টেন্ডারে দুর্নীতি, অবৈধ ভাবে গাছ কাটা এবং ১০০ দিনের কাজ করা সত্ত্বেও টাকা না দেওয়ার অভিযোগ উঠল পঞ্চায়েতের কংগ্রেস প্রধানের বিরুদ্ধে। বুধবার উত্তর ২৪ পরগনার বসিরহাটের কচুয়া পঞ্চায়েতে এই ঘটনা ঘটে। এই অভিযোগে বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত পঞ্চায়েতের কর্মীদের দফতরে আটকে রেখে তালা ঝুলিয়ে দেয় সিপিএম। প্রধান অবশ্য সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
ব্লক প্রশাসন, পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই পঞ্চায়েতের মোট ১৫টি আসনের মধ্যে গত বারের নির্বাচনে কংগ্রেস ৮টি, সিপিএম ৪টি, তৃণমূল ২টি ও বিজেপি ১টি আসনে জয়লাভ করে। জোট বেঁধে লড়ার ফলে প্রধান হন কংগ্রেসের সোহারফ হোসেন। সিপিএমের অভিযোগ, ক্ষমতায় আসার পর থেকেই প্রধান বিরোধীদের কথায় কোনও গুরুত্ব না দিয়ে নিজের ইচ্ছামতো কাজ করছেন। ফলে, ১০০ দিনের কাজ করেও টাকা পাচ্ছেন না অনেকে। এর প্রতিবাদে এ দিন বিকেল থেকে এলাকার বাসিন্দাদের নিয়ে সিপিএমের পক্ষ থেকে পঞ্চায়েত কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ শুরু হয়। পঞ্চায়েতের সভাপতি, সঞ্চালক-সহ চার কর্মীকে ভিতরে রেখে তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হয়।
পঞ্চায়েতের বিরোধী দলনেতা তথা সিপিএমের মনিরুজ্জামান মোল্লা বলেন, “বন দফতরের অনুমতি ছাড়াই প্রধানের নেতৃত্বে পূর্ত দফতরের গাছ কাটা শুরু হয়েছে। এলাকার কয়েকশো গরিব মানুষ ১০০ দিনের প্রকল্পে মাটি কাটার কাজ করা সত্ত্বেও টাকা পাচ্ছে না। এমনকী, পঞ্চায়েত এলাকায় গার্ড ওয়াল, পাকা রাস্তা, ড্রেন, কালভার্ট, গভীর নলকূপ তৈরি প্রভৃতি কাজের প্রায় এক কোটি টাকার কাজের টেন্ডার কোনও নোটিস ছাড়াই গোপনে চার জনকে পাইয়ে দেওয়া হয়েছে। এ সবের প্রতিবাদেই মানুষ বিক্ষোভ শুরু করেন। প্রধান না আসায় ক্ষুব্ধ জনতা কর্মীদের ঘরে রেখেই তালা ঝুলিয়ে দেন।”
অভিযোগ অস্বীকার করে কংগ্রেস প্রধান সোহারফ হোসেন বলেন, “টেন্ডারে দুর্নীতি আছে কি না সে বিষয়ে তদন্ত করে ব্লক দফতর কোনও অনিয়ম পায়নি। ঝড়ে বিপজ্জনক অবস্থায় থাকায় সব সদস্যের সঙ্গে আলোচনার পরে রেজোলিউশন করেই গাছ কাটা হয়েছে।” ১০০ দিনের কাজের প্রসঙ্গে তাঁর বক্তব্য, “ইতিমধ্যে ৪০-৫০ লাখ টাকার চেক পঞ্চায়েত থেকে সংশ্লিষ্ট এলাকার ব্যাঙ্কে পাঠানো হয়েছে। ব্যাঙ্কে চেক ক্যাশ করতে কিছুটা সময় লাগছে। আশা করা যায়, অল্প দিনের মধ্যেই সকলে তাঁদের প্রাপ্য পেয়ে যাবেন।”
তাঁর দাবি, সিপিএম দুর্নীতি প্রমাণ করতে না পেরে মানুষকে বিভ্রান্ত করতে প্রচারে নেমেছে। ঘটনার কথা পুলিশকে জানিয়ে আটক কর্মীদের উদ্ধার করার কথাও বলা হয়েছে বলে জানান তিনি। |