয়পত্র নেই। মাসে ১৮০০ টাকা বেতন। তাই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে সরকারি পরিচয়পত্র ছাড়া প্রতিদিন ২১৭ টাকা মজুরির দাবি জানানো হয়েছে। ওই দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত কর্মবিরতি আন্দোলন চলবে।” |