জাতীয় প্রত্নতত্ত্ব দফতরের মানচিত্রে অবশেষে ঠাঁই পেল মিজোরাম। সৌজন্যে ‘মেনহির্স অফ ভাংছিয়া’ বা ভাংছিয়ার প্রস্তরফলক।
উত্তর-পূর্বের সব ক’টি রাজ্যের কোনও না কোনও সৌধ প্রত্নতত্ত্ব দফতরের তালিকাভুক্ত। মিজোরাম পূর্ণ রাজ্য হওয়ার ২৫ বছর পরে সেই তালিকায় স্থান পেল। কারণ এতদিন পর্যন্ত মিজোরামে প্রত্নতাত্ত্বিক দিক থেকে গুরুত্বপূণ কোনও কিছুর হদিস সরকারের কাছে ছিল না। কিন্তু এ বার চম্পাই জেলার ভাংছিয়া গ্রামে পাথরে খোদাই এমন কিছু নিদর্শন মিলেছে তা বিস্মিত করে দিয়েছে প্রত্ন বিশেষজ্ঞদের। |
সম্প্রতি পরীক্ষা করে দেখা গিয়েছে, চম্পাই জেলার ভাংছিয়া গ্রামের ‘মেনহির্স’গুলি আসলে পাথরে খোদাই করা শিকারের দৃশ্য। ইতিহাসবিদদের অনুমান, বেশ কয়েকশো বছরের পুরনো শিলা এগুলি। ‘ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল ট্রাস্ট ফর আর্ট অ্যান্ড কালচারাল হেরিটেজ বা ‘ইনট্যাক’-এর মিজোরামের কনভেনর পি রোমিনথঙ্গা জানান, জাতীয় প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ (এএসআই)-এর অধীনস্থ হওয়ায় এ বার, প্রস্তরখণ্ডগুলির রক্ষণাবেক্ষণ ও গবেষণার কাজ ত্বরান্বিত হবে। ভাংছাই গ্রাম থেকে তিন ঘণ্টার পথ পার হয়ে, প্রস্তরখণ্ডগুলির কাছে পৌঁছতে হয়। এলাকার নাম কাওটছুয়া রোপুই। অর্থ, প্রধান প্রবেশপথ। মোট ১৭১টি প্রস্তরখণ্ড রয়েছে সেখানে। ইনট্যাক-এর বিশেষজ্ঞরা ২০১০ সালে প্রথমবার সেখানে যান। এএসআই কর্তারা আসেন ঠিক এর পরের বছর।
ইনট্যাকের প্রতিনিধি রোমিনথঙ্গা জানান, তিব্বতি-বর্মি উপজাতির মানুষ এই এলাকায় থাকতেন। কথিত আছে, এখান থেকে একটি পাথরের তৈরি রাস্তা, মায়ানমার সীমান্তের টিয়াউ নদী অবধি বিস্তৃত ছিল। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে প্রস্তরখণ্ডগুলির ক্ষয় হয়েছে। বেশ কিছু পাথর, স্থানীয় বাসিন্দারা বাড়ি বানানোর কাজে ব্যবহার করেছেন। তবে, গ্রামবাসীরা খোদিত পাথরগুলিকে যথেষ্ট সম্মান করেন। ইনট্যাকের উদ্যোগ ও এএসআই কর্তাদের সরেজমিনে পর্যবেক্ষণের পরে, প্রস্তরখণ্ডগুলি এতদিনে ‘সংরক্ষিত সৌধ’-এর তকমা পেল। এতদিন, ঝোপে-ঝাড়ে অযত্নে পড়ে থাকা প্রস্তরখণ্ডগুলির সুরক্ষার ভার এ বার পাবে সিআইএসএফ। এলাকায় পর্যটকদের জন্য বসছে, এই শিল্পকর্মের ইতিহাস ও পরিচিতি-সহ বোর্ড। |