দিল্লি থেকে যখন বিমানে তোলা হয়েছিল তখন ব্যাগ ছিল অক্ষত। কিন্তু, সেই ব্যাগ কলকাতায় পৌঁছনোর পরে দেখা গেল তার তালা ভাঙা, ‘উধাও’ দু’লক্ষ কুড়ি হাজার টাকা। সম্প্রতি এয়ার ইন্ডিয়ার বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে এমনই অভিযোগ করেন শুভাশিস চট্টোপাধ্যায় নামে এক যাত্রী। তদন্তে নেমেছে কলকাতা বিমানবন্দর থানার পুলিশ।
১৫ এপ্রিল কলকাতা বিমানবন্দরেই এক যাত্রীর ব্যাগের তালা ভেঙে টাকা ‘চুরি’ করে ধরা পড়েন বেসরকারি বিমান সংস্থার চার জন কর্মী। তাঁদের বরখাস্তও করা হয়। সে বার যাত্রীর অভিযোগ পাওয়ার পরে বিমানবন্দরের সিসিটিভি-র ছবি থেকে জানা গিয়েছিল চুরির কথা। তাই এ বারেও সিসিটিভি-র ছবির উপরেই ভরসা করছে পুলিশ। শুধু কলকাতা নয়, দিল্লি বিমানবন্দরের সিসিটিভিও যাতে দেখা হয় তার জন্য সচেষ্ট হয়েছে বিমানসংস্থা।
শুভাশিসবাবু দিল্লিতে থাকেন। অবসরের পরে কলকাতায় থাকার উদ্দেশ্যে সম্প্রতি কসবায় একটি জমি কিনেছেন। তিনি জানান, সেই জমির রেজিস্ট্রেশনের জন্য গত শনিবার দিল্লি থেকে ছেলে অভিষেকের সঙ্গে কলকাতায় আসছিলেন। রাতে এয়ার ইন্ডিয়ার বিমান ধরতে গেলে ছেলের সঙ্গের হাত-ব্যাগটির ওজন বেশি থাকায় তা বিমানের কেবিনে নিয়ে যেতে দেননি বিমানসংস্থার কর্মীরা। ওই ব্যাগেই ছিল দু’লক্ষ কুড়ি হাজার টাকা। সেই রাতে কলকাতায় নেমে শুভাশিসবাবু জানতে পারেন ব্যাগটি এসে পৌঁছয়নি।
শুভাশিসবাবু বলেন, “আমি বজবজে রয়েছি। সেখান থেকে রবিবার সারা দিন বিমানসংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করে কোনও লাভ হয়নি। সোমবার সকালে ফোন করে জানানো হয় ব্যাগটি কলকাতায় এসেছে। সেটি বজবজে পৌঁছে দেওয়া হবে। আমি বলেছিলাম, বিমানবন্দরে গিয়েই ব্যাগ নেব।” বিমানবন্দরে অভিষেক দেখেন, লাল রঙের ব্যাগটির দু’টি চেন-এর মুখ একত্র করে যে তালা আটকানো ছিল, সেটি উধাও। চেন-এর মুখ দু’টি ভাঙা। তাঁর অনুমান, ব্যাগের তালা ভাঙা হয়েছে। ব্যাগের ভিতরে অন্যান্য জিনিস ঠিক ভাবে থাকলেও টাকা ছিল না। বিমানসংস্থার কাছে এবং পুলিশে সে দিনই অভিযোগ দায়ের করেন শুভাশিসবাবু।
বিমানসংস্থার তরফে জানানো হয়েছে, দিল্লিতেই শুভাশিসবাবুদের জানানো উচিত ছিল যে ব্যাগে টাকা আছে। এবং শুভাশিসবাবুর হাত-ব্যাগে টাকা নেওয়া উচিত ছিল। তা ছাড়া, কলকাতায় যখন অভিষেকের হাতে সেই ব্যাগ তুলে দেওয়া হয় তখন সেখানেই তা পরীক্ষা না করে একটু দূরে লাউঞ্জে গিয়ে অভিষেক তা পরীক্ষা করেন। যদি সংস্থার অফিসারের সামনেই তিনি পরীক্ষা করতেন তা হলে বিমানসংস্থা দায়িত্ব এড়াতে পারতো না।
তবে কি মনে করা হচ্ছে সংশ্লিষ্ট যাত্রী মিথ্যা অভিযোগ করছেন? না কি অক্ষত ব্যাগ পেয়ে দূরে গিয়ে তালা ভেঙে তাঁরা বিমানসংস্থার উপরে দায় চাপাতে চাইছেন? বিমানসংস্থার তরফে অবশ্য এর কোনও সদুত্তর মেলেনি। |