অসমে প্রত্নস্থল অবহেলিত, ক্ষুব্ধ রাজ্যপাল
সমের প্রত্নতাত্ত্বিক সংরক্ষণ ও খননকার্যে ব্যর্থতার জন্য রাজ্য প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের কর্তাদের সামনেই তাঁদের কড়া ভাষায় সমালোচনা করলেন রাজ্যপাল জানকীবল্লভ পট্টনায়ক।
সম্প্রতি ভারতীয় পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণ (এএসআই) ও রাজ্য প্রত্নতত্ত্ব দফতরের শীর্ষকর্তাদের সঙ্গে আলোচনায় বসেছিলেন রাজ্যপাল। রাজ্যের প্রত্নস্থলগুলির রক্ষণাবেক্ষণে রাজ্যের উদায়ীনতা নিয়ে ক্ষুব্ধ রাজ্যপাল বৈঠকের মধ্যেই বিভাগীয় কর্তাদের কাছ থেকে জবাব চান। রাজ্যের প্রত্নস্থলগুলির কোনটি কার অধীনে, কে কোনটির রক্ষণাবেক্ষণ করবে তা নিয়ে রাজ্য প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ ও এএসআইয়ের মতানৈক্য দীর্ঘদিনের। কামাখ্যা থেকে উমানন্দ, কালীপুরের গুহা থেকে বামুনি পাহাড়ের রক্ষণাবেক্ষণ ও নজরদারি সেই ফাঁসে আটকে। ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে পুরাকীর্তি। জবর দখল হচ্ছে প্রত্নস্থলের জমি। রাজ্যপাল বলেন, “অবিলম্বে রাজ্যের প্রত্নস্থলগুলিতে এএসআই ও রাজ্য প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের যৌথ সমীক্ষা চালানো উচিত।” রাজ্য সরকার মনে করছে, অসমের প্রত্নস্থলগুলি নিয়ে এ এসআই পর্যাপ্ত গুরুত্ব দিচ্ছে না। এ নিয়ে এএসআই-এর ডিরেক্টর-জেনারেল গৌতম সেনগুপ্তর সঙ্গে দীর্ঘ আলোচনা করেন রাজ্যপাল। রাজ্যপাল জানান, বৈঠক ইতিবাচক হয়েছে।
তেজপুরের বামনি পাহাড়ে এ ভাবেই পড়ে প্রত্ন-সামগ্রী। ছবি: উজ্জ্বল দেব।
বৈঠকে পট্টনায়ক জানান, পূর্ব ও উত্তর-পূর্ব মিলিয়ে সংস্কৃতি ক্ষেত্রে, ওড়িশা ছাড়া আর কোনও রাজ্যের কোনও প্রত্নস্থল ইউনেস্কো ঐতিহ্যক্ষেত্রের তালিকায় নেই। এই ক্ষেত্রে মাজুলিকে তুলে ধরার জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করতে বলেন তিনি। পাশাপাশি, প্রাগজ্যোতিষপুর-সহ রাজ্যের কোথাও এএসআই কোনও রকম খননকার্য না চালানোয় বিস্ময় প্রকাশ করেন রাজ্যপাল। তাঁর মতে, শিবসাগরের চড়াইদেও এলাকায় মিশরের পিরামিডের আদলে বানানো রাজাদের সমাধি বা মৈদাম ও তেজপুরের বামুনি পাহাড়ে অষ্টম শতাব্দীর প্রস্তর মন্দিরের ভগ্নাবশেষের মতো গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহাসিক ক্ষেত্রগুলিকে রাজ্য প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ জাতীয়স্তরে তুলেই ধরতে পারেনি। সেগুলির পর্যাপ্ত সংরক্ষণ ও গুরুত্ববৃদ্ধিতে কার্যত ব্যর্থ হয়েছে রাজ্য।
বৈঠকে, উমানন্দ, নর্থব্রুক গেট, জয়সাগর, চড়াইদেও মৈদাম, আজান ফকিরের দরগা, বামুনি পাহাড়, সূর্য পাহাড়, কামাখ্যা ও ভুবনেশ্বরী মন্দির, গরগাঁওয়ের কারেং ঘর ও মাজুলি দ্বীপের রক্ষণাবেক্ষণ নিয়ে দীর্ঘ আলোচনা হয়। প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের আধিকারিকরা ছাড়াও কয়েকজন ইতিহাসবিদ, নৃতত্ত্ববিদ, শিক্ষাবিদ ও বিশেষজ্ঞ বৈঠকে হাজির ছিলেন। অধিকাংশ আধিকারিকের মতে, জবরদখল ও প্রত্নস্থলের উপরে বসতি হয়ে যাওয়ার ফলেই খনন সম্ভব হচ্ছে না। ঠিক হয়েছে, চড়াইদেও ও বামুনি পাহাড় সংরক্ষণে আশু ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রত্নস্থল সংরক্ষণে রাজ্য প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ ও এএসআই হাতে হাত মিলিয়ে কাজ করবে। পরিকাঠামোগত সব রকম সাহায্য দেবে রাজ্য সরকার। পাশাপাশি, ঐতিহ্যশালী কটন কলেজে প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ চালু করার পক্ষেও সওয়াল করেন রাজ্যপাল।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.