নিজস্ব সংবাদদাতা • শিলিগুড়ি |
সুর নরম করল কাওয়াখালি উপনগরী প্রকল্পের কাজে বাধাদানকারী জমিহারাদের একাংশ। যদিও বুধবার ধর্নামঞ্চ গড়ে অনিচ্ছুকদের জমি ফেরত এবং ক্ষতিপূরণ না-মিটিয়ে দেওয়া পর্যন্ত কাজ শুরু করতে দেবেন না বলে সরব হন পোড়াঝাড় ভূমিহারা ওয়েলফেয়ার কমিটির লোকজন। এমনকী এসজেডিএ’র ঠিকাদাররা এ দিন কাজ শুরু করলে বেলা ১২টা নাগাদ প্রথমে তাঁরা বাধাও দেন। বাধার মুখে কিছুক্ষণ কাজ বন্ধ হয়ে পড়ে। পরে পুলিশ গিয়ে তাঁদের সরিয়ে দিলে ফের কাজ শুরু হয়। পরে জমিহারাদের প্রতিনিধিরা এ দিন ফের উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব এবং শিলিগুড়ি জলপাইগুড়ি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনায় বসেন। জমি অধিগ্রহণের ক্ষেত্রে যাঁরা চেক পাননি দ্রুত তাঁদের সমস্যা মেটানোর আশ্বাস দেওয়া হয়। খাস জমিতে বসবাসকারীদের ৬০ শতাংশ টাকা দেওয়া হবে বলেও জানানো হয়। প্রকল্পে কাজের ক্ষেত্রে বালু-পাথর সরবরাহের কাজও যাতে তারা পান সে ব্যাপারেও আশ্বস্ত করা হয়। এর পর সুর নরম করেন জমিহারারা। এ দিন ধর্না মঞ্চে অবস্থান করলেও বৃহস্পতিবার ক্ষতিগ্রস্তদের নামের তালিকা এসজেডিএ কর্তৃপক্ষের হাতে তুলে দেবেন। তাঁদের সমস্যা মেটানোর আশ্বাস দিলে ওই দিন থেকেই ধর্না মঞ্চ তুলে দেবেন বলে জানান। মন্ত্রী বলেন, “জমিহারাদের একাংশ এ দিন সমস্যার কথা জানাতে এসেছিলেন। বিষয়টি দেখবার জন্য তাঁদের এসজেডিএ মুখ্য কার্যনির্বাহী আধিকারিকেরা কাছে পাঠানো হয়েছে। তাঁরা যাতে যথাযথ ক্ষতিপূরণ পান তা গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে বলেই জানিয়েছি। আশা করি তাঁরা কাজ করতে সহায়তা করবেন।” |
এসজেডিএ’র মুখ্য কার্যনির্বাহী আধিকারিক গোদালা কিরণ কুমার জানান, খাস জমিতে বসবাসকারীদের জমির কাগজ নেই। তবু মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি দিয়ে জমি অধিগ্রহের ক্ষেত্রে তাদেরও ৬০ শতাংশ টাকা এসজেডিএ’র তহবিল থেকে দেওয়া হবে। কিছু জমি নিয়ে মামলা চলায় তাদের চেক বিলির ক্ষেত্রে সমস্যা রয়েছে। মুখ্য কার্যনির্বাহী আধিকারিক বলেন, “জমিহারাদের জন্য ক্ষতিপূরণের যে প্যাকেজ ঘোষণা করা হয়েছে তা তো তারা পাবেনই। তা ছাড়াও অতিরিক্ত সুযোগ সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। যে কাজ হবে সেখানে বালু পাথর সরবরাহের কাজও যাতে তারা পান সেই সুবিধাও মিলবে। অনিচ্ছুকদের জমি ফেরত দেওয়ার বিষয়টি সরকারি প্রক্রিয়া মেনে হবে।” তিনি জানান, ইতিমধ্যেই খাস জমিতে বসবাসকারী ২৫ জনকে জমি অধিগ্রহণের চেক দেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার আরও ১৪ জনকে দেওয়া হবে। তার পরেও ৫০ জনের মতো বাকি থাকবেন। সাত দিনের মধ্যে যাতে তাঁরা পেয়ে যান সেই চেষ্টা করা হচ্ছে। পোড়াঝাড় এলাকার বাসিন্দা আন্দোলনকারী ওই জমিহারারা জানান, ১০ দিনের মধ্যে ক্ষতিপূরণের চেক দেওয়া হবে বলে তাঁদের আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। পোড়াঝাড় ভূমিহারা ওয়েল ফেয়ার কমিটি তরফে কার্তিক মণ্ডল বলেন, “আমাদের মধ্যে কারা ক্ষতিপূরণ পাবেন বৃহস্পতিবার সেই তালিকা এসজেডিএ’কে তুলে দেব। তাদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হলে আমরা ধর্না মঞ্চ তুলে নেব। কাজ করতেও বাধা দেওয়া হবে না। তবে ১০ দিনের মধ্যে সমস্যা না মেটানো হবে ফের আন্দোলন শুরু করা হবে।” পশ্চিমবঙ্গ কৃষি জমি জীবন ও জীবিকা রক্ষা কমিটির কাওয়াখালি শাখার সভাপতি কুড়ানু দেব সিংহ জানান, জমি ফেরতের দাবিতে আন্দোলন করেছেন। ফেরত না মেলা পর্যন্ত আন্দোলন করবেন। |