বিক্ষোভ রামস্বরূপে
দাবি বকেয়া বেতন মেটানো, উৎপাদন শুরুর
বিলম্বে উৎপাদন শুরু এবং বকেয়া বেতন মেটানোর দাবিতে খড়্গপুর-সাহাচকের রামস্বরূপ লৌহ উদ্যোগ কারখানায় সিআইটিইউ ও এআইটিইউসি-র যৌথ মঞ্চে অবস্থান শুরু করেছেন শ্রমিকরা। পিগ আয়রন ও স্পঞ্জ আয়রন উৎপাদন হত এই কারখানায়। প্রায় ১৩০০ শ্রমিক যুক্ত। ২০১০-এর নভেম্বরে কারখানায় উৎপাদন বন্ধ করেন কর্তৃপক্ষ। এর মধ্যে কলকাতায় অ্যাডিশনাল লেবার কমিশনারের দফতরের বেশ কয়েক বার ত্রিপাক্ষিক বৈঠক হয়েছে। কিন্তু, জট কাটেনি। উৎপাদন বন্ধ থাকলেও শুরুতে শ্রমিকদের বেতন দিচ্ছিলেন কর্তৃপক্ষ। তবে, গত বছর ডিসেম্বর থেকে তাও বন্ধ হয়েছে বলে জানিয়েছেন শ্রমিকরা। ফলে, সমস্যা আরও জটিল হয়েছে।
জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, গত সোমবার কলকাতায় অ্যাডিশনাল লেবার কমিশনার অরুণ ভট্টাচার্যের দফতরে এক ত্রিপাক্ষিক বৈঠক হওয়ার কথা ছিল। বৈঠকের কথা জানানো হয়েছিল শ্রমিক-মালিক, দু’পক্ষকেই। কিন্তু, মালিকপক্ষ ওই বৈঠক পিছিয়ে দেওয়ার আর্জি জানিয়ে শ্রম দফতরে যোগাযোগ করেন। গত ৭ জুন ডেপুটি লেবার কমিশনার (খড়্গপুর) তীর্থঙ্কর সেনগুপ্তকে চিঠি লিখে এই আর্জি জানানো হয়।
—নিজস্ব চিত্র।
চিঠিতে কারখানার জেনারেল ম্যানেজার সত্যজিৎ শর্মা জানান, এ ক্ষেত্রে আরও কিছু সময় প্রয়োজন। অন্তত ২-৩ মাস। মালিকপক্ষের বক্তব্য, ওই বৈঠকে উপস্থিত হয়ে তাঁদের তরফে নির্দিষ্ট কিছু জানানো সম্ভব হত না। তাই ডেপুটি লেবার কমিশনারকে চিঠি দেওয়া হয়েছিল। এ দিকে, বৈঠক স্থগিত হয়ে যেতেই আন্দোলন শুরু করেছেন শ্রমিকরা। কারখানার গেটের সামনে শুরু হয়েছে অবস্থান-বিক্ষোভ।
সিটু অনুমোদিত রামস্বরূপ ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের সম্পাদক তরুণ বরম বলেন, “বাধ্য হয়েই আমরা আন্দোলন শুরু করেছি। কারখানা কর্তৃপক্ষ কথা রাখেননি। ১১ তারিখ বৈঠক হওয়ার কথা ছিল। তাও স্থগিত হয়ে গিয়েছে। ডিসেম্বর থেকে বেতন বন্ধ। ফলে শ্রমিকরা চরম সমস্যায় পড়ছেন।” তরুণবাবুর বক্তব্য, “কেন উৎপাদন বন্ধ রয়েছে, তাও কর্তৃপক্ষ জানাননি। ফলে সবকিছুই অস্পষ্ট।” সমস্যা সমাধানের দাবিতে রাজ্যের শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় থেকে শ্রমমন্ত্রী পূর্ণেন্দু বসু- সবারই দ্বারস্থ হয়েছেন শ্রমিকরা। প্রশাসনের বিভিন্ন-স্তরেও বিষয়টি জানানো হয়েছে। কিন্তু, সুরাহা হয়নি। একই বক্তব্য এআইটিইউসি নেতা ফণি চক্রবর্তীর। তিনি বলেন, “কারখানা কর্তৃপক্ষকে তাঁদের বক্তব্য স্পষ্ট করে জানাতে হবে।” শাসকদলের শ্রমিক সংগঠন আইএনটিটিইউসি-র জেলা নেতা দেবাশিস চৌধুরিরও বক্তব্য, “শ্রমিকরা কারখানায় আসছেন। অথচ বেতন পাচ্ছেন না। কর্তৃপক্ষ বৈঠক থেকে দূরে থাকছেন। এই পরিস্থিতি চলতে পারে না। আগে কর্তৃপক্ষকে তাঁদের অবস্থান স্পষ্ট করতে হবে। বিষয়টি শ্রম দফতরকে জানানো হয়েছে।”
এই কারখানাতেই কাজ করেন রিন্টু ভুঁইয়া। তিনি বলেন, “হয় উৎপাদন শুরু হোক। না-হলে কর্তৃপক্ষ কারখানা বন্ধের কথা ঘোষণা করুন। সে ক্ষেত্রে শ্রমিকদের বকেয়া বেতন মেটানোর পাশাপাশি উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ দিক।” ২০১০-এর ২১ নভেম্বর ‘সাসপেনশন অব ওয়ার্ক’- এর নোটিস ঝোলানো হয়। সেই থেকে উৎপাদন বন্ধ। উপযুক্ত পদক্ষেপের আশ্বাস দিয়েছেন ডেপুটি লেবার কমিশনার (খড়্গপুর) তীর্থঙ্কর সেনগুপ্ত। তিনি বলেন, “১১ তারিখ ত্রিপাক্ষিক বৈঠক হওয়ার কথা ছিল। পরে তা স্থগিত রাখতে হয়। চলতি মাসের শেষে কিংবা আগামী মাসের শুরুতে ওই বৈঠক হবে। আলোচনার মাধ্যমেই সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করা হবে।”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.